গুয়াহাটি: ভারত চিন সীমান্ত সমস্যার মধ্যেই অরুণাচল প্রদেশের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে নিখোঁজ হলেন ১৯ জন শ্রমিকের একটি দল। প্রায় দু সপ্তাহ ধরে অরুণাচল প্রদেশের প্রত্যন্ত কুরুম কমে জেলায় তারা রাস্তা বানানোর কাজ করছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি তাদের আর কোন খোঁজ মিলছে না বলে জানা যাচ্ছে। মঙ্গলবার সকালে এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে ভারত সরকার। ইতিমধ্যেই জরুরী ভিত্তিতে ওই শ্রমিকদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জানা যাচ্ছে, যে অঞ্চল থেকে ওই শ্রমিকরা নিখোঁজ হয়েছেন সেটি অরুণাচল প্রদেশের রাজধানী ইটানগর থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই এলাকারই কুমে নদীতে সম্প্রতি এক শ্রমিকের মৃতদেহ ভাসতে দেখা গিয়েছে। যদিও এই খবর কতটা সত্য তা এখনো স্পষ্ট নয়। সরকারি তরফে এই তথ্যের সত্যতা যাচাই করার জন্য একটি দল পাঠানো হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
জানা যাচ্ছে, যে পরিযায়ী শ্রমিকের দল ওই এলাকায় রাস্তা নির্মাণের কাজ করছিলেন তাদের অধিকাংশই অসমের বাসিন্দা। ইতিমধ্যেই ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের ঠিকাদার পুলিশ স্টেশনে তাদের নিখোঁজের খবরটি জানিয়েছেন। তার কথায়, গত ৫ জুলাই ওই শ্রমিকরা বিআরও তথা বর্ডার রোড অরগানাইজেশনের রাস্তা নির্মাণের সাইট থেকে পালিয়ে যায়। তাদের ঈদ উপলক্ষে ছুটি না দেওয়ার কারণে তারা এই পদক্ষেপ নিয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে সকলের মনে হয়েছিল। এরপর গত ১৩ জুলাই ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের নামে একটি মিসিং রিপোর্টও দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে বেশ কিছু ছবি। যেখানে দাবি করা হয়েছে যে ওই সাইটের নিকটবর্তী কুমে নদীতে কয়েকজন শ্রমিকের মৃতদেহ ভাসতে দেখা গিয়েছে। যে এলাকায় কাজ চলছিল সেটি অত্যন্ত দুর্গম এবং পাহাড় ও জঙ্গলে ঘেরা। ফলে নিখোঁজ পরিযায়ী শ্রমিকদের সঙ্গে অপ্রীতিকর কোনও ঘটনা ঘটা একেবারেই অস্বাভাবিক কিছু নয়।। আর তাই মৃতদেহের খবরটি চাউর হতেই সরকারের একটি দল ঘটনাটির সত্যতা যাচাই করতে ওই এলাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে বলে খবর।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে কুরুম কুমে জেলার ডেপুটি কমিশনার নিঘি বেঙিয়া জানিয়েছেন, ‘আমরা যা নিশ্চিত করতে পারি তা হল যে ১৯ জন নির্মাণ শ্রমিক যারা নির্মাণস্থল থেকে পালিয়ে গেছে, গত সপ্তাহে দায়ের করা নিখোঁজ রিপোর্ট অনুসারে তাদের এখনও খুঁজে পাওয়া যায়নি। নদী এলাকায় দেখা একটি মৃতদেহ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট রয়েছে । এই তথ্যের সত্যতা যাচাই করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং একটি পুলিশ দল বের হয়েছে ঘটনাস্থলের উদ্দেশ্যে। এলাকাটি পাহাড়ি অঞ্চল এবং ঘন জঙ্গলে ঘেরা ও অত্যন্ত দুর্গম। কিন্তু আমাদের অনুসন্ধান অভিযান চলছে। নির্মাণাধীন রাস্তাটি একটি সীমান্ত রাস্তা যা দামিন সার্কেল থেকে প্রত্যন্ত সীমান্ত গ্রামগুলিকে যুক্ত করবে। নিয়ে যাবে। এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা।’