আজ বিকেল: মোদি মানেই সততা, হাজারটা ঘোটালা করেও এই ইমেজের বাহুল্যেই ফের ছক্কা হাঁকিয়ে লোকসভা ভোট পকেটে পুরে দ্বিতীয় বারের মন্ত্রীসভা গঠন করে ফেললেন চৌকিদার। ভোটের আগে দেশের বেকার সংখ্যা বৃদ্ধির হার প্রকাশ্যে আনে সংবাদ মাধ্যম বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড। সেই সময় এই রিপোর্ট মানতে নারাজ ছিল কেন্দ্র। কিন্তু ভোট মিটে ক্ষমতা ফিরে পেতেই পাশার দান উল্টে দিলেন মোদি, বিজেপি সরকার স্বীকার করে নিল গত ৪৫ বছরের মধ্যে সব থেকে বেশি বেকার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে পূর্বতন এনডিএ- সরকারের আমলেই।
১৯৭২-৭৩ সাল থেকে এ যাবৎ বেকারত্বের হার সব থেকে বেশি ছিল মোদি জমানায়, ২০১৭-১৮ সালে। জাতীয় স্যাম্পেল সার্ভে অর্গানাইজেশনের সমীক্ষার মতে, ওই বছরে বেকারত্বের হার ছিল ৬.১ শতাংশ। এ দিন ওই পরিসংখ্যান প্রকাশ করলেও সরকারের মুখ্য পরিসংখ্যানবিদ প্রবীণ শ্রীবাস্তব সতর্ক করে বলেন, বেকারত্বের এই হারকে পূর্বের কোনও বছরের পরিসংখ্যানের সঙ্গে তুলনা করা ঠিক হবে না। কারণ, বেকারত্বের হার নির্ণয় করার পদ্ধতি বদল করা হয়েছে। তাই সবটাকে নতুন প্রেক্ষিতে দেখা প্রয়োজন। পাশাপাশি অন্য একটি পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে, গত আর্থিক বছরের শেষ তিন মাসে বৃদ্ধির হার ছিল ৫.৮ শতাংশ। যা গত ১৭ মাসের মধ্যে সব থেকে কম। এই পরিসংখ্যান প্রকাশের পর এও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে বৃদ্ধির হারে চিনের কাছে পিছিয়ে পড়েছে ভারত। চিনের বৃদ্ধিই এখন সব থেকে দ্রুত হারে বাড়ছে।
Unemployment rate at 6.1% in financial year 2017-18 according to Labour Survey. pic.twitter.com/ZTr9RVhNny
— ANI (@ANI) May 31, 2019
কেন্দ্রে প্রথম বার সরকার গঠনের সময় নরেন্দ্র মোদি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বছরে দুকোটি বেকারের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে তাঁর সরকার। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতির সঙ্গে বাস্তব ছবির যে জমিন –আসমান ফারাক তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ ছিল না। উপরি পকোড়া ভাজাকেও যখন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির সঙ্গে তুলনা করেছিলেন মোদি, তখন সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। এই পরিস্থিতিতে জানুয়ারি মাসের তথ্য ফাঁস মোদি সরকার তথা বিজেপি-কে বেমক্কা চাপে ফেলে দেয়। তা ছাড়া বেকারত্ব বাড়ায় অসন্তুষ্ট ছিল খোদ সঙ্ঘ পরিবারও। এমনকী আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত একবার ক্ষোভের সঙ্গে বলেছিলেন, “জিনিসের দাম বাড়ছে, কাজের সুযোগ তৈরি হচ্ছে না। কিন্তু নীতি আমরা বানাইনা, আপনারাও প্রনয়ণ করেন না, তা করে সরকার।”
দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় ফিরে দোষত্রুটি এড়াতে তড়িঘড়ি বেকারত্বের হার শিকার করে পরোক্ষে কী পূর্বতন সরকারের কৃতিত্বের দায় ঘাড় থেকে নামাতে চাইলেন মোদি?