কলকাতা: চাকরির আকাল বাজারেও উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের তথ্য যাচাই পর্বে গরহাজির বহু চাকরিপ্রার্থী৷ তৃতীয় দফার প্রথম পর্বের ভেরিফিকেশন পর্বে গরহাজির পরীক্ষার্থীদের নতুন করে সুযোগ দিতে চলেছে কমিশন৷ কমিশনের তরফে এই ঘোষণার পর স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছিল, তৃতীয় দফার পর এবার কি চতুর্থ দফায় উচ্চ প্রাথমিকে ভেরিফিকেশন হবে? চাকরিপ্রার্থীদের সেই প্রশ্নের ইঙ্গিত দিল স্কুল সার্ভিস কমিশন৷
গত ৪ জুন তৃতীয় দফায় ভেরিফিকেশন পর্বে যাঁরা উপস্থিত থাকতে পারেননি, পরে একটি নির্দিষ্ট দিনে তাঁদের তথ্য যাচাই করানো হবে বলে জানিয়েছেন কমিশনের চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার৷ সংবাদমাধ্যমে সৌমিত্রবাবু জানিয়েছেন, গত ৪ থেকে ১২ জুন পর্যন্ত স্কুলশিক্ষা ও এসএসএসির কর্মীরা যৌথ ভাবে প্রার্থীদের নথি যাচাই করেছেন৷ ইতিমধ্যে প্রথম দফায় ১৭ হাজার ২০২ জনকে ডাকা হয়েছিল৷ দ্বিতীয় দফায় ডাকা হয় ৫ হাজার ৫০০ চাকরিপ্রার্থীকে৷ তৃতীয় দফায় ১৫ হাজার প্রার্থীর তথ্য যাচাইয়ের জন্য ডাকে কমিশন৷ বিপুল সংখক চাকরিরপ্রার্থীকে ডাকার পর এবার প্রয়োজন পড়লে টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীদের চতুর্থ দফায় ভেরিফিকেশনের ডাকা হবে বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন কমিশনের চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার৷ বিকাশ ভবন সূত্রে খবর, উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগের জন্য প্রথম তিন দফায় তথ্য যাচাই করা সফল প্রার্থীদের ইন্টারভিউ নেওয়া হবে৷ এরপর, শূন্যপদ সংক্রান্ত তথ্য খতিয়ে দেখার পর খুব সম্ভবত অগস্ট নাগাদ ফাঁকা আসনের জন্য চতুর্থ দফায় ভেরিফেকশনের ডাক দেওয়া হতে পারে৷
জানা গিয়েছে, এবার ডাক পেয়েও চাকরি নিতে গরহাজির কয়েক হাজার চাকরিপ্রার্থীরা৷ কমিশন সূত্রে খবর, উচ্চ প্রাথমিকে তৃতীয় দফার ভেরিফিকেশন পর্বে গরহাজি ৩ হাজার চাকরিপ্রার্থী৷ দ্বিতীয় দফার ভেরিফিকেশন পর্বে গরহাজি ছিলেন অন্তত ১৫০০ জন চাকরিপ্রার্থী৷ প্রথম পর্বে গরহাজির সংখ্যা সব থেকে বেশি৷ ডাক পেয়েও ভেরিফিকেশন পর্বে যাননি ৫ হাজার চাকরিপ্রার্থী৷ উচ্চ প্রাথমিকের টেট উত্তীর্ণের সংখ্যা প্রায় দু’লক্ষের কাছাকাছি৷ তার মধ্যে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষণহীন, উভয় ধরনের প্রার্থীই আছেন৷ এর আগে একাদশ-দ্বাদশে প্রথম দফার নিয়োগে ১ হাজার ২০০’র বেশি প্রার্থী সফল হয়েও অনুপস্থিত ছিলেন৷ এদের অধিকাংশই চূড়ান্ত তালিকায় নাম উঠলেও কাউন্সেলিংয়ে হাজির হননি৷ নবম-দশমের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা প্রায় ১ হাজার ৮৬ জন৷ চাকরি নিতে অস্বীকার করেন ১৪১ জন৷ তিন দফায় কাউন্সেলিং হওয়ার পরও উচ্চ মাধ্যমিক মাধ্যমিকে যথাক্রমে ৪০০ ও ১৩০০ শূন্য পদ রয়ে গিয়েছে৷
উচ্চ প্রাথমিক স্তরে শিক্ষক নিয়োগের তথ্য যাচাই পর্ব শুরু হয়েছে গত ৪ জুন থেকে৷ মাঝে ৫ ও ৬ জুন ভেরিফিকেশন পর্ব বন্ধ ছিল ঈদের ছুটির কারণে৷ ফের ভেরিফিকেশন শুরু হওয়ার পর স্কুল সার্ভিস কমিশনের দ্বারস্থ হন গরহাজির থাকা বেশ কিছু চাকরিপ্রার্থী৷ কমিশনের এই সিদ্ধান্ত চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে৷ গরহাজির প্রার্থীদের কেন ডাকা হবে? এর পিছনে কী অন্যকোনও কৌশল রয়েছে, যাতে পিছনের দরজা দিয়ে নিয়োগ করানো যায়? সিঁদুরে মেঘের আশঙ্কা চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের৷