আরও বাড়ল দেশের বেকারত্ব! ফেব্রুয়ারিতে সর্বোচ্চ বেকারির হার

২০১৯ পর্যন্ত বিগত ছমাসে ভারতের অর্থনৈতিক মন্দার হার সবথেকে বেশি ছিল। সিএমআইই রিপোর্ট অনুসারে, গ্রামাঞ্চলে বেকারত্বের হার গতমাসের ৫.৯৭% থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭.৩৭%।  তুলনায় শহরতলিতে বেকারত্বের হার ৯.৭০% থেকে কমে ৮.৬৫% হয়েছে।

নয়াদিলিলি: দেশের শাসকগোষ্ঠীর 'সবকা সাথ সবকা বিকাশ'এর 'খুড়োড় কল' ধীরে ধীরে শক্তি হারিয়ে একবারে বিকল হওয়ার উপক্রম হয়েছে। অর্থনৈতিক দুর্দশার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দেশের বেকারত্ব। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে এই দুই ক্ষেত্রেই ঘুড়ে দাঁড়ানো, মোদি সরকারের দ্বিতীয় ইনিংসের সময়সীমায় আদৌ সম্ভবপর হবে কিনা সেটাই বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

বিগত চার মাসে বেকারত্বের হার ফেব্রুয়ারি মাসে সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছেছে। সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমির (সিএমআইই)  তথ্য প্রকাশ করে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ফেব্রুয়ারিতে ভারতের বেকারত্বের হার ৭.৭৮% এ পৌঁছেছে। গত চার মাসে এই সংখ্যাটি সর্বোচ্চ।  বেকারত্বের এই হার ২০১৯-এর অক্টোবর থেকে ২০২০-র জানুয়ারি পর্যন্ত ৭.১৭%কেও ছাপিয়ে গেছে যা অর্থনৈতিক মন্দার পরিস্থিতিকে আরও বেশি করে 'হাইলাইট' করছে। ২০১৯ পর্যন্ত বিগত ছমাসে ভারতের অর্থনৈতিক মন্দার হার সবথেকে বেশি ছিল। সিএমআইই রিপোর্ট অনুসারে, গ্রামাঞ্চলে বেকারত্বের হার গতমাসের ৫.৯৭% থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭.৩৭%।  তুলনায় শহরতলিতে বেকারত্বের হার ৯.৭০% থেকে কমে ৮.৬৫% হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সিএমআইই-র তথ্য বলছে ২০১৭ সালের মে-অগস্টের পর দেশে টানা সাত দফায় বেকারত্বের হার বেড়েছে। সেক্ষেত্রে নোটবন্দির পরে ২০১৭ সালে বেকারত্ব ছিল সাড়ে চার দশকে সর্বোচ্চ (৬.১%)। এরপরেই সামনে আসে প্রকৃত কারণ, দেখা যায় গ্রামে প্রকৃত (মূল্যবৃদ্ধি বাদে) আয় বাড়ছে না বলেই ২০১৯-২০ অর্থবছরে গত চার মাসে বেকারত্ব গ্রামের দিকেই বেকারত্বের হার বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থাৎ দেশের অর্থনৈতিক দুর্দশার চিত্র যে প্রকৃত অর্থে শক্তি তা প্রমাণ করে দিচ্ছে বর্ধিত বেকারত্বের হার কারণ আয় না থাকলে ব্যয় কমে। আর ব্যয় কমে গেলে দেশের অর্থনৈতিক স্বাস্থ্য দিন দিন সংকটজনক হয়ে উঠবে এটাই স্বাভাবিক। 

অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে এই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে চলেছে আগামী দিনে। কারণ করোনাভাইরাসের প্রভাবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের পরিবেশ যেভাবে নষ্ট হচ্ছে তাতে অন্যান্য দেশের মতো প্রভাব পড়বে এদেশের অর্থনীতিতেও। অর্থাৎ আভ্যন্তরীণ ও বাণিজ্যিক দুদিক থেকেই আয়ের ক্ষেত্রে ঘাটতি আগামী দিনে দেশের অর্থনৈতিক দুরবস্থা ঠিক কোন পর্যায়ে পৌঁছে দেবে সেটাই এখন চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twelve + twelve =