কলকাতা: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে অনুযায়ী অবশেষে নিয়োগপত্র হাতে পেতে চলেছেন প্রায় ১২০০ শিক্ষক পদপ্রার্থী৷ দীর্ঘ ১০ বছর ধরে মামলা-মোকদ্দমা চালিয়ে যাওয়ার পর পিটিটিআই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হামলাকারীদের ‘এ’ ক্যাটাগরিতে নিয়োগ পেতে চলেছেন৷ কিন্তু ওই একই বছর নিয়োগ হওয়া প্রায় ১৪ হাজার শিক্ষককে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে উত্তীর্ণ না করায় বেতন বঞ্চনার অভিযোগ তুলতে ফের বিদ্রোহ ঘোষণা ২০১০ সালে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের একাংশ৷বেতন বঞ্চনা কাটাতে কলকাতা হাইকোর্টে দরকার করার প্রস্তুতি শিক্ষকদের একাংশের৷
শিক্ষকদের অভিযোগ, ২০০৪-২০০৫ শিক্ষাবর্ষে প্রশিক্ষণ প্রাপ্তদের ২০০৬ সালে কর্মবিনিয়োগ কেন্দ্রের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়৷ এই নিয়ে উচ্চ আদালতে দায়ের হয় একাধিক মামলা৷ ফলে, থমকে যায় নিয়োগ৷ দীর্ঘদিন আন্দোলন ও আইনী লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পর ২০১০ সালের প্রথমার্ধে একাডেমিকের জন্য বরাদ্দ ২২ নম্বর না দিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে রাজ্য৷ শিক্ষণ প্রশিক্ষা কেন্দ্রের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় ‘প্রশিক্ষণ প্রাপ্তদে’র ২২ নম্বর বাদ রেখে তৈরি হয় তালিকা৷ ফলে, বৈধতা জটিলতার কারণে ‘প্রশিক্ষিত’দের অপ্রশিক্ষিত দেখিয়ে নিয়োগ করা হয় হলে অভিযোগ৷ ৫৪০০ থেকে ২৫২০০ গ্রেড পে ২৩০০ বেতন হিসেবে নিয়োগ করা হয়৷ কিন্তু, ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া মিটে গেলেও প্রশিক্ষণ বাবদ ২২ নম্বর না পেয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া থেকে ছিটকে যান বহু পরীক্ষার্থী৷ মামলা গড়ায় হাইকোর্টে৷ পরে সুপ্রিম কোর্টে ওঠে পিটিটিআই প্রশিক্ষিতদের মামলা৷
১০ বছর মামলা চালিয়ে যাওয়ার পর গত মাসে সুপ্রিম কোর্ট ২২ নম্বর দিয়ে ১ বছরের প্রশিক্ষিত পিটিটিআইদের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নিয়োগের নির্দেশ দেয়৷ সেই মর্মে মামলাকারীদের নিয়োগপত্র বিলিও করেছে রাজ্য৷ কিন্তু অভিযোগ, ১ বছরের প্রশিক্ষিত পিটিটিআইদের ‘এ’ ক্যাটাগরিতে নিয়োগ করা হলেও ওই একই বছর ২০১০ সালে নিয়োগ হওয়া শিক্ষকদের ‘অপ্রশিক্ষিত’ দেখিয়ে কম বেতন দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষকদের একাংশ৷ অবিলম্বে ২০১০ সালে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরাও যাতে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে উত্তীর্ণ হতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে সংগঠন তৈরি করে ফের মামলা দায়েরের প্রস্তুতি শুরু শিক্ষকদের৷
এবিষয়ে শিক্ষক নেতা তন্ময় ঘোষ বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে ১ বছরের প্রশিক্ষিত পিটিটিআইদের নিয়োগ করেছে রাজ্য৷ এক বছরের প্রশিক্ষিতদের (৫৪০০-২৫২০০, গ্রেড পে ২৬০০) নিয়োগ করেছে৷ কিন্তু, একই শিক্ষাবর্ষে প্রশিক্ষিতদের দুই রকম বেতন কাঠামোতে নিয়োগ করা তো অনৈতিক৷ সরকারের এই দ্বিচারিতার ফলে রাজ্যের ১৪০০০ শিক্ষকের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছেন৷ চাকরিতে যোগদানের সময় থেকে ‘এ’ ক্যাটাগরির বেতন কাঠামোর জন্য আইনি পদক্ষেপের প্রস্তুতি চলছে৷ পাশাপাশি আমরা এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে কোনও সদুত্তর না পেলে রাজ্যব্যাপী বৃহত্তর আন্দোলনে নামব৷’’