‘চাকরির অপেক্ষা ছেড়ে কাজ খুঁজে নিন’, ভাইরাল মুখ্যমন্ত্রীর ‘পরামর্শ’

কলকাতা: ফের সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি বিতর্কিত মন্তব্য৷ মোবাইলে মোবাইলে ঘুরছে একটি পেপার কাটিং৷ সেখানে শিরোনাম রয়েছে, ‘চাকরির অপেক্ষা ছেড়ে কাজ খুঁজে নিন, পরামর্শ মুখ্যমন্ত্রীর’৷ মুখ্যমন্ত্রীর এহেন মন্তব্যের পেপার কাটিং বাজারে ছড়িয়ে চলছে ভোটের ময়দান গরম করার প্রক্রিয়া৷ বিভিন্ন গ্রুপে ওই ছবি পোস্ট করে বর্তমান শাসকদলে বিঁধতে শুরু করেছেন নেটিজেনদের একাংশ৷ কিন্তু,

‘চাকরির অপেক্ষা ছেড়ে কাজ খুঁজে নিন’, ভাইরাল মুখ্যমন্ত্রীর ‘পরামর্শ’

কলকাতা: ফের সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি বিতর্কিত মন্তব্য৷ মোবাইলে মোবাইলে ঘুরছে একটি পেপার কাটিং৷ সেখানে শিরোনাম রয়েছে, ‘চাকরির অপেক্ষা ছেড়ে কাজ খুঁজে নিন, পরামর্শ মুখ্যমন্ত্রীর’৷ মুখ্যমন্ত্রীর এহেন মন্তব্যের পেপার কাটিং বাজারে ছড়িয়ে চলছে ভোটের ময়দান গরম করার প্রক্রিয়া৷ বিভিন্ন গ্রুপে ওই ছবি পোস্ট করে বর্তমান শাসকদলে বিঁধতে শুরু করেছেন নেটিজেনদের একাংশ৷

কিন্তু, আদৌও কি মুখ্যমন্ত্রী এহেন মন্তব্য করেছেন৷ করলেও কবে? চলতি ভোটের বাজারে কি এই মন্তব্য করেছেন মমতা? না কি পুরানো পেপার কাটিং৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ছবিতে সংবাদপত্রের নাম ও কবে প্রকাশিত হয়ে, তা স্পষ্ট তথ্য না পাওয়া গলেও সন্ধান পেয়েছে আজ বিকেল ডট কম৷ জানা গিয়েছে, ‘চাকরির অপেক্ষা ছেড়ে কাজ খুঁজে নিন, পরামর্শ মুখ্যমন্ত্রীর’ প্রতিবেদনটি ১৫ এপ্রিল ২০১২ সালে আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত হয়৷ ১৫ এপ্রিল ২০১২ সালের পেপার কাটিং তুলে মমতা সরকারের বিরুদ্ধে চলছে প্রচার৷

‘চাকরির অপেক্ষা ছেড়ে কাজ খুঁজে নিন’, ভাইরাল মুখ্যমন্ত্রীর ‘পরামর্শ’কিন্তু, হঠাৎ কেন এই প্রচার? মমতার কর্মসংস্থান তথ্য বিশ্বাস করছে না বাংলার তরুণ প্রজন্ম? কিছু তথ্য দেখলেই তা খুবই সহজে জানা সম্ভব৷ জেলায় জেলায় প্রচারে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, তিনি এক কোটি কর্মসংস্থান দিয়েছেন৷ কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রকের অধীনস্থ ন্যাশনাল কেরিয়ার স্কিম পোর্টালে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আসা তথ্য বলছে, চাকরি পাওয়ার জন্য এই পোর্টালে নাম লিখিয়েছিলেন দেশের ১৩ কোটি ২১ লক্ষ ৫ হাজার ৫৪৯ জনথ৷ বাংলা থেকে ২ কোটি ২০ লক্ষ ৯ হাজার ৫৩৭ জন চাকরিপ্রার্থী নাম লিখিয়েছেন চাকরি পাওয়ার জন্য৷

কেন্দ্র-রাজ্যের নানা তথ্যে কর্মসংস্থান ইস্যুতে বাংলার তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ক্ষোভ দিনে দিনে বেড়েই চলছে৷ নিয়োগে একের পর দুর্নীতি মামলার জেরে সেই ক্ষোভের বিস্ফোরণ হতে শুরু করেছে৷ ফলে, এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বেফাঁস মন্তব্যকে হাতিয়ার করে ‘চপ’, ‘তেলাভাজা’কে শিল্পের পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া৷

‘চাকরির অপেক্ষা ছেড়ে কাজ খুঁজে নিন’, ভাইরাল মুখ্যমন্ত্রীর ‘পরামর্শ’এবার, ঠিক একই ভাবে ভোটের বাজার গরম করছে  ১৫ এপ্রিল ২০১২ সালের একটি পেপার কাটিং৷ সাংবাদিক সৈকত বসুর ভাইরাল হওয়া প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ‘চাকরি পাওয়ার আশায় না-থেকে রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতীদের নিজেদেরই ‘কাজ খুঁজে নেওয়ার’ পরামর্শ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। (২ বৈশাখ ১৪১৯ রবিবার ১৫ এপ্রিল ২০১২) শুক্রবার দুর্গাপুরে হস্তশিল্পের স্থায়ী মেলাকেন্দ্র ‘দুর্গাপুর হাট’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “শুধু সরকারি চাকরিই কাজ! চাকরি না-পেলে কী করবেন! চা বিক্রি করুন। বিড়ির দোকান করুন। খাতা তৈরি করুন। কত কাজ আছে, খুঁজে নিলেই হয়! সব কাজেরই মূল্য আছে। হতাশ হবেন না। অপপ্রচারে কান দেবেন না।” রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ হল কর্মসংস্থান। যা নিয়ে তাঁর উপরে প্রত্যাশার চাপও যথেষ্ট। কিন্তু তাঁর ঘোষিত জমি-নীতির কারণে (এ দিনও মমতা বলেছেন, তাঁর সরকার কোনও অবস্থাতেই জোর করে জমি নেবে না) পশ্চিমবঙ্গে বড় মাপের শিল্প প্রতিষ্ঠার আশু কোনও সম্ভাবনা নেই বলেই শিল্পমহলের অনেকের অভিমত। আর ভারী শিল্প না-হলে এক লপ্তে খুব বেশি মানুষের কর্মসংস্থানও সম্ভব নয়। শিল্প ও রাজনীতিবিদ মহলের একাংশের মতে, এই কারণেই মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বেকার ছেলে-মেয়েদের স্বনিযুক্তির উপরে জোর দিয়েছেন।’

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের ধারণা, কর্মসংস্থান ইস্যুতে মমতাকে বিপাকে ফেলতেই পুরানো ঘটনা টেনে এনে  সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হচ্ছে বিভ্রান্তি! বিভ্রান্তির পাশাপাশি একই ভাবে পুঞ্জিতভূত হচ্ছে বেকাত্বের ক্ষোভ৷ যন্ত্রণা৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × 4 =