কোচবিহার: হাজার চেষ্টাতেও মিলছিল না ছোটখাট কাজ৷ বেঙ্গালুরু পাড়ি দিয়েও হয়নি সুরাহা৷ চরম আর্থিক সঙ্কটের শিকার হয়ে শেষে আত্মঘাতী হলেন কোচবিহারের ভাগচাষি পরিবারের সন্তান দীনবন্ধু বর্মণ৷ আর্থিক স্বচ্ছলতা না থাকায় দেহ বাড়িতেও আনতে পারলো না পরিবার৷
রুজি রোজগারের সন্ধানে কোচবিহার থেকে বেঙ্গালুরুতে পাড়ি দেওয়া ১৭ বছর বয়সি এই তরুণের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয় শনিবার৷ বেঙ্গালুরুর কামাক্সি ফাইলা থানা থেকে যুবকের ঝুলন্ত অবস্থায় মৃতদেহ উদ্ধারের খবর আসে কোচবিহার সিতাই ব্লক এলাকায়৷ ভিনরাজ্যে কাজের খোঁজে গিয়ে যুবকের আত্মঘাতী ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে কোচবিহার সিতাই ব্লকের তামাগুড়ি এলাকায়৷
নিজের জেলায় কোনও রকম কাজ না পেয়ে প্রতিদিন প্রতিনিয়ত ভিন রাজ্যে পাড়ি দিচ্ছেন এই রাজ্যের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি কোচবিহার জেলার গ্রাম গঞ্জের অসহায় বেকার যুবকরা৷ এমনকি পরিবারের সদস্যদের মুখে দু’মুঠো অন্ন জোগাতে কাজের আশায় অন্য রাজ্যে পাড়ি দিয়েছেন এমন অনেক তরুণ যারা এখনো প্রাপ্তবয়স্কই হননি৷ এরকমই এক তালিকায় দীনবন্ধু বর্মণের নাম ছিল৷ প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরেই দীনবন্ধুর পারিবার চরম আর্থিক সঙ্কটের মুখোমুখি হয়ে পড়ে৷ এই পরিস্থিতিতে কার্যত বাধ্য হয়েই মাস চারেক আগে বেঙ্গালুরুতে কাজের খোঁজে যান তিনি৷ কিন্তু, তার বয়স ১৮ পার না হওয়ায় কোনও স্থায়ী কাজ মিলছিল না তাঁর৷ ফলে সেখানে ছোটখাট কাজ করে কোনও রকম ভাবে দিন চালাতে হচ্ছিল তাঁকে৷ সম্প্রতি এই ছোট কাজ থেকেও বঞ্চিত হয়ে পড়েছিলেন তিনি৷ তার ফলে চরম আর্থিক সঙ্কটের সম্মুখীন হয়ে পড়েন এই তরুণ৷ এরপর বাধ্য হয়েই ফোন করে বাড়িতে বাবার কাছে টাকা চেয়ে পাঠান তিনি৷ কিন্তু পেশায় ভাগচাষি ফুলেশ্বর বর্মণের হাতে টাকা না থাকায় ছেলেকে কিছুদিনের জন্য অপেক্ষা করতে বলেন তিনি৷ এরপরই শনিবার সন্ধ্যায় তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়৷ নিয়মিত কাজ না মেলায় চরম আর্থিক সঙ্কটের মুখোমুখি হয়েই দীনবন্ধু বর্মণ আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে৷