কলকাতা: রাজ্য সরকারের স্কুল সার্ভিস কমিশনের অধীনস্থ বিদ্যালয়গুলির শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের বদলিকে ঘিরে দীর্ঘদিন ধরেই সংশ্লিষ্ট মহলে জারি রয়েছে অসন্তোষ। ২০১৪ সাল থেকে টানা ৬ বছর ধরে স্কুল সার্ভিস কমিশনের জেনারেল ট্রান্সফার বন্ধ রয়েছে। কিছুদিন আগেও সেই দাবিতে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয় শিক্ষক সংগঠনের তরফ থেকে। কিন্তু কমিশনের বিরুদ্ধে এই অসন্তোষের আবহেই এবার জেনারেল ট্রান্সফার চালু করল মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন।
সূত্রের খবর, মাদ্রাসা বোর্ডের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের জন্য অনলাইন জেনারেল ট্রান্সফারের নোটিফিকেশন প্রকাশ করেছে পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন। জানা গেছে , আজ থেকে কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে (www.wbmsc.com) এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে। এর ফলে দীর্ঘ ৭ বছর অপেক্ষার পর মাদ্রাসা শিক্ষাকর্মীরা নিজেদের পছন্দের এলাকায় বদলির সুযোগ পাবেন। শুক্রবার মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের বিজ্ঞপ্তির পর রাজ্যের শিক্ষক সংগঠনের তরফ থেকে আসে প্রতিক্রিয়া। মাদ্রাসার বদলির নোটিশ যে স্কুল সার্ভিস কমিশনের কাছে শিক্ষকদের দাবিকে আরও জোরদার করেছে, তাতে সন্দেহ নেই।
এদিন রাজ্যের শিক্ষক শিক্ষাকর্মী ও শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সম্পাদক কিংকর অধিকারী মাদ্রাসা স্কুলগুলির ক্ষেত্রে ‘জেনারেল ট্রান্সফার’ প্রক্রিয়া চালুর নোটিশকে স্বাগত জানিয়েছেন। কিন্তু পাশাপাশি অবিলম্বে অন্যান্য বিদ্যালয়গুলির ক্ষেত্রেও একই ভাবে আবেদনের ভিত্তিতে বদলি প্রক্রিয়া চালু করার দাবি জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, “অনলাইনে ‘জেনারেল ট্রান্সফার’ প্রক্রিয়া চালু হল না। রাজ্যের হাজার হাজার শিক্ষক, শিক্ষিকা, শিক্ষা কর্মীগণ কবে এই প্রক্রিয়া চালু হবে তার জন্য অধীর আগ্রহে প্রতীক্ষা করে রয়েছেন।”
ভোটের আগে বদলির নোটিশকে স্বাগত জানিয়েছেন মাদ্রাসা কর্মীরা। বদলির দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই অল পোস্ট গ্ৰ্যজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন এ ব্যাপারে লাগাতার আন্দোলন চালাচ্ছিল। তারই ফলশ্রুতিতে এই বিবৃতি বলে মনে করছেন তাঁরা৷ মূলত ২০১০ সালের নির্দেশিকা অনুসারে এই অনলাইন জেনারেল ট্রানস্ফার আয়োজন করা হচ্ছে। মাদ্রাসা কমিশনকে বদলির অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া যথাসম্ভব সরল রাখার আবেদন জানানো হবে বলে জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে মাদ্রাসার শিক্ষক রাজকুমার লাহা বললেন যে, “আমাদের সুদীর্ঘ অপেক্ষার অবসান হল। মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনকে বিশেষ ধন্যবাদ। সুদীর্ঘ সময়ব্যাপী বাড়ি থেকে দূরে চাকুরিরত সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীরা এর ফলে উপকৃত হবেন।” একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বদলির সুযোগ পেয়ে হাজার হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী উপকৃত হবেন বলেই মনে করা হচ্ছে।