কলকাতা: প্রমাণ মিলিছে প্রথম দফার নির্বাচনে৷ হয়েছে অশান্তি৷ সামনেই দ্বিতীয় দফার নির্বাচন৷ সেখানেও ৪৫ শতাংশ বুথে থাকবে না কেন্দ্রীয় বাহিনী৷ রাজ্য পুলিশ দিয়ে ভোট করানোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে৷ কিন্তু, রাজ্য পুলিশকে দিয়ে ভোট করাতে গিয়ে বলগাহীন সন্ত্রাসের অভিযোগও উঠেছে৷ ফলে, এই পরিস্থিতে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ ভোটকর্মী পরিবারের৷ পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা চেয়ে এবার রাজপথে মানবন্ধনে শামিল ভোটকর্মীদের পরিজনরা৷
লোকসভা নির্বাচনে ভোটকর্মীদের নিরাপত্তার দাবিতে এবার পথে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানালেন তাঁদের পরিবারের সদস্যরা৷ প্ল্যাকার্ড হাতে বাবার নিরাপত্তা চেয়ে রাজপথে বছর ১০ দশের ছোট্ট গৌরব৷ ‘আমার বাবার নিরাপত্তা কোথায়?’ প্রশ্ন ছোট্ট গৌরবের৷
গত মঙ্গলবার উত্তর দিনাজপুর জেলা জুড়ে প্রশিক্ষণ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ দেখান ভোটকর্মীরা। বৃহস্পতিবার প্রথম দফায় ভোটে বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনা ঘটেছে কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে। তাতে আতঙ্ক আরও বেড়েছে। শনিবার প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন ও পর্যাপ্ত নিরাপত্তার দাবিতে পথে নামলেন ভোটকর্মীদের পরিবারের লোকেরাও। রায়গঞ্জের রাস্তায় মানববন্ধন করলেন তাঁরা। বাড়ির বড়দের সঙ্গে প্ল্যাকার্ড হাতে দেখা গেল শিশুদেরও। তবে শুধু রায়গঞ্জেই নয়, এদিন নিরাপত্তার দাবিতে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে বিক্ষোভ দেখান ভোটকর্মীরা।
ভোটকর্মীদের নিরাপত্তা চেয়ে শনিবার বিক্ষোভ দেখান শিক্ষকদের একাংশ৷ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বারুইপুরের রাসমণি গার্লস হাইস্কুলে ভোট কর্মীদের নিরাপত্তার দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে শিক্ষক শিক্ষাকর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্যমঞ্চের প্রতিনিধিরা৷ এদিনের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অনিমেষ হালদার বলেন, ‘‘গত ৮ এপ্রিল ডেপুটেশনে সিইও আমাদের লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রথম দফার নির্বাচনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে নির্বাচন কমিশন। কমিশন বেশিরভাগ জায়গায় সন্ত্রাসপূর্ণ পরিবেশে ও আশঙ্কার মধ্যে ঠেলে দিয়েছে ভোট কর্মীদের। ফলে পরবর্তী দফার গুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী সহ সুনিশ্চিত নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলন চলছে। কমিশন উপযুক্ত ব্যবস্থা না গ্রহণ করলে সমস্ত ভোটকর্মী ঐক্যবদ্ধভাবে ভোট প্রক্রিয়া বয়কট করবে৷’’
গত বছর পঞ্চায়েত ভোটের কাজে গিয়ে রহস্যজনকভাবে উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারে মৃত্যু হয় প্রিসাইডিং অফিসার রাজকুমার রায়ের৷ ভোটগ্রহণের পরের দিনে রায়গঞ্জ স্টেশনের কাছে রেললাইন থেকে রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। লোকসভা ভোটে আতঙ্ক গ্রাস করেছে জেলার ভোটকর্মীদের। উত্তর দিনাজপুরের প্রতিটি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি তুলেছেন তাঁরা৷ আগামী বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফায় ভোট৷ ভোট হবে জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ ও দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে৷