বাংলাদেশ: ছোটবেলা থেকেই ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখলেও, তা পূরণ হয়নি ফাতেমার৷ ২০১৫ সালে বিয়ে হয়ে যাওয়ায় পড়াশোনায় ইতি পড়ে যায়৷ সংসার সামলে ডাক্তারি পড়া আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি ফাতেমার। তবে সংসার করতে করতেই আবার পড়ালেখা শুরু করেন তিনি। এখন তিনি অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। এখানেই থেমে থাকেননি তিনি৷ করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউন চলাকালীন ঘরে বসেই অনলাইনে ব্যবসা শুরু করেন তিনি৷ লেখাপড়া আর সংসার সামলে ঘরেই চকলেট তৈরি করে তা অনলাইনেই বিক্রি শুরু করেন। মাত্র এক বছরে ছ’ লক্ষ টাকার চকলেট বিক্রি করেছেন তিনি।
ফাতেমার চকলেটের মধ্যে রয়েছে ললিপপ, ট্রাফেল, কাস্টমাইজড চকলেট বার, প্লেইন চকলেট বার, ডার্ক চকলেট, মিল্ক চকলেট, হোয়াইট চকলেট, কফি চকলেট ও স্ট্রবেরি চকলেট। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় কাস্টমাইজড চকলেট বার ও মিল্ক চকলেট। ক্রেতাদের অনুরোধ করলে ফাতেমা চকলেটের ওপর লিখেও দেন। চকলেট নিয়ে কাজ শুরুর মাত্র তিন মাসের মধ্যেই লাখ টাকার চকলেট বিক্রি করেন ফাতেমা। এরপর তিনি ব্যবসাটা দাঁড় করানোর চেষ্টা করেন৷ এরই মধ্যে অনলাইনেই তিনটি প্রশিক্ষণ কোর্সও করা হয়ে গিয়েছে তাঁর৷ ফাতেমার লক্ষ্য নিজস্ব আউটলেট খোলা এবং নিজের ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠা করা। তবে আপাতত তিনি চকলেটের নানা ধরন তৈরিতে মন দিয়েছেন৷
ফাতেমার জন্ম বরিশালে হলেও, পড়াশোনা ও বেড়ে ওঠা পুরান ঢাকায়। বিয়ের পর ব্যবসায়ী স্বামীর সঙ্গে তিনি ঢাকার বাড্ডায় থাকেন। ফাতেমা বলেন, ‘আমি অনেক দিন ধরেই বেকিং নিয়ে আগ্রহী ছিলাম। বাড়িতেই নিজে নিজে ইউটিউবে ভিডিও দেখে, বিভিন্ন জিনিস মিশিয়ে খাবার তৈরি করতাম। চকলেট আমার দারুণ প্রিয়। আমার পরিবারেরও খুব পছন্দের খাবার। একদিন আমি ফেসবুকে একটা বিজনেস গ্রুপ দেখে সেখানে এমনিতেই নিজেদের জন্য বানানো কিছু চকলেটের ছবি দিই। তারপর ঘুমিয়েও পড়ি। সকালে হঠাৎ ফেসবুকে ঢুকে দেখি অনেকেই দাম জিজ্ঞেস করেছে। এতে আমি আগ্রহী হই৷ কিছু চকলেটের অর্ডারও পেয়ে যাই। তারপর বানিয়ে কুরিয়ারের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করি। তারা খেয়ে রিভিউ দেয়। এরপর থেকে প্রায়ই অর্ডার আসতে থাকে।’