কলকাতা: বন্ধুত্বের হাত ধরেই এ জগতের সব সমস্যার সমাধান আসে ঝট করেই। রক্তের সম্পর্কের বাইরে এই একটি গভীর সম্পর্ক যা আমরা নিজেরা তৈরী করি। কৌটিল্য বলেন দুর্ভিক্ষে, শত্রুসংকটে, রাজার সভায় এমনকি শ্মশান পর্যন্ত আমরা বন্ধু সংসর্গ পাই। ছোটবেলার আনকোরা পৃথিবীর সেরা আবিষ্কার বন্ধুর হাত ধরেই তো হয়। দুপুরের ডাংগুলি বা চুকিতকিত, স্কুলের বাইরের আলুকাবলি কিংবা কারেন্ট নুন, পাড়ার কোন বাড়িতে পেয়ারা কিংবা কাঁচা আম বা আমড়ার খোঁজ সব, এসব কিছুর ভাগ যার সঙ্গ ছাড়া স্বাদহীন সেই তো বন্ধু। স্কুলের ক্লাসে যার সঙ্গে গল্প করতে করতে খেয়াল থাকে না স্যর কিংবা ম্যাম কোন পড়া ধরছেন, সে-ই বন্ধু।
আবার যার পিছনে লেগে দুনিয়ার ভরপুর সুখ আসে হাতের মুঠোয় সে-ই তো বন্ধু। চিৎকার করে সদ্য শেখা গালাগালি যার ওপর ভরপুর প্রয়োগ করা যায় সে ছাড়া কেই বা বন্ধু বলার যোগ্য। বেড়ে ওঠার বয়ঃসন্ধিতে কোনও এক অচেনা মুখ যখন বুকে ঝড় তোলে তখন বন্ধুই হাত ধরে তার সন্ধান দেয়। নিজের পরোয়া না করে বন্ধুর প্রেম মিলিয়ে দিতে যার জুড়ি নেই সেই বন্ধুত্বের দাবিদার। ব্রেক আপের পর যার কাঁধে মাথা রেখে নিজের হৃদয়ের ভার সঁপে দেওয়া যায় তাকে ছাড়া কাকেই বা বন্ধু বলা যেতে পারে। নেশার মৌতাত সঙ্গে যার ভাগ করে নেওয়া সবচেয়ে আনন্দের সে ছাড়া আর কে বন্ধু।
কঠিন পরীক্ষার আগের রাতে যার কাছে অক্লেশে দাবি করা যায় তুই আমার কাছে থেকে যা নাহলে পাশ করা মুশকিল আর সেই দাবি যে গজগজ করতে করতেও মেনে নেয় সেই তো আমাদের বন্ধু। কাজের চাপে প্রেমের চক্করে দিনের পর দিন যাকে অবহেলায় দূরে সরিয়ে রাখলেও বিপদের দিনে একডাকে যে হাজির সেই বন্ধু। সঙ্গী বা সঙ্গিনী বিরাগভাজন হয়েও যে হাত বাড়িয়ে দিতে কসুর করে না সেই বন্ধু. যার আপ্রাণ দাবির ঠেলায় প্রতি মুহূর্তে অসুবিধায় বাবার নাম ভুলতে ভুলতেও প্রশ্রয়ের হাসি হাসা যায় সে হতচ্ছাড়াই বন্ধু। আসুন এই বন্ধুত্বের মরশুমে বন্ধুর কাঁধেই নিজের বডি ফেলে নিশ্চিন্তে বলে ফেলি, খেলব আজ ওই ঘাসে তোর টিমে তোর পাশে।