গুয়াহাটি: আসামের প্রত্যন্ত গ্রামে স্থানীয় জনতা ২ ব্যক্তিকে খুনের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয়দের বিরুদ্ধে। তারা ডাইনি বিদ্যার অনুশীলন করছিল বলে সন্দেহ করে তাদের হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটে। তবে বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশে প্রথম খবর দেওয়া হয়। পুলিশ দু’জনের দেহের কিছু অংশ উদ্ধার করেছে এবং এ পর্যন্ত ৯ জন গ্রামবাসীকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কার্বি আংলং জেলার ডকমোকা থানার অন্তর্গত প্রত্যন্ত রোহিমাপুর এলাকায় কয়েকদিন আগে গ্রামের এক মহিলা অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে গুয়াহাটিতে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁকে বাঁচানো যায়নি। বুধবার, গ্রামে তার জন্য একটি শোক অনুষ্ঠানে চলছিল। তখন ৫০ বছর বয়সী বিধবা রামাবতী হালুয়া অস্বাভাবিক আচরণ করতে শুরু করেন বলে গ্রামবাসীরা দাবি করেছেন। গ্রামটিতে আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকেরা বাস করেন। এঁরা হয় দিনমজুর বা স্বল্প সময়ের কৃষক। রামাবতী জাদুবিদ্যার অনুশীলন করছিলেন বলে গ্রামের কয়েকজন অভিযোগ তোলেন। পুলিশ সূত্র জানায়, এরপর স্থানীয়রাই বিচার করে তাঁকে ডাইনী হিসাবে গণ্য করে এবং মহিলার মৃত্যু ও গ্রামের লোকদের দুর্ভাগ্যের জন্য তাঁকেই দায়ী করে।
আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশ গণধর্ষণ মামলায় উচ্চ পদস্থ কর্তাদের সমন, ১২ অক্টোবর হাজিরার নির্দেশ এলাবাহাদ হাই কোর্টের
এরপর জনতা তাঁকে মারতে শুরু করে এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর উপর আক্রমণ করে। পুলিশ সূত্র আরও জানায়, গ্রামের বিজয় গৌড় নামে এক ২৮ বছর বয়সী শিক্ষিত যুবক হস্তক্ষেপ করে এবং তাদেরকে কুসংস্কার বলে অভিযুক্ত করার সময় তাঁকেও আক্রমণ করা হয়। বিক্ষুব্ধ জনতা তাঁদের উভয়কে পিটিয়ে হত্যা করে, স্থানীয় দেবদেবীর উদ্দেশ্যে আচার-অনুষ্ঠান করে এবং নিকটবর্তী একটি পাহাড়ে মৃতদেহগুলি কবরস্থ করার চেষ্টা করে। কার্বি আংলংয়ের পুলিশ সুপার দেবজিৎ দেউরি বলেছেন, “এটি বুধবার ও বৃহস্পতিবারের মধ্যে মাঝরাতে ঘটেছিল। বৃহস্পতিবার সকালে খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। আমরা জ্বলন্ত চিতা থেকেও মৃতদেহের নমুনা সংগ্রহ করেছি। আমরা ঘটনাস্থল থেকে মাটির নমুনাও সংগ্রহ করেছি। অপরাধের জন্য ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ঘনায় ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছি আমরা।” তিনি আরও বলেন, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং আর কেউ যুক্ত রয়েছে কিনা তা জানতে সন্ধান চলছে। গ্রেপ্তার করা ৯ জনই একই গ্রাম ও একই সম্প্রদায়ের। শুক্রবার তাদের আদালতে হাজির করা হবে।