কালবৈশাখী মাঝে মাঝে এসে ঠান্ডা করে দিলেও গা পুড়িয়ে দেওয়া গরমটা কিন্তু এসে গিয়েছে। বর্ষা না আসা পর্যন্ত গরম থেকে বিরাম নেই। অতএব নজর দিন রোজকার ডায়েটে। পড়ুন, শরীরকে চাঙ্গা রাখার দাওয়াই৷
প্রত্যেকটা মরসুমে শরীরের চাহিদা আলাদা। সেই অনুযায়ী শরীরকে খাবার আর পানীয়ের জোগান দিতে হবে। গরমকালের ডায়েটের প্রধান শর্ত, শরীরকে আর্দ্র রাখা। বার বার চা-কফি খাওয়া কমিয়ে ফেলুন। যাঁরা রোদের মধ্যে কলেজে কিংবা অফিসে বেরোন, তাঁদের ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে অনেকটা নুন আর জল বেরিয়ে যায়। ইলেকট্রোলাইট ইমব্যালান্স আটকাতে বেশি করে এমন ফল খান, যাতে জলীয় পরিমাণ বেশি।
সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ভিটামিন আর মিনারেলের জোগান জারি রাখাটা জরুরি। এনার্জি ধরে রাখতে সারাদিনে বার বার লেবু, নুন, চিনি দেওয়া সরবতে চুমুক দিন। ডাবের জল কিংবা দই আর লেবু মিশিয়ে ঘোল বানিয়ে খান। তরমুজ, নাসপাতি, কাঁচা আম, আঙুর, শসা, পেঁপে, লাউ রোজকার খাদ্যতালিকায় রাখুন ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে। কাঁচা আমের টক খেলে সহজে লু লাগবে না। ফলের রস কিংবা স্মুদি বানিয়ে খেলে যথেষ্ট পরিমাণ জলও শরীরে যাবে।
গরমে পেটের নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। বিশেষ করে হজমের সমস্যা। সহজ সমাধান, রোজ খাওয়ার শেষ পাতে দই রাখুন। একগাদা চিনি দিয়ে নয়, পারলে অল্প নুন ছড়িয়ে দইটা খান। লস্যি বানিয়েও খেতে পারেন। পুরো গ্রীষ্মকাল জুড়ে ডায়েটে প্রোটিন আর ফ্যাটের পরিমাণ কমিয়ে ফেলুন। মাছ-মাংস-ডিম খাওয়ার পরিমাণ কমান। সপ্তাহে একাধিক দিন হালকা নিরামিষ খাওয়ার চেষ্টা করুন। অতিরিক্ত মিষ্টি খাবেন না। বাজারচলতি ঠান্ডা পানীয়ের আর্টিফিশিয়াল সুগার শরীরের পক্ষে ভাল নয়। ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরেই বরফঠান্ডা জল খেয়ে নেবেন না। আইসক্রিম, কোল্ডড্রিংক এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। মাখন, পাউরুটি, ডিম দিয়ে ব্রেকফাস্ট করার বদলে দই-চিঁড়ে, দই-মুড়ি-কলা ইত্যাদি রাখুন সকালের জলখাবারের মেনুতে। শরীর ঠান্ডা থাকবে। দুপুরে খাওয়ার কিছু সময় পর অল্প করে ফল খাওয়ার অভ্যেস করুন। তবে রাস্তা থেকে কাটা ফল খাবেন না।
টিপ্স: একটা পাকা পেঁপে, টমেটো, কয়েকটা পুদিনা পাতা, নুন, চিনি আর জল দিয়ে স্মুদি বানিয়ে নিন। তরমুজ, দই, জল, নুন আর চিনি দিয়ে ওয়াটারমেলন স্মুদি বানান। চাইলে তরমুজ, শসা দিয়েও সরবত বানাতে পারেন। দিনে অন্তত ৩-৪ লিটার জল খান। ডাবের জলে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে। দিনে অন্তত দু’বার ডাবের জল খেতে পারলে ভাল। এনার্জি ফিরে পেতে কার্বোহাইড্রেট প্রয়োজন। তবে খেয়াল রাখবেন, তার বেশির ভাগটাই যেন আসে জলীয় মাধ্যমে। অর্থাৎ ফলের রস কিংবা গ্লুকোজ হিসেবে। দুধ হজম হওয়া কঠিন। কিন্তু দই হল গরমকালের সেরা দাওয়াই। দইয়ের ল্যাকটোব্যাসিলাস ব্যাকটেরিয়া হজমে সাহায্য করে। ক্যালসিয়ামের চাহিদাও মেটায়।