নয়াদিল্লি: সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ২৩ লক্ষের বেশি আদিবাসী ও বনাঞ্চলের অন্যান্য অধিবাসী নিজেদের জমি থেকে উৎখাত হতে পারেন, এমনই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। অরণ্যের অধিকার আইনকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে মামলা করা হয়েছিল। শুনানি চলাকালীন কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ওই আইন ও আদিবাসীদের স্বার্থরক্ষায় অত্যন্ত শিথিল সওয়াল করা হয়েছে। এমনকি গুরুত্বপূর্ণ শুনানির দিনে কেন্দ্রের আইনজীবী আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন।
‘ওয়াইল্ড লাইফ ফার্স্ট’ নামের সংস্থার ওই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট ১৩ফেব্রুয়ারি রায় দিলেও লিখিত নির্দেশ জারি করেছে ২০ ফেব্রুয়ারি। নির্দেশে ২১ রাজ্যের প্রশাসনকে বলা হয়েছে ২০০৬’র অরণ্যের অধিকার আইনে যাদের দাবি স্বীকৃত হয়নি তাদের এ-বছরের ২৪ জুলাইয়ের মধ্যে উৎখাত করতে হবে। ২০০৬-এ অরণ্যাঞ্চলে বসবাসকারী আদিবাসী ও অন্যান্য চিরাচরিত বাসিন্দাদের অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল। এই আইন অনুযায়ী গ্রাম সভা স্তর থেকে শুরু করে নির্দিষ্ট পদ্ধতির মাধ্যমে আদিবাসী ও অন্যান্য অংশের স্বীকৃতি গৃহীত বা প্রত্যাখ্যাত হয়। একটি হিসেবে দেখা যাচ্ছে ২০১৮-র ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪২.১৯ লক্ষ দাবি পেশ করা হয়েছিল। মাত্র ১৮.৮৯লক্ষ দাবি স্বীকৃত হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টে তিন সদস্যের বেঞ্চ ২১ রাজ্যের মুখ্যসচিবদের বলেছে, ১২ জুলাইয়ের মধ্যে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে উৎখাত সম্পন্ন হয়েছে কিনা, না হলে কেন হয়নি। আদালতের সামনে পেশ করা তথ্য অনুযায়ী একেকটি রাজ্যে হাজার হাজার আদিবাসীর দাবি অস্বীকৃত বা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে ৫০,২৮৮ আদিবাসীর ও ৩৫,৮৫৬ অন্যান্য চিরাচরিত বাসিব্দাদের দাবি প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। তেলেঙ্গানায় ৮২ হাজার আদিবাসীর দাবি প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। অন্ধ্র প্রদেশে ৬৬,৩৫১ দাবি প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। তামিলনাডু, কর্ণাটক, আসাম, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, মধ্য প্রদেশ, ওডিশা, উত্তরাখণ্ড, উত্তর প্রদেশ, ত্রিপুরা, ঝাড়খণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, গোয়া, ছত্তিশগড়, বিহার, গুজরাটের মতো রাজ্যেও এই তালিকায় রয়েছে।