কলকাতা: দিল্লিতে ধর্না কর্মসূচি সফল হতেই এবার প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলির চিঠি ধরার অভিযোগ উস্তি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের৷ এদিন সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, ‘দিল্লি চলো’ অভিযান সফল হওয়ার পরে রাজ্য সরকারের ঘুম উড়ি গিয়েছে৷ আর সেই কারণে শিক্ষকদের বদলি করার পথে হাঁটছে সরকার৷ এই পদক্ষের বিরুদ্ধে বড়সড় আন্দোলনের জন্য রাজ্য সরকারকে প্রস্তুতি থাকতেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে সংগঠনের তরফে৷
এবিষয়ে উস্তি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি সন্দীপ ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের দিল্লি চলো অভিযান সফল হওয়ার পরে রাজ্য সরকারের ঘুম চলে গিয়েছে৷ তারা গত দু দিন ধরে উস্তি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বকে অন্যায় ভাবে বদিলর চিঠি ধরাচ্ছে৷ এর প্রতিবাদ আমাদের সংগঠন আইনগত ভাবে ও রাস্তায় নেমে আন্দোলনে নামবে৷ আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই করব৷ রাজ্য সরকারকে আমরা PRT স্কেল নিয়ে মারাত্মক চাপে ফেলে দিয়েছি, এবার এই অবৈধ বদলি নিয়ে ও আমরা জিতবই৷’’
গত বুধবার পশ্চিমবঙ্গের বঞ্চিত প্রাথমিক শিক্ষকরা সমবেতভাবে দিল্লির যন্তর-মন্তরে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। কর্মসূচিতে প্রায় ৩০০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা অংশ নেন। কীভাবে পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক শিক্ষকরা বঞ্চিত হচ্ছেন, উদ্যোক্তা সংগঠনের রাজ্য নেতৃত্ব ও বিভিন্ন বক্তারা তা তুলে ধরেন।
উস্থি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক পৃথা বিশ্বাস বলেন, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এই বিক্ষোভ কর্মসূচীতে উপস্থিত হন পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, ত্রিপুরার সাংসদ জিতেন্দ্র চৌধুরী প্রমুখ। তাঁরা প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষিকাদের এই আন্দোলনকে সমর্থন করেন। রাজ্যসভার দুই সাংসদ মতি ঝর্ণা দাস, হুসেন ডালভী এ দিন সমাবেশে ভাষণ দেন৷
তাঁরা বলেন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর উচিত অবিলম্বে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দাবি মিটিয়ে দেওয়া। অন্যান্য রাজ্য পারলে প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন কাঠামো পরিবর্তন করতে পশ্চিমবঙ্গও পারবে। উদ্যোক্তারা জানান, ‘ন্যায্য দাবীর’ জন্য বক্তারা সর্বতোভাবে শিক্ষক শিক্ষিকাদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। বামপন্থী নেতা জি দেবরাজন পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে অবিলম্বে প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষিকাদের এই ন্যায্য দাবিকে পূরণ করার কথা বলেন। আন্দোলনকারীদের হয়ে বক্তব্য রাখেন নয়াদিল্লির ‘ডেমোক্রেটিক ল-ইয়ার এসোসিয়েশন’-এর এক প্রতিনিধি। তিনি বলেন আন্দোলনরত শিক্ষক শিক্ষিকাদের পশ্চিমবঙ্গ সরকার বঞ্চিত করতে পারে না। সম কাজে সম বেতন দেওয়া যে কোনও গণতান্ত্রিক রাজ্য সরকারের প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য। তিনি আন্দোলনকারীদের সব রকম আইনি সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন। উদ্যোক্তা প্রতিনিধিরা ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ টেকনিক্যাল এডুকেশন (এনসিটিই)-কে স্মারকলিপি দেন।