নিয়োগের দাবিতে অনশন করতে গিয়ে কলকাতা প্রেস ক্লাবের সামনের ২৮ মার্চ পুলিশের লাঠির বারি খেতে হয়েছিল মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের চাকরি প্রার্থীদের৷ এবার ভোটপর্ব মিটতেই ফের মাদ্রাসা শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে আজ ফের পথে নামলেন প্যানেলভুক্ত হবু শিক্ষকদের একাংশ৷ হাজরা মোড়ে জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা৷ বসে পড়েন রাস্তায়৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে গিয়ে ডেপুটেশন কর্মসূচিও রয়েছে মেধাবী মুসলিম পড়ুয়াদের৷
চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, ২০১৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়৷ প্রকাশিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মোট ৩১৮৩টি শূন্যপদে নিয়োগ হবে৷ কিন্তু, নানান আইনি জটিলতার কারণে নিয়োগ বন্ধ৷ নিয়োগ বন্ধ থাকায় সুপ্রিম কোর্ট ২০১৮ সালের ১৭ মে একটি রায় দেয়৷ ২৬০০-র বেশি শূন্যপদে অবিলম্বে নিয়োগ করতে রাজ্যকে নির্দেশ দেয় দেশের শীর্ষ আদালত৷ সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে ৩১৮৩টি শূন্যপদের কথা থাকলেও সুপ্রিম কোর্টে হলফনামায় সেই শূন্যপদের সংখ্যা দাঁড়ায় ২৫৭০৷ কমিশনের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ৩৭০৬ জন৷ ইন্টারভিউতেল অংশ নেননি প্রায় ৩০০ জন৷ ইন্টারভিউ দেওয়ার চাকরিপ্রার্থীদের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩২০০জন৷ অভিযোগ, পরে বিজ্ঞপ্তির ৩১৮৩টি শূন্যপদের বদলে ২৫৭০টি শূন্যপদে প্যানেল প্রকাশ হয়৷ নিয়োগ করা হয় ১৯৭০জন চাকরিপ্রার্থীকে৷ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ৩১৮৩ শূন্যপদ নিয়োগ হয় ১৯৭০ জন৷ অর্থাৎ রাতারাতি ১২১৩টি শূন্যপদ উধাও হয়ে যায় বলে অভিযোগ চারকিপ্রার্থীদের৷
পরে নিয়োগের জন্য কাউন্সেলিং শুরু হয় ২০১৮ সালের ২২ জুন৷ সেখানেও ওঠে অভিযোগ৷ কাউন্সেলিংয়ের সময় ১৫ জন পরীক্ষার্থীর রেকমেন্ডশন লেটার দিতে অস্বীকার করে কর্তৃপক্ষ৷ পরে ওই ১৫জন পরীক্ষার্থী মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে হাজির হন৷ অভিযোগ জানান তাঁরা৷ কিন্তু, তাতেও কোনও সুরাহা না হওয়ায় কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ তাঁরা৷ কলকাতা হাইকোর্টের এমএসসির তৎকালীন চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দেয়৷ অবিলম্বে পরীক্ষার্থীদের রেকমেন্ডশন লেটার দিয়ে নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়৷ সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ না মানায় আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হয় কমিশনের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফের বিরুদ্ধে৷ পরে ওই মামলা সিঙ্গল বেঞ্চ থেকে ডিভিসন বেঞ্চে যায়৷ সেই মামলারও এখনও ঝুলছে৷ মাদ্রাসা হবু শিক্ষকদের অভিযোগ, নিয়োগ ইচ্ছা করেই কমিয়েছে কমিশন৷ যাতে কমিশনকে এড়িয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের গোপন ব্যবস্থা করা যায়৷ আর এরই প্রতিবাদে আজ ফের মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে যাচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷