কলকাতা: অনশনরত পার্শ্ব শিক্ষকদের পাশা দাঁড়িয়ে চরম হুঁশিয়ারি দিলেন বাম-কংগ্রেস নেতৃত্ব৷ শিক্ষকদের সমস্যা সমাধান না হলে বিধানসভা অচল করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর৷ ২০০৯ সালের বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁর দেওয়া প্রতিশ্রুতি কেন পূরণ করছেন না? কেন বিধানসভায় পার্শ্ব শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনা করতে দিচ্ছে না সরকার? শিক্ষক অনশনের ১৯ দিন পরও কেন রাজ্য সকার কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে? বিধানসভায় প্রশ্ন সুজনের৷
বিধানসভায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এটা খুব দুঃখের ব্যাপার৷ টানা ১৯ দিন হয়ে গেল, আমাদের রাজ্যের পার্শ্ব শিক্ষকেরা অনশনে বসেছেন৷ অনেকেই অসুস্থ৷ অবস্থান-বিক্ষোভের জন্য তাঁদের আদালতের অনুমতি নিতে হচ্ছে৷ এমন নির্লজ্জ প্রশাসন যে কাউকে বিক্ষোভ পর্যন্ত দেতে দেয় না৷ কারও সঙ্গে কথা পর্যন্ত বলতে দেবে না৷ বিধানসভায় দৃষ্টি আকর্ষণ পর্যন্ত করতে দিচ্ছে না৷ সরকার তার অবস্থান জানাক, পার্শ্ব শিক্ষকদের নিয়ে কী অবস্থান তাঁদের৷ ১৯ দিন ধরে অনশনে বসে আছেন পার্শ্ব শিক্ষকরা৷ সরকার কী জানে না?’’
তাঁর আরও দাবি, ইতিমধ্যেই বেশ কিছু শিক্ষক সেখানে অসুস্থ হয়েছেন৷ দু’জন মৃত্যু হয়েছে৷ সব মিলিয়ে চূড়ান্ত নৈরাজ্যের মতো পরিস্থিতি শিক্ষাক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের চালু হয়েছে৷ এটা সরকারের অপদার্থতা জন্য৷ সরকার কি চোখে দেখতে পাচ্ছে না? সরকার উত্তর দিতে সাহস পেল না? বিধানসভায় উল্লেখ পর্বে পার্শ্ব শিক্ষকদের বিষয়টি উল্লেখ করেছিলেন বিধায়ক জাহানারা বেগম৷ কিন্তু, আলোচনা করতে দেওয়া হচ্ছে না৷
সুজনের আরও দাবি, ‘‘পুরনো আমলে গল্প বলছে সরকার৷ আমি বলছি, সমস্ত ভুল৷ এই সরকার আসার পর পার্শ্ব শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে৷ আগের সরকারের সরকারের সময় যেমন হয়েছে তেমনই এই সরকার পার্শ্ব শিক্ষকদের নিয়োগ করেছে৷ সর্বশিক্ষা অভিযানের অংশ হিসেবে পার্শ্ব শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছিল৷ আগের সরকার পার্শ্বশিক্ষকদের ৬০ বছরের কাজের নিশ্চয়তা দিয়ে গিয়িছে৷ ৮ হাজার টাকায় কীভাবে সংসার চলবে? পার্শ্ব শিক্ষকদের ন্যূনতম মূল্য দেওয়া হচ্ছে না৷’’
কংগ্রেস নেতৃত্বের পাশে বসে সাংবাদিক বৈঠকে বাম নেতা সুজনের আরও দাবি, ‘‘শিক্ষকরা এখন চাইছেন সমকাজে সম বেতন৷ শিক্ষকরা চান, বেতন কাঠামো৷ কিন্তু মন্ত্রী এই বিষয়ে কোন সাহস দেখাতে পারছেন না৷ তার উত্তর দিতে পর্যন্ত পারছেন না৷ এরকম চললে বিধানসভার কাজ বন্ধ করে দেব৷ বিধানসভার কাজ বন্ধ করে দেব, যদি পার্শ্বশিক্ষকদের দাবিতে সরকার চুপ করে থাকে৷ শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও অব্যবস্থার কারণ জানতে চেয়েছিলাম৷ সরকার এই বিষয়ে উত্তর দিক৷ সব কাজ বন্ধ রেখে এই বিষয়ে আলোচনা করতে হবে বিধানসভায়৷ আমি আবারও বলছি, শিক্ষকরা ওখানে অনশনে আছেন৷ তাদের দাবি পূরণ করা হোক৷’
মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে সুজনের মন্তব্য, ‘‘তাঁরা যে দাবিটা তুলেছে সেটা সংগত৷ মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী তখন বিরোধী দলনেত্রী ছিলেন৷ ২০০৯ সালে এই রানি রাসমণি রোডে তখন মঞ্চে বর্তমান শিক্ষা মন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন৷ শিক্ষামন্ত্রী তখন বিরোধী দলের নেতা ছিলেন৷ মুখ্যমন্ত্রী তখন বিরোধী নেত্রী৷ তাঁরা দু’জনে উপস্থিত থেকে পার্শ্ব শিক্ষকদের দাবি পেশ করেছিলেন৷ সরকার আসলে কি করবে৷ কিন্তু, এখন সরকারে এসে কেন পার্শ্ব শিক্ষকদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করছেন না? আমরা বিধানসভায় এগুলি তুলে ধরতে চাই৷’’