আড়াই লক্ষ টেট পরীক্ষার্থীর ভাগ্য ঝুলছে হাইকোর্টে, জট কাটবে আদালতে?

কলকাতা: ২০১৫ সালের ১৬ আগস্ট৷ রাজ্যব্যাপী টেট পরীক্ষা হয়েছিল৷ শিক্ষক নিয়োগের জন্য পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির বিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার আশায় কয়েক লক্ষ শিক্ষিত বেকার এই পরীক্ষায় বসে ছিলেন৷ সেখানে প্রশিক্ষিত পরীক্ষার্থী হিসেবে এক লক্ষ কুড়ি হাজার ও অপ্রশিক্ষিত হিসাবে এক লক্ষ ৮ হাজার চাকরিপ্রার্থী উত্তীর্ণ হন৷ সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল৷ কিন্তু, ছন্দ পতন ঘটল প্রশিক্ষত প্রার্থীদের

আড়াই লক্ষ টেট পরীক্ষার্থীর ভাগ্য ঝুলছে হাইকোর্টে, জট কাটবে আদালতে?

কলকাতা: ২০১৫ সালের ১৬ আগস্ট৷ রাজ্যব্যাপী টেট পরীক্ষা হয়েছিল৷ শিক্ষক নিয়োগের জন্য পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির বিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার আশায় কয়েক লক্ষ শিক্ষিত বেকার এই পরীক্ষায় বসে ছিলেন৷ সেখানে প্রশিক্ষিত পরীক্ষার্থী হিসেবে এক লক্ষ কুড়ি হাজার ও অপ্রশিক্ষিত হিসাবে এক লক্ষ ৮ হাজার চাকরিপ্রার্থী উত্তীর্ণ হন৷ সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল৷ কিন্তু, ছন্দ পতন ঘটল প্রশিক্ষত প্রার্থীদের না ডেকে অশিক্ষিত প্রার্থীদের স্কুল সার্ভিস কমিশন ডাকে যখন৷ এই নিয়ে দায়ের হওয়া মামলার অবশেষে ফয়সলা করতে চলেছে কলকতা হাইকোর্ট৷

প্রাথমিকে প্রথমে ভেরিফিকেশন, পরে ইন্টারভিউ তালিকা প্রকাশের পর থেকেই আইনি জটিলতা আসে৷ টেট পরীক্ষার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয় মামলা৷ প্রশিক্ষিত চাকরিপ্রার্থী যাদের ভেরিফিকেশনে ডাক পাননি, তাঁরা মামলা দায়ের করেন ২০১৬ সালে৷ কেন্দ্রীয় সরকারের এনসিটিআই নিয়ম অনুযায়ী এসএসসি নিয়োগ করছে না৷ ৮ ও ৯  নম্বর নম্বর ধারা অনুযায়ী নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করছে না৷ যেখানে শূন্যপদ প্রকাশ ও ভেরিফিকেশন করা কথা, সেখানে নিয়ম নামা হচ্ছে না৷ নিয়ম এড়িয়ে যাচ্ছে স্কুল সার্ভিস কমিশন কর্তৃপক্ষ৷ এই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির মৌসুমী ভট্টাচার্জের এজলাসে চলছে সওয়াল-জবাব৷ ইতিমধ্যেই মামলাকারী পরীক্ষার্থীদের মধ্যে অভিষেক মুখার্জি, বাপ্পা মণ্ডলের আইনজীবীরা তিন তিনটি হলফনামা জমা দিয়েছেন আদালতে৷ অবশ্য স্কুল সার্ভিস কমিশন কোনও জবাব পেশ করতে পারেনি বলে আদালত সূত্রে খবর৷

মামলাকারীদের দাবি ছিল, পরীক্ষার্থীদের টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করা হলে কেন শূন্যপদের সংখ্যা প্রকাশ করা হল না৷ যারা উত্তীর্ণ হয়েছে বিশেষত অশিক্ষিত প্রার্থীদের একাডেমিক রেজাল্ট ও টেট পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বর নম্বর কেন প্রকাশ করা হল না? কেনইবা প্রশিক্ষিত প্রার্থীদের ইন্টারভিউতে না দেখি অশিক্ষিতদের ডাকা হচ্ছে? কেননা কেন্দ্রীয় আইন অনুযায়ী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রশিক্ষিতরা অগ্রাধিকার পায়৷ তারপর অশিক্ষিতরা সুযোগ পান৷ এসএসসি নিয়োগ প্রক্রিয়া দেখা যায়, প্রায় ৫০০ অশিক্ষিত প্রার্থীদের ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশনে ডাকা হয়৷ ভেরিফিকেশন শেষ করার আগেই ইন্টারভিউ তালিকা প্রকাশ করে দেয় এসএসসি৷ যদিও ওই ৫০০ প্রশিক্ষিত প্রার্থীদের ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশনের নির্দেশ দেয় ৩ আগস্টের মধ্যে৷ আবার মামলা ওঠে ২০১৬ সালে ২৩ সেপ্টেম্বর৷

টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আবেদনে অশিক্ষিতদের ছবি, প্রাপ্ত নম্বর দেওয়ার কথা থাকলেও পরে সেই কলম তুলে দেয় কমিশন৷ গোটা প্রক্রিয়ার মধ্যে ব্যাপক আর্থিক কেলেঙ্কারির আভাস পাচ্ছেন বলে জানান ওয়াকিবহাল মহল৷ কেননা,  স্বচ্ছতার মাধ্যমে নিয়োগ হোক তা একপক্ষ বরাবরই চাইছেন না৷ মামলার লালফিতের ফাঁসে দীর্ঘমেয়াদি সময় কাটুক তা হয়তো চাইছেন একাংশ৷ যাতে দুর্নীতির অভিযোগ ওটা থেকে বাঁচা যায়৷

গত শুক্রবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যের এজলাসে মামলায় এসএসসি কর্তৃপক্ষকে আগামী ২৯ জুলাইয়ের মধ্যে নিয়োগ সংক্রান্ত বিবরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছে৷ মূলত, শূন্যপদ কত, প্রশিক্ষিত ও অশিক্ষিত চাকরি প্রার্থীদের মধ্যে একাডেমিক রেজাল্ট, প্রাপ্ত নম্বর জানাতে বলা হয়েছে৷ আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ৯ আগস্ট মামলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি৷ তাই আগামী ৯ আগস্ট টেট পরীক্ষার্থীর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের দিকে তাকিয়ে আছেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

8 − one =