মধ্যপ্রদেশ: একাধিক দাবি-দাওয়া আর অভিযোগ নিয়ে এরাজ্যে শিক্ষক সংগঠনগুলির আন্দোলনে কোনো বিরতি নেই। বলা যায় শিক্ষকদের ন্যায্য যাবতীয় ইস্যু নিয়ে দিন দিন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগের তালিকা বেড়েই চলেছে। বেতন কাঠামো বেতন বৈষম্য তো আছেই তার সঙ্গে শিক্ষকদের নিয়োগ পদ্ধতি নিয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে দুর্নীতির বিষয়টি তুলে ধরা হচ্ছে। এনিয়ে একাধিক মামলাও দায়ের হয়েছে এবং যথারীতি হয়েই চলেছে। তুলনা হিসেবে দেশের অন্যান্য রাজ্যের শিক্ষকদের সুব্যবস্থার কথাও জোর দিয়ে বলছেন এরাজ্যের শিক্ষকতার।
তবে স্কুলশিক্ষদের নিয়ে দুর্নীতির নজির যে সব রাজ্যেই কম-বেশি আছে এবার তারই বড়সড় উদাহরণ উঠে এলো মধ্যপ্রদেশ থেকে। এনিয়ে কংগ্রেস শাসিত এই রাজ্য এখন চর্চার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। দেভলি প্রাইমারি স্কুল মধ্যপ্রদেশের খারগণ জেলা হেডকোয়ার্টার থেকে মাত্র ৪৫ কিলোমিটার দূরত্বে।
বৃহস্পতিবার হঠাৎই স্কুল পরিদর্শনে আসেন ডেপুটি জেলাশাসক রাহুল চৌহান। একটি ক্লাসে তখন পড়াতে ব্যাস্ত ছিলেন শিক্ষক দয়াল সিং। স্কুলের বাকি দুই শিক্ষক অনুপস্থিত থাকায় তাঁর কাছেই নানান বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। আর তখনই কেঁচো খুঁড়তে বেড়িয়ে পড়ে সাপ। কথায় কথায় পরিদর্শক জানতে পারেন শিক্ষক দয়াল সিং অষ্টম শ্রেণী ফেল। যেখানে শিক্ষকতার চাকরির ন্যূনতম যোগ্যতা মান স্নাতক। এমনকি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে নির্দিষ্ট নম্বরও থাকতে হবে।
এখন তো আবার বিএড, ডিএডের মতো বিষয়গুলিও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তবে ওই শিক্ষকের দাবি এই কাজের জন্য তাঁকে কোনো পরীক্ষাতেও বসতে হয়নি এমনকি তাঁর বেতনও মাসে মাত্র ৪ হাজার টাকা। কারণ এই কাজে তাঁকে নিয়োগ করেছেন ওই স্কুলেরই আর এক শিক্ষক রামেশ্বর রাউত। যিনি সেদিন অনুপস্থিত ছিলেন। আরও একজন শিক্ষক জব্বর সিংও ওইদিন অনুপস্থিত ছিলেন।
এদিকে এরপর শিক্ষকদের রেজিস্টার খুলে দেখা যায় প্রায় ১৫ দিন ধরে অনুপস্থিত ওই স্কুলের বাকি দুই শিক্ষক রামেশ্বর রাউত ও জব্বর সিং। দয়াল সিং এর দাবি রামেশ্বর বাবু তাকে শুধুমাত্র স্কুল সামলানোর জন্য রেখেছেন নিজেদের সুবিধার্থে। বিশেষত, যখন ওই দুই শিক্ষক অনুপস্থিত থাকবেন। অর্থাৎ দয়াল সিং সম্পূর্ণভুয়ো শিক্ষক।
বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয় গ্রামবাসীদের কাছে খোঁজ খবর শুরু করেন ডেপুটি জেলাশাসক। জানতে পারেন দীর্ঘদিন ধরেই স্কুলে আসেন না ওই দুই শিক্ষক। পরিবর্তে তাদের নামে রেজিস্টার খাতায় উপিস্থিতি দেয় দয়াল। এরপরেই অভিযুক্ত দুই শিক্ষক রামেশ্বর রাউত ও জব্বর সিংকে তড়িঘড়ি সাসপেন্ড করেন ডেপুটি জেলাশাসক। রিপোর্ট গেছে উচ্চদফতরেও। জেলা শাসককেও বিষয়টি জানানো হয়েছে, গোটা ঘটনার তদন্তের পরেই ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।