কলকাতা: সাংবিধানিক প্রথা মেনে রাজ্য মন্ত্রিসভার অনুমোদিত ভাষণ হুবহু পড়ে শোনালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর৷ শুক্রবার রাজ্য সরকারের বাজেট অধিবেশনের সূচনাকালে রাজ্যপালের ভাষণ ঘিরে কৌতূহল তুঙ্গে ছিল৷ কারণ এই ভাষণে নজিরবিহীন ভাবে নিজের মতামত তুলে ধরার আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি৷ তবে তাঁর এই আবেদন গ্রাহ্য হয়নি৷ তাই বরাবরের মতো এবারও ধনকর মনগড়া কিছু করে বসেন কিনা তা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল৷ আজ সেই জল্পনায় জল ঢেলে রাজ্যের লিখিত ভাষণ পাঠ করে বিদ্রোদের বিদলে রাজ্যপালের ‘সমঝোতা’ ঘিরে প্রশ্ন তুলছে বিরোধী শিবির৷ কিন্তু, রাজ্যের নির্ধিত লিখিত ভাষণে কি ছিল বাংলার কর্মসংস্থা ও সরকারি কর্মচারীদের প্রাপ্য মেটানোর প্রসঙ্গ৷
রাজ্যপালের ভাষণে নেই কর্মসংস্থানের আশার আলো৷ কেন কর্মচারীদের বকেয়া দেওয়া হচ্ছে না কেন? তাঁদের মহার্ঘ ভাতা দিতে ব্যর্থ রাজ্য সরকার কেন তা নিয়ে আলোকপাত করল না? বিধানসভায় রাজ্যের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুললেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান৷
সংবাদিক বৈঠক করে আব্দুল মান্নানের দাবি, ‘‘আজ রাজ্যের লেখা রাজ্যপালের ভাষণে বাংলার বেকারত্ব দূরীকরণ নিয়ে কোনও আশার আলো দেখাতে পারেননি৷ এই বাজেট বক্তৃতায় রাজ্যপালের ভাষণের মধ্য দিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের প্রাপ্য নিয়ে কেন ছিনিমিনি খেলছে, তা নিয়ে কিছু বলেনি৷ এখনও অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের পেনশন বর্তমান হারেও পারছেন না৷ মহার্ঘভাতা নিয়ে আদালতে মামলা চলছে দীর্ঘদিন ধরে৷ এখন সেখানে আদালত অবমাননার মামলা মুখোমুখি হতে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে৷ দেওয়া হচ্ছে না মহার্ঘ ভাতা৷ আজ কিন্তু একবারও তা নিয়ে কিছু করতে পারলেন না মুখ্যমন্ত্রী৷’’
তাঁর আরও দাবি, ‘‘অর্থ কমিশন কেন বলছে না, আমাদের রাজ্যের বকেয়া কত আছে? কোনটা রাজ্য সরকার চাইছে এবং কোনটা কেন্দ্র সরকার দিচ্ছে না? সেটাও বলতে পারল না৷ তাই বলছি, শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে গিয়েছেন আপনি৷ বিতর্ক এড়াতে বিধানসভার মর্যাদাকে রক্ষা করার নাম করে আপনি কেন্দ্রের কাছে পুরো আত্মসমর্পণ করলেন৷ কেন্দ্রের ভয় পেলেন৷ কেন্দ্র নাগরিক আইন নিয়ে যেভাবে মানুষের ভাগবাটোয়ারা নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে৷ দেশকে টুকরো টুকরো করার ষড়যন্ত্র করছে, তাতে প্রতিবাদ করতে পারলেন না? সেটা কেন্দ্রের হোক বা রাজ্যপালের হস্তক্ষেপে হোক, সেটা পরবর্তী ক্ষেত্রে প্রমাণ হবে৷’’