সুষ্ঠু ভোটের জন্য কমিশনের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কী?

নিজস্ব প্রতিনিধি: পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা নির্বাচন যে নজিরবিহীন নিরাপত্তার মধ্যে হবে সেটা এতদিনে সকলেই বুঝে গিয়েছেন। নির্বাচন ঘোষণার আগেই রাজ্যে পৌঁছে গিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। সবমিলিয়ে ৯২০ কোম্পানি…

নিজস্ব প্রতিনিধি: পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা নির্বাচন যে নজিরবিহীন নিরাপত্তার মধ্যে হবে সেটা এতদিনে সকলেই বুঝে গিয়েছেন। নির্বাচন ঘোষণার আগেই রাজ্যে পৌঁছে গিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। সবমিলিয়ে ৯২০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে পশ্চিমবঙ্গে। আর লোকসভা নির্বাচনের দিন ঘোষণার আগে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে শহরে এসেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ। সোমবার কমিশনের বৈঠকে উঠে এসেছে সন্দেশখালি প্রসঙ্গ। বসিরহাটের পুলিশ সুপারকে কমিশন কড়া বার্তা দিয়ে জানিয়েছে, সন্দেশখালিতে অশান্তি হলে প্রয়োজনে জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিকদের সরিয়ে দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে কমিশনের কড়া নির্দেশ, নির্বাচনী কাজে সিভিক ভলান্টিয়ারদের ব্যবহার করা যাবে না।

সোমবারের পর মঙ্গলবারেও রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন কমিশনের ফুল বেঞ্চের আধিকারিকরা। কিন্তু সুষ্ঠুভাবে ভোট করানোর লক্ষ্যে বুথ দখল বন্ধ করার পাশাপাশি কমিশনের মূল লক্ষ্য কোনটি? কোন কাজটা কমিশনের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে? সেটি‌ হল ভোটারদের নির্বিঘ্নে বুথে নিয়ে আসা। গত কয়েকটি লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনে কেউই বলতে পারবেন না যে একের পর এক বুথ দখল হয়ে গিয়েছে। কারণ প্রত্যেকটি বুথ কেন্দ্রীয় বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় মোড়া ছিল। কিন্তু প্রশ্নটা হল ভোটাররা যদি বুথে আসতেই না পারেন তাহলে ভোটটা দেবেন কী করে? বিরোধীদের অভিযোগ বহু জায়গায় শাসকদলের মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীরা গ্রামে গ্রামে ঢুকে ভোটারদের ভয় দেখিয়ে, ভোটার কার্ড কেড়ে নিয়ে তাঁদের ঘর থেকেই বেরোতে দেয় না। যে অভিযোগ প্রবল ভাবে উঠেছে সন্দেশখালিতে। গত কয়েকটি নির্বাচনে সেখানকার বহু মানুষ ভোট দিতে পারেননি বলে অভিযোগ। তাই ভোটারদের নির্বিঘ্নে বুথে নিয়ে যাওয়াটাই যে কমিশনের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সেটা স্পষ্ট। তার পাশাপাশি রয়েছে বুথ জুড়ে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা।

শাসক বিরোধী নির্বিশেষে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল ও নির্দল প্রার্থীদের এজেন্টদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা। তবেই পুরো নির্বাচন পর্ব সুষ্ঠুভাবে করানো সম্ভব হবে। অর্থাৎ শুধু বুথে নিরাপত্তা বাড়ালেই হবে না, গ্রামের ভিতরে ভিতরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের রুট মার্চ করিয়ে, এরিয়া ডমিনেশন করিয়ে, ভোটারদের মনে আস্থা জাগানোর চেষ্টা করতে হবে কমিশনকে। রাজ্য জুড়ে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের যাতে নিখুঁতভাবে ব্যবহার করা যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে কমিশনকে। বহু ক্ষেত্রে অভিযোগ ওঠে বাহিনী নাকি এক জায়গায় বসে আছে। তাতে ৯২০ কোম্পানি কেন, ১০ হাজার কোম্পানি বাহিনী আসলেও কাজের কাজ কিছু হবে না। তাই সেই কঠিন চ্যালেঞ্জ হাতে নিয়ে কমিশন কতটা সুষ্ঠুভাবে লোকসভা নির্বাচন করাতে পারে পশ্চিমবঙ্গে সেটাই এখন দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seven − five =