এই ছোট্ট বিষয়টা বুঝতে সত্যি বলতে কী কোনও মনোবিদের প্রয়োজন নেই। যে কোনও অনুভূতিশীল মানুষ, বিবাহিত অথবা সিরিয়াস সম্পর্কে রয়েছেন এমন কেউ যদি হন, তবে তিনি নিজেকে দিয়েই সেটা বুঝতে পারবেন। মনের মানুষের সঙ্গে ধুন্ধুমার ঝগড়া করার বেশ কিছুক্ষণ পরে যখন মন কেমন করে, অথবা সেই মনের মানুষ রেগেমেগে ফোন সুইচ অফ করার পরে নিজেই যখন আবার ফোন করেন, ঠিক তখনই ঝগড়া-কে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে জিতে যায় প্রেম।
তবে সাধারণ বুদ্ধি-বিবেচনায় মানুষ যা বোঝেন, তার উপরে মনোবিদের সীলমোহর না পড়লে সেই উপলব্ধির হাল হয় অনেকটা গেঁয়ো যোগীর মতো যিনি তাঁর নিজের গাঁয়েই ভিখ পান না। তাই মনোবিদদের বক্তব্য উদ্ধৃত করেই বিষয়টিতে আলোকপাত করা যাক।
সম্প্রতি ‘গার্ডিয়ান’-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এই বিষয়ে সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ জোসেফ গ্রেনিকে উদ্ধৃত করা করা হয়েছে। গ্রেনি হলেন সম্পর্ক সংক্রান্ত বেস্টসেলার ‘ক্রুশিয়াল কনভারসেশন’-এর সহ-রচয়িতা। তাঁর মতে, ‘‘দম্পতিদের সবচেয়ে বড় ভুল হল এড়িয়ে যাওয়া। আমরা ভাবি কিন্তু মুখে বলি না, অন্তত যতক্ষণ না গোটা ব্যাপারটা অসহ্য হয়ে ওঠে, ততক্ষণ পর্যন্ত না। আমরা আসলে এই সব কথোপকথনগুলো এড়িয়ে যাই এটা ভেবে যে বললে অনেক কিছু হতে পারে। কিন্তু আমরা এটা বুঝি না যে না বললেও অনেক কিছু হতে পারে।’’
ওই প্রতিবেদনেই প্রকাশিত একটি সমীক্ষার ফলাফল বলছে, যে সমস্ত দম্পতিরা ঝগড়া করেন, তাঁরাই সম্পর্কের দিক থেকে অনেক বেশি সুখী তুলনায় তাঁদের থেকে যাঁরা সচরাচর সমস্ত মতান্তর-মনান্তর ঝুলিতে লুকিয়ে রাখেন। এই সংক্রান্ত একাধিক মার্কিনি গবেষণার ফলাফলও তাই বলছে। একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা গিয়েছে যে ৪৪ শতাংশ মার্কিনি দম্পতি মনে করেন যে সপ্তাহে অন্তত একবার গুছিয়ে ঝগড়া হওয়ার মনে সম্পর্কে পারস্পরিক যোগাযোগ বেশ ভাল।
আসলে সম্পর্কে ঝগড়া যত বেশি, তত বেশি উষ্ণ সেই সম্পর্ক। পরস্পরের কাজ নিয়ে, ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন তোলা, তার সমালোচনা করা অথবা অভিমান করা— এই সব কিছুই সম্পর্ককে উজ্জীবিত রাখে।