আচমকা কারও ব্রেনস্ট্রোক হলে কী করবেন? একটা সিদ্ধান্তই বাঁচিয়ে দিতে পারে

কলকাতা: স্ট্রোকের পরের কয়েক ঘণ্টা চরম দামি! বাড়িতে কারও হলে সঙ্গে সঙ্গে কী করবেন? কিছু টেকনিক আপনার জেনে রাখা দরকার৷ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সামান্য ভুল বড়…

কলকাতা: স্ট্রোকের পরের কয়েক ঘণ্টা চরম দামি! বাড়িতে কারও হলে সঙ্গে সঙ্গে কী করবেন? কিছু টেকনিক আপনার জেনে রাখা দরকার৷ সিদ্ধান্ত নেওয়ার সামান্য ভুল বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে৷

হ্যাঁ একটা ডিসিশনে কারোর জীবন বাঁচতে পারে আবার কারোর শেষ হয়ে যেতে পারে৷ তাই চরম বিপদেও মাথা ঠান্ডা রেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷ ধরুন আপনি বাড়িতে একা৷ আর আপনার সামনে কারোর ব্রেন স্ট্রোক হয়ে গেল৷ সবথেকে প্রথম আপনি কী করবেন? ব্রেন স্ট্রোকের পরের চার ঘণ্টা সময়ই সবচেয়ে দামি। এই সময়ের মধ্যে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারলে বাঁচানোর সম্ভাবনা বেশি থাকে।

তবে সবার আগে আপনাকে বুঝতে হবে ঠিক কী হয়েছে রোগীর? কোন লক্ষণ দেখলে বুঝবেন এটা ব্রেন স্ট্রোক৷ একদম সুস্থ মানুষ আচমকা শরীরের ব্যালান্স হারিয়ে ফেলবেন, হাঁটতে গিয়ে পড়ে যাবেন। হাত-পায়ের সাড় চলে যাবে। শরীরের কোনও এক দিক হঠাৎ পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যেতে পারে। ফেশিয়াল প্যারালাইসিস’ স্ট্রোকের পূর্ব লক্ষণ। মুখের এক দিক বেঁকে যাবে, জিভ আড়ষ্ট হয়ে যাবে, কথা জড়িয়ে যাবে। প্রস্রাব নিয়ন্ত্রণে থাকবে না৷ চিন্তাভাবনা গুলিয়ে যাবে, দৃষ্টি ঝাপসা হতে থাকবে।

এবার জেনে নিন এসময়ে কোন কোন কাজ দ্রুততার সঙ্গে করবেন আপনি৷ স্ট্রোক হওয়ার পর সাড়ে চার ঘণ্টা হল ‘গোল্ডেন আওয়ার’। অর্থাৎ, যে সময়ে হাসপাতালে পৌঁছলে রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। প্রথম রোগীর জ্ঞান থাকলে এক পাশ করে শুইয়ে দিন। শরীরের যে অংশটা অবশ হয়ে গিয়েছে বুঝতে পারবেন, সেই অংশটা যেন উপরে থাকে। রোগীর মাথা একটি বা দু’টি বালিশে রেখে উঁচু করে রাখতে হবে। যদি শরীরের এক দিক পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যায়, তা হলে সেই দিকটা ধরে থাকতে হবে।
স্ট্রোক হয়েছে বুঝলে ভুলেও রোগীকে কিছু খাওয়াতে যাবেন না, জলও না। হালকা জামাকাপড় পরান, যাতে শ্বাস নিতে সমস্যা না হয়।

রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাস এবং নাড়ির গতি পরীক্ষা করতে হবে। যদি নাড়ির গতি কমতে থাকে, তা হলে সিপিআর দিতে হবে। কী ভাবে সিপিআর দিতে হয়, তা জানা না থাকলে কোনও বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিতে পারেন। যদি রক্তনালি বন্ধ হয়ে গিয়ে স্ট্রোক হয়, যাকে চিকিৎসা পরিভাষায় বলা হয় ইস্কিমিক স্ট্রোক, তা হলে প্রথম সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে শিরার মধ্যে একটি ওষুধ দিতে হয়। একে বলে থ্রম্বোলাইসিস। হার্টে রক্ত চলাচলের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হলে তবু কিছু ক্ষণ লড়াইয়ের সুযোগ থাকে। কিন্তু মস্তিষ্ক বেশি ক্ষণ বাঁচতে পারে না। ইস্কিমিক স্ট্রোক হলে প্রতি সেকেন্ডে মস্তিষ্কের ৩২ হাজার কোষের মৃত্যু হতে থাকে। ফলে সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে রোগীকে যেন ফেলে রাখা না হয়, সেটা দেখতে হবে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *