কলকাতা: দায়িত্ব নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার পর সাংবাদিক বৈঠক ডেকে উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে চাকরি-প্রার্থীদের আশ্বাস দিলেন কমিশনের চেয়ারম্যান৷ কিন্তু, কমিশনের তরফে উচ্চ প্রাথমিকের বিজ্ঞপ্তি জারি না হওয়ায় চূড়ান্ত ক্ষুব্ধ রাজ্যের কয়েক লক্ষ চাকরিপ্রার্থী৷ পরিস্থিতি সামলাতে ফের একবার সংবাদমাধ্যমে চাকরি-প্রার্থীদের শান্ত থাকার বার্তা দিলেন চেয়ারম্যান৷
আদলতে মামলা জট কাটিয়ে নবম-দশমের কাউন্সেলিংয়ের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়ে গেলেও উচ্চ প্রাথমিকের ‘ডক্যুমেন্ট ভেরিফিকেশন’-এর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়নি৷ ফলে, প্রার্থীরা ওয়েবসাইট দেখে বিজ্ঞপ্তি খুঁজে না পেয়ে ব্যাপক ক্ষুব্ধ হন৷ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন প্রার্থীরা৷ এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘প্রধান শিক্ষক নিয়োগে পরবর্তী শুনানি ৩১ জানুয়ারি হওয়ার কথা৷ বার বার প্রতিবন্ধকতার জেরেই উচ্চ প্রাথমিক স্তরে শিক্ষক নিয়োগের জন্য অঞ্চলভিত্তিক যে ভেরিফিকেশন করার কথা ছিল, কিছু দিনের জন্য আমরা তা পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছি৷ তবে ফেব্রুয়ারির মধ্যে ভেরিফিকেশন-সহ ইন্টারভিউ শেষ করার কথা ভাবা হচ্ছে৷’’
এর আগে একটি সংবাদমাধ্যমে দায়িত্ব স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার জানান, ‘‘ওটা এখন পারছি না৷ একটু সময় লাগবে৷ এত একসঙ্গে পারব না৷ আমি চেষ্টা করছি৷ আপার প্রাইমারি হচ্ছে মহাযজ্ঞ৷ আমরা খুব চেষ্টা করছি জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে বা ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে আপার প্রাইমারির ভেরিফিকেশন শুরু করতে পারব৷’’
ফলে, কমিশনের তরফে একের পর আশ্বাস পেয়ে আপারের ভাগ্য নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷ কেননা, একের পর এক মামলায় জেরবার কমিশন৷ কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষা বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার ওপর সাত দিনের অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ রয়েছে৷ প্যানেলে গলদ রয়েছে, এই অভিযোগে মামলা হয় হাইকোর্টে৷ ২০১৬ সালে জারি করা বিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষিতে পরীক্ষা হয় ২০১৭-তে৷ ২০১৮ সালে ফল প্রকাশিত হয়৷ সম্প্রতি শুরু হয়েছে নিয়োগ প্রক্রিয়াও৷
মামলাকারীদের বক্তব্য, ‘প্যানেলে একাধিক অসঙ্গতি আছে। যাঁরা সংরক্ষিত আসনে পরীক্ষা দিয়েছেন, তাঁদের স্থান প্রথম দিকে থাকা সত্ত্বেও প্যানেলে অন্যদের রাখা হয়েছে।’ আবার যাঁরা প্যানেল তৈরি করেছেন, তাঁদের অনেকে প্রশিক্ষণ ছাড়াই এই কাজ করেছেন বলে অভিযোগ করেন মামলাকারীরা। ইতিমধ্যেই শারীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষার জন্য নিয়োগও শুরু হয়েছিল৷ শারীরশিক্ষার শূন্যপদ ছিল ১,০৬৮টি৷ অন্য দিকে কর্মশিক্ষার শূন্যপদ ছিল ১০৯৯টি৷ আপাতত গোটা প্রক্রিয়ার উপরই স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে সাত দিনের জন্য৷
সোমবার কমিশনের চেয়ারম্যান জানিয়েছিলেন, ‘‘আমরা পূর্ব ঘোষণা মতো মঙ্গলবার উচ্চ-প্রাথমিক স্তরের শিক্ষক পদপ্রার্থীদের ‘ডক্যুমেন্ট ভেরিফিকেশনে’র কাজ শুরু করছি৷ আর আদালত থেকে যেহেতু কোনও স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়নি, তাই নবম-দশম শ্রেণির দ্বিতীয় দফার কাউন্সেলিংও আমরা ৫ ফেব্রুয়ারি শুরু করছি৷’’ মঙ্গলবার উচ্চ প্রাথমিক প্রসঙ্গে চেয়ারম্যানের মন্তব্য, ‘‘ওটা পরে হবে৷ আমরা নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ দ্রুত শেষ করাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি৷’’