পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনে কংগ্রেসের দাদাগিরি দেখে গজরাচ্ছে সিপিএম!

নিজস্ব প্রতিনিধি: শুধু কেরলে ক্ষমতায় রয়েছে সিপিএম। বহুদিন ধরেই সিপিএম ক্ষমতা হারিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ এবং ত্রিপুরায়। তবু এটা অস্বীকার করার উপায় নেই পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা এবং লোকসভায়…

নিজস্ব প্রতিনিধি: শুধু কেরলে ক্ষমতায় রয়েছে সিপিএম। বহুদিন ধরেই সিপিএম ক্ষমতা হারিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ এবং ত্রিপুরায়। তবু এটা অস্বীকার করার উপায় নেই পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা এবং লোকসভায় শূন্য হয়ে গেলেও সিপিএম এখনও যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক দল। এই পরিস্থিতিতে একাধিক রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে কিছু আসনে জিতে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিকতা ধরে রাখতে চাইছিল সিপিএম। তবে সেক্ষেত্রে কংগ্রেসের উপর তারা অনেকটাই নির্ভর করেছিল। সিপিএমের আশা ছিল কংগ্রেস তাদের আসন ছাড়বে। কিন্তু সেটা না হওয়াতে প্রবল ক্ষোভ প্রকাশ করছে রেড ব্রিগেড।

টনা হল পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী কংগ্রেস। এর মধ্যে ছত্তিশগড়ে ক্ষমতা ধরে রাখার পাশাপাশি মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতায় আসা নিয়ে নিশ্চিত হাত শিবির। সেই সঙ্গে একাধিক সমীক্ষা রাজস্থানে বিজেপিকে সামান্য এগিয়ে রাখলেও রাজস্থানে ফের ক্ষমতা ধরে রাখতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট, এমন সম্ভাবনাও কিন্তু উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে তেলেঙ্গানায় সমস্ত ভোট সমীক্ষা কংগ্রেসকে এগিয়ে রেখেছে একক বৃহত্তম দল হিসেবে। এছাড়া মিজোরামে গতবারের থেকে ভাল ফল হবে বলে নিশ্চিত কংগ্রেস হাইকমান্ড। সব মিলিয়ে পাঁচটি রাজ্য নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী শতাব্দীপ্রাচীন দলটি। কিন্তু এই নির্বাচনে জোট রাজনীতির পরিপ্রেক্ষিতে কংগ্রেসের ভূমিকা সমর্থনযোগ্য নয়। যেভাবে তারা ‘বড়দাদা’র মতো আচরণ করছে তাতে বেজায় ক্ষুব্ধ সিপিএম তথা বামেরা। কংগ্রেস পরিষ্কার ‘দাদাগিরি’ করছে, এমনটাই অভিযোগ সিপিএমের।

যেমন ধরা যাক রাজস্থানের কথা। গত বিধানসভা নির্বাচনে রাজস্থানে ২৮টি কেন্দ্রে প্রার্থী দিয়ে দুটিতে জয়লাভ করেছিল সিপিএম। ওই ২৮টি কেন্দ্রের প্রত্যেকটিতে তারা গড়ে ১৫ হাজারের বেশি ভোট পেয়েছিল। একক শক্তিতে লড়ে সিপিএমের এই ভোট একেবারেই উপেক্ষা করার বিষয় নয়। সেই জায়গা থেকে এবার সিপিএম কংগ্রেসের থেকে মাত্র কয়েকটি আসন চেয়েছিল। তার মধ্যে ছিল গতবারের দুটি জেতা কেন্দ্রও। কিন্তু কংগ্রেস একটি আসনও সিপিএমকে ছাড়েনি। শেষ পর্যন্ত ১৭টি কেন্দ্রে সিপিএম এবার একক শক্তিতে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওই আসনগুলিতে স্বাভাবিকভাবেই বিজেপি সুবিধা পেয়ে যাওয়ার জায়গায় রয়েছে। কারণ রাজস্থানে বহু আসনে এবার সামান্য ভোটের ব্যবধানে জয় পরাজয় নির্ধারিত হবে বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে। সেই জায়গায় সিপিএম ভোট কাটলে অসুবিধা হবে কংগ্রেসেরই। উল্লেখ্য যে দুটি কেন্দ্রে সিপিএম গতবার জয়লাভ করেছিল রাজস্থানে, তার মধ্যে একটিতে তারা বিজেপিকে হারিয়েছিল। তাই কংগ্রেস ও সিপিএমের মধ্যে রাজস্থানে আসন সমঝোতা হলে বিজেপির লড়াই নিঃসন্দেহে আরও কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে উঠত।

স্বাভাবিকভাবেই বিজেপি বিরোধীদের প্রশ্ন, রাজস্থানে সিপিএমকে গুটিকয়েক আসন ছাড়লে কংগ্রেসের কি এমন অসুবিধা হতো? রাজস্থানের পাশাপাশি মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তিশগড়েও বামেদের একটি আসনও কংগ্রেস ছাড়েনি। একই ভাবে মধ্যপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টিকেও কংগ্রেস একটি আসনও ছাড়েনি। শেষ পর্যন্ত উত্তরপ্রদেশ সীমান্তবর্তী মধ্যপ্রদেশের একাধিক বিধানসভা কেন্দ্রে সমাজবাদী পার্টি প্রার্থী দিয়েছে। ওই অঞ্চলে অখিলেশ যাদবের দলের যথেষ্ট ভাল সংগঠন রয়েছে। গত নির্বাচনে সমাজবাদী পার্টি মধ্যপ্রদেশে একটি কেন্দ্রে জয়ও পেয়েছিল। তাই কংগ্রেসের এই ভূমিকায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অখিলেশ। অন্যদিকে কংগ্রেস আসন সমঝোতা না করায় শেষ পর্যন্ত মধ্যপ্রদেশে চারটি এবং ছত্তিশগড়ে তিনটি আসনে বামেরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর পাশাপাশি তেলেঙ্গানাতেও এখনও পর্যন্ত সিপিএম, সিপিআইকে কংগ্রেস কোনও আসন ছাড়েনি। সেখানেও কংগ্রেস আসন না ছাড়লে বামেরা বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে প্রার্থী দিতে চলেছে বলেই খবর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × five =