নয়াদিল্লি: রাজধানী দিল্লিতে কৃষকদের ট্র্যাক্টর মিছিলকে কেন্দ্র করে যে রাজনৈতিক উত্তাপ ছড়িয়েছে, তা রাজধানীর ইতিহাসে নজিরবিহীন। কেন্দ্র সরকারের কৃষি আইনের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই দিল্লির রাজপথে বিক্ষোভ দেখিয়ে আসছেন কৃষকরা। কিন্তু প্রজাতন্ত্র দিবসে কৃষক বিক্ষোভ হিংসাত্মক আকার নিলে সরকার সেই অজুহাতে কৃষকদের কোণঠাসা করতে চাইছেন, এই অভিযোগে এবার গর্জে উঠলেন বিরোধীরা।
কৃষকদের প্রতি সরকারের আচরণের বিরোধিতায় আজ সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণ বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিরোধীরা,এমনটাই জানা গেছে সূত্রের খবরে।কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে প্রথম থেকেই নরেন্দ্র মোদী সরকারকে তুলোধুনো করছিলেন কংগ্রেস সহ একাধিক বিরোধী দলনেতা। এবার ট্র্যাক্টর মিছিলে হিংসা ছড়ানোয় গোটা দেশ যখন সমালোচনায় উত্তাল, তখনও অন্নদাতা কৃষকদের পাশেই দাঁড়ালেন তাঁরা। শুধু কংগ্রেস নয়, শুক্রবার মোট ১৬টি বিরোধী দল সরকারি নীতির প্রতিবাদ জানিয়ে পার্লামেন্টে রাষ্ট্রপতির ভাষণ বয়কট করবেন বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলি একজোট হয়ে একটি বয়কট ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন। এই ঘোষণাপত্রে তাঁরা কৃষি আইন বাতিলের দাবিও জানান। এই আইন রাজ্যের অধিকার লঙ্ঘন করে অন্যায়ভাবে পাশ করা হয়েছে বলেন তাঁরা। কংগ্রেস ছাড়াও এই বয়কট ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করে সমাজবাদী পার্টি, তৃণমূল কংগ্রেস, বামপন্থী দলগুলি, শিবসেনা, আরজেডি, এনসিপি, ন্যাশানাল কনফারেন্স, পিডিপি এবং অন্যান্য। কৃষকদের সমর্থনে এদিন বিরোধীদের একটা বড় অংশকে একত্রিত হতে দেখা গেছে।
অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি পৃথকভাবে রাষ্ট্রপতির ভাষণ বয়কট ঘোষণা করেছে। তবে বিজেডি, টিআরএসের মতো বিজেপি ঘেঁষা দলগুলি এই কার্যকলাপ থেকে দূরে থেকেছে। বিরোধীদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “গত দু’মাস ধরে লক্ষ লক্ষ কৃষক প্রতিকূলতাকে জয় করে নিজেদের দাবি আদায়ের চেষ্টা করছেন, ইতিমধ্যে ১৫৫ জন কৃষক প্রাণ হারিয়েছেন।” প্রজাতন্ত্র দিবসের কৃষক বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণই ছিল, জানিয়েছেন বিরোধীরা। যে হিংসার ছবি দেখা গেছে তা সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত। আহত দিল্লি পুলিশদের জন্য দুঃখও প্রকাশ করেছেন তাঁরা। কিন্তু এ ব্যাপারে নিরপেক্ষতার সঙ্গে তদন্ত না চালিয়ে কৃষক সংগঠনগুলিকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করছে কেন্দ্র, এমনটাই অভিযোগ বিরোধীদের।