কলকাতা: আকাশছোঁয়া দুর্নীতি৷ ক্যাগের রিপোর্টে প্রশ্নের মুখে স্কুল সার্ভিস কমিশনের শিক্ষক নিয়োগের স্বচ্ছতা৷ শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বিতর্কে জল ঢেলে গতমাসে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, নতুনদের সুযোগ দিতে নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ করা হবে৷ সেই নিয়ে প্রবল প্রত্যাশা জন্মেছিল চাকরি প্রার্থীদের মধ্যে৷ কিন্তু, আদৌ কি নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ হতে চলেছে? কী ভাবছে স্কুল সার্ভিস কমিশন?
শিক্ষামন্ত্রীর দেওয়া ইঙ্গিত পুরোপুরি খারিজ করে এসএসসির চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার আজ বিকেল ডট কমকে জানিয়েন, ‘‘কীসের নতুন বিজ্ঞপ্তি? আরে যে নিয়োগগুলি চলছে, সেটাই এখনও হল না! এসএসসির নিয়ম জানেন? নতুন বিজ্ঞপ্তি দেওয়া মানে পুরানো বিজ্ঞপ্তি বাতিল হয়ে যাওয়া৷ যে নিয়োগগুলি করছি, সেগুলি আগে শেষ হোক, তার পর তো নতুন বিজ্ঞপ্তি৷ এসএসসির রুলে হচ্ছ, নতুন বিজ্ঞপ্তি নামে পুরানো বাতিল হয়ে যাওয়া৷ এতগুলি লোক এখনও চাকরি পায়নি, এখনই তা বাতিল করে দেব৷’’
অর্থাৎ পুরানো নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত নতুন করে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি যে জারি হচ্ছে না, তা কার্যত পরিষ্কার করে দিয়েছেন কমিশনের চেয়ারম্যান৷ কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, পুরানো নিয়োগ শেষ করতে আর কত দিন সময় নেমে কমিশন৷ দীর্ঘ পাঁচ বছর ঝুলে থাকার পর উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া এখনও শেষ করে উঠতে পারেনি কমিশন৷ তার উপর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক নিয়োগ এখনও ঝুলে৷ রয়েছে অন্তত হাজার খানিক মামলা৷ তাহলে, এই সমস্ত জট কাটিয়ে আদৌও এবছর তো দূরের কথা বিধানসভা নির্বাচনের আগে নতুন করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷ শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি, মামলার গেরোয় কেন থমকে থাকবে শিক্ষক প্রশিক্ষণ নেওয়া নতুন চাকরিপ্রার্থীরা? নিয়োগ সমস্যা মেটাতে কেন হাইকোর্টে ‘নাকানি-চুবানি’ খেতে হচ্ছে কমিশনকে? সমস্যা ঠিক কোথায়?
যদিও, গত ২০ জুলাই সাংবাদিক বৈঠক করে নবম দশম ও একাদশ দ্বাদশে শূন্যপদ বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘তার মানে আপনারা চাইছেন যে ২০১৯ সালে শিক্ষক নিয়োগের কোন পরীক্ষা যেন না হয়৷ আমরা নতুনদের সুযোগ দেওয়ার পক্ষে৷ যতটুকু নিয়মের মধ্যে আছে, যতটুকু রুমের মধ্যে আছে, সবটাই হবে৷ রুলের বাইরে গিয়ে কিছু করতে পারব না৷ না হলে আবার লোকে হাইকোর্টে যাবে৷ দরকার কী?’’