নয়াদিল্লি: রেলে বেসরকারিকরণের উদ্যোগে একের পর এক পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছে কেন্দ্র৷ দুরপাল্লার ট্রেনের পর তালিকায় প্যাসঞ্জার ট্রেন পরিচালনার ক্ষেত্রেও বেসরকারি বিনিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে গত মাসে৷ এবার এই প্যাসেঞ্জার ট্রেনগুলির জন্য আরও বেশি বেসরকারি বিনিয়োগ টানতে ফের একটি পদক্ষেপ নিল রেল৷ এখন থেকে ট্রেন কেনা বা লিজে দেওয়ার স্বাধীনতা দেওয়া হল বেসরকারি সংস্থাগুলিকে৷ বুধবার এমনটাই জানান হল ভারতীয় রেলের তরফে৷ এই পদক্ষেপ আরও বেশি প্রতিযোগী সংস্থাকে এই প্রকল্পের জন্য এগিয়ে আসার উৎসাহ জোগাবে বলেই জানিয়েছে রেলমন্ত্রক৷
ইতিমধ্যেই বোম্বার্ডিয়ার, অলস্টম, এল অ্যন্ড টি, সিমেন্স, এনআইআইএফ, বিএইচএল সহ একাধিক বিভাগের আরও ২৩ টি সংস্থা বেসরকারি ট্রেন চালানোর বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং আবেদন জানানোর আগে বুধবার দ্বিতীয় পর্বের প্রাক-আবেদন সভায় অংশ নেয় সংস্থাগুলি। সভায় রেল মন্ত্রক (এমওআর) বিষয়টি আরও স্পষ্ট করে দিয়ে জানিয়েছে, ট্রেনর কর্মপদ্ধতিতে ঝুঁকিগুলি সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে সংস্থাগুলির নির্দিষ্ট খাতে বরাদ্দ করা হবে। রেল মন্ত্রকের তরফে এক বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ট্রেনের ভাড়া নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতাও থাকবে বেসরকারী সংস্থাগুলির। বৈঠকে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য সংস্থাগুলির মধ্যে ছিল বিইএমএল, আইআরসিটিসি, ভেল, সিএএফ, স্টারলাইট, ভারত ফোর্স, জেকেবি ইনফ্রাস্ট্রাকচার এবং টিটাগড় ওয়াগনস লিমিটেড।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আবেদনকারীরা ক্লাস্টারগুলিতে নমনীয়তা, যোগ্যতার মানদণ্ড, দর হাঁকার প্রক্রিয়া, ট্রেন কেনা, ভাড়া, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। রেললাইন ব্যবহারের জন্যভাড়ার হার নিশ্চিত করে ভাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে সবসময় ছাড় দেওয়া হবে। ভারতীয় রেল নেটওয়ার্কে ১২টি ক্লাস্টারে ১০৯টি রুটকে ভাগ করা হয়েছে ৷ এই রুটে ১৫১ টি আধুনিক প্যসেঞ্জার ট্রেন পরিচালনায় ব্যক্তিগতভাবে অংশ গ্রহণের জন্য যোগ্যতা যাচাই করতে গত ২১ জুলাই প্রাক-আবেদন পর্বের প্রথম সভায় আগ্রহী বেসরকারি সংস্থাগুলিকে রিকোয়েস্ট ফর কোয়ালিফিকেশনে (আরএফকিউ) আমন্ত্রণ জানিয়েছিল রেল। সেখানে একাধিক প্রকল্পে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে আবেদনের ফি এক-দশমাংশ কমিয়ে দিয়েছিল রেল, প্রতি দরদাতার তিনটি পর্যন্ত প্রকল্পের সর্বোচ্চ দর কমিয়ে দিয়েছিল এবং স্পষ্ট করে দিয়েছিল যে বিজয়ী সংস্থাগুলিও ট্রেন লিজ দিতে পারে।
বেসরকারি সংস্থার হাতে যে অত্যাধুনিক প্যাসেঞ্জার ট্রেনগুলি তুলে দেওয়া হবে তাতে কমপক্ষে ১৬টি করে কামরা থাকবে এবং এর সর্বোচ্চ গতিবেগ হবে ১৬০ কিমি ৷ ভারতীয় রেল পরিচালিত প্যাসেঞ্জার ট্রেনগুলির সঙ্গেই চালানো হবে এই ট্রেনগুলি। তবে এই প্যাসেঞ্জার ট্রেনগুলি সুপার ফার্স্ট হওয়ায় আরও কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছনো যাবে ৷ রেলওয়ে নেটওয়ার্কে প্যাসেঞ্জার ট্রেন চালানোর জন্য এটি বেসরকারী বিনিয়োগের প্রথম উদ্যোগ। এই প্রকল্পটিতে প্রায় ৩০,০০০ কোটি ডলার বেসরকারী খাতের বিনিয়োগ হবে। এই ট্রেনগুলি বেঙ্গালুরু, চন্ডীগড়, জয়পুর, দিল্লি, মুম্বই, পাটনা, প্রয়াগ্রাজ, সেকান্দারবাদ, হাওড়া, চেন্নাই সহ ১২ টি ক্লাস্টারে পরিচালিত হবে। ২০২৩ সালের এপ্রিলের মধ্যেই কয়েকটি রুটের ট্রেন চালু করা হবে।