বেজিং: চাঁদের বুক চিরে হিরে উদ্ধার করল চিন! না, ঠিক হিরে নয়৷ তবে অবিকল হিরের মতোই দেখতে৷ এটি বর্ণহীন কলমাকার একটি স্ফটিক৷ বিজ্ঞানীরা বলছেন, এটি আসলে এক ধরনের খনিজ পর্দাথ৷ যা চাঁদে পাড়ি দিয়ে সেখান থেকে সংগ্রহ করে এনেছে চিনের চেং’এ – ৫ মহাকাশযানটি৷ চাঁদ থেকে নিয়ে আসা বেশ কিছু নমুনার মধ্যেই লুকিয়েছিল এই খনিজ৷ তবে কি চাঁদের বুকে নতুন এক নতুন হিরের সন্ধান পেল চিন?
চাঁদ থেকে আনা এই নয়া খনিজ পদার্থটির নাম দেওয়া হয়েছে চেংয়েসাইট– (ওয়াই)। হিরের মতোই এটি স্বচ্ছ স্ফটিক৷ যাকে নতুন খনিজ বলে স্বীকার করে নিয়েছে আন্তর্জাতিক খনিজ সংস্থা বা আইএমএ-ও। সামনেই চিনের ঐতিহ্যবাহী মধ্য-শরৎ উৎসব৷ চন্দ্র দিবসের ঠিক এক দিন আগে, চিনের জাতীয় মহাকাশ প্রশাসন এবং পরমাণু শক্তি সংস্থা যৌথভাবে এই নয়া খনিজ আবিষ্কারের কথা ঘোষণা করে। জানা গিয়েছে, চেং’এ– ৫ মহাকাশযান চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে যে নমুনাগুলির সংগ্রহ করে এনেছে তার মধ্য থেকে হিরের মতো এই স্বচ্ছ স্ফটিকটি খুঁজে বার করে বেজিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব ইউরেনিয়াম জিওলজি। চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে যে সকল খনিজ পদার্থ আবিষ্কার হয়েছে, তার মধ্যে এটি ষষ্ঠ। বিশ্বের তৃতীয় দেশ হিসেবে, চাঁদে পাড়ি দিয়ে এই নতুন খনিজ পদার্থটির সন্ধান পেয়েছে চিন।
বেজিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব ইউরেনিয়াম জিওলজির গবেষকরা জানিয়েছে, এই চেংয়েসাইট – (ওয়াই) খনিজের একটি একক স্ফটিক কণার ব্যাস প্রায় ১০ মাইক্রন, অর্থাৎ গড়পড়তা মানুষের চুলের ব্যাসের এক-দশমাংশেরও কম। এর স্ফটিক গঠন বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা এটিকে সম্পূর্ণ নতুন খনিজ বলে উল্লেখ করেছেন। তবে, চাঁদের বুক থেকে পৃথিবীতে নিয়ে আসা এই নতুন খনিজ ঠিক কোন কোন কাজে ব্যবহার করা হবে, তা এখনও জানা যায়নি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, চেংয়েসাইট – (ওয়াই) কে নিয়ে এখনও অনেক গবেষণা বাকি রয়েছে৷ এই খনিজ সম্পর্ক এখনও অনেক কিছু জানার বাকি৷
A new mineral, Changesite-(Y), was discovered from the moon samples retrieved by #China‘s Chang’e-5 probe, making China the third country to discover a new mineral on moon, Chinese authority said on Friday. pic.twitter.com/XjatWOtraY
— Global Times (@globaltimesnews) September 9, 2022
হিরে সদৃশ এই নয়া খনিজ পদার্থটির পাশাপাশি চেং’এ – ৫’এর ঝুলিতে করে পৃথিবীতে এসে পৌঁছেছে আরও একটি উল্লেখযোগ্য জিনিস৷ এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হিলিয়াম-৩। যদিও এটা নতুন আবিষ্কার নয়। তবে চিনা গবেষকদের দাবি, চন্দ্রের নমুনায় ভারি ঘনত্বে এই বিরল আইসোটোপটি মিলেছে। পৃথিবীতে এই আইসোটোপের পরিমাণ খুবই কম৷ এতদিন অনুমান ছিল, চাঁদে এই আইসোটোপ প্রচুর পরিমাণে আছে। চিনা আবিষ্কারে সেই অনুমানেই সিলমোহর দিল৷ কী কী কাজে ব্যবহার হল এই হিলিয়াম?
পারমাণবিক চুল্লিগুলিতে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে হিলিয়াম – ৩৷ এর থেকে কোনও তেজস্ক্রিয়তা বা অন্যান্য দূষিত পদার্থ নির্গত হওয়ার কোনও ঝুঁকিও নেই। পারমাণবিক চুল্লির পাশাপাশি হিলিয়াম-৩ মহাকাশযানের জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে। গবেষকরা জানাচ্ছে, চাঁদ থেকে হিলিয়াম-৩ নিষ্কাশন করা সম্ভব হলে, আগামী দিনে মহাকাশযানগুলি চাঁদ থেকেই জ্বালানি সংগ্রহ করতে পারবে।
” style=”border: 0px; overflow: hidden”” title=”YouTube video player” width=”560″>