নয়াদিল্লি: দরজায় কড়া নাড়ছে পাঁচ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিধানসভা নির্বাচন। চলতি মাস থেকেই পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, কেরালা, তামিলনাড়ু এবং পুদুচেরির ভোট যুদ্ধ শুরু হচ্ছে। এমতাবস্থায় ভারতীয় রাজনৈতিক দলগুলিয সমীক্ষার রিপোর্টে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য।
২০১৪ সালে কংগ্রেস শাসনের অবসান ঘটিয়ে দিল্লিতে ক্ষমতায় এসেছিলেন গেরুয়া বাহিনীর নেতা নরেন্দ্র মোদী। বস্তুত, ভারতীয় রাজনীতি সেই থেকে যে গেরুয়া মোড় নিতে শুরু করেছিল আজও তা অব্যাহত। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বা নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধীরা যতই প্রচারে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ঘুরে বেড়ান, গত ৭ বছরে দেশ জুড়ে কংগ্রেসের আধিপত্য কিন্তু ক্রমশ কমতে কমতে তলানিতে এসে ঠেকেছে। উল্টোদিকে ব্যাপক শক্তিবৃদ্ধি করেছে বিজেপি।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে যখন ভোট উত্তাপে কার্যত ফুটছে গোটা দেশ, তখন ২০১৬ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত দেখা গেছে দেশের ১৭০ জন (৪২%) বিধায়ক জাতীয় কংগ্রেস ত্যাগ করে হাতে তুলে নিয়েছেন গেরুয়া পতাকা। সেখানে অন্য দল থেকে ভারতীয় জনতা পার্টিতে এসে যোগ দিয়েছেন মাত্র ১৮ (৪.৪%) জন বিধায়ক। শুধু কংগ্রেস নয়, ভারতীয় রাজনীতির গেরুয়ামুখী মোড়ের ছবিটা আরো স্পষ্ট হয় যখন দেখা যায় অন্যান্য দল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া বিধায়কদের মোট সংখ্যা ১৮২ (৪৪.৯%)। পাশাপাশি কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন মাত্র ৩৮ (৯.৪%) বিধায়ক।
গেরুয়ামুখী ছাপ স্পষ্ট সাংসদের তালিকাতেও। দেখা গেছে, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় বিজেপি ত্যাগ করেছেন মাত্র ৫ জন সাংসদ। ওই সময়কালে রাজ্যসভায় কংগ্রেসের সদস্যপদ ছেড়েছেন ৭ জন, বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন ১০ জন, কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন ৫ জন সাংসদ।
সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশ, মণিপুর, গোয়া, অরুণাচল প্রদেশ এবং কর্ণাটকের রাজ্য বিধানসভায় সরকার পতনের সাক্ষী থেকেছে গোটা দেশ। এই সমস্ত রাজ্যের রাজনীতির অন্দরমহলে খোঁজ নিলে কিন্তু একটা ছবি বিশেষ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। দেখা যায়, প্রায় প্রতি ক্ষেত্রেই সরকার পতনের মূলে রয়েছে দলত্যাগী বিধায়করা। অর্থাৎ দলত্যাগ করে অন দলে (বিশেষত বিজেপি) যোগ দেওয়ার যে প্রবণতা সাম্প্রতিককালে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের মধ্যে দেখা গেছে তা বিভিন্ন রাজ্যের সরকারের কাঠামোতেও ব্যাপক প্রভাব ফেলছে।