ঐতিহ্যগতভাবে, পরিবার এবং তাদের স্বাস্থ্যের কথা বললে মহিলারা ভারতে যত্নশীলদের ভূমিকা পালন করে। তারা তাদের প্রিয়জনের স্বাস্থ্যের উপর নিজেদের চেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেয়। সাধারণত মহিলার ডায়াবেটিসের প্রসঙ্গে কথা বলা হয় না। তবে গবেষণায় পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের মধ্যে ডায়াবেটিসের প্রবণতা বেশি দেখা গেছে।
ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনার জন্য ডিজিটাল স্বাস্থ্য প্ল্যাটফর্ম বিটোর একটি সমীক্ষা করেছে। সেখানেই জানা গিয়েছে যে পুরুষদের তুলনায় নারীদের রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি। কোনও কোনও ক্ষেত্রে এর মাত্রা প্রায় ৮%। এর জন্য পরিবারের কাজকর্ম দায়ি হতে পারে। কাজে অসম যোগদান এবং তাদের সুস্বাস্থ্যের পরিপূরক করার জন্য সময়ের অভাব এর পিছনে দায়ি। সর্বাধিক সুস্পষ্ট ঝুঁকির কারণ হ’ল স্থূলত্ব যা মহিলাদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। বিটোর সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে মহিলাদের বিশেষত ৪০ বছর বয়সের বেশি মহিলাদের উচ্চতর বিএমআই থাকে। পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের বিএমআই বেশি। মহিলাদের সাধারণ বিএমআই ২৭.৫ আর পুরুষের ২৬। গবেষণায় এও ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে ৪০ বছরের বেশি বয়সের মহিলাদের প্রায় ৬৭% স্থূলকায় এবং ওজন বেশি। স্বাস্থ্যসেবা বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে শারীরিক ক্রিয়াকলাপ হ্রাস এবং স্থূলত্ব জিনগতভাবে প্রবণতাযুক্ত মানুষের মধ্যে ডায়াবেটিসকে বাড়ে।
এটি লক্ষণীয়ও যে নারীদের মধ্যে ডায়াবেটিস তাদের পুষ্টি এবং জীবনযাত্রার প্রভাবের উপর নির্ভর করে। বিটোর গবেষণায় বলা হয়েছে যে মহিলারা নিয়মিত নিজেদের খেয়াল রাখাকে উপেক্ষা করে। তারা পুরুষদের তুলনায় প্রায় ২৫% কম নিজেদের খেয়াল রাখে। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস অন্যান্য জটিলতার জন্যও ঝুঁকি তৈরি করে। যার মধ্যে কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ, কিডনি রোগ এবং নিউরোপ্যাথি রয়েছে। যদিও মহিলা এবং পুরুষ, দুজনের ক্ষেত্রেই হৃদরোগের ঝুঁকি রয়েছে। এটি পুরুষদের চেয়ে মহিলাদের হৃদরোগের উপর আরও বেশি প্রভাব ফেলে। বিটোর পরামর্শক এন্ডোক্রিনোলজিস্ট ডাঃ মিনাল মোহিত ভোহরা বলেছেন, “যদিও পুরুষ ও মহিলাদের উভয় ক্ষেত্রেই ডায়াবেটিসের প্রকোপগুলি খুব একটা আলাদা হয় না। যেমন স্থূলত্ব, উচ্চ রক্তচাপ এবং এমনকি হরমোনগত পরিবর্তন ডায়াবেটিসে অবদান রাখে। নারীরা অনিয়ন্ত্রিত হওয়ায় তাঁদের রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি সংবেদনশীল। বিশেষত কার্ডিয়াক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে এটি প্রভাব ফেলে।