গ্রুপ-ডি কর্মী নিয়োগে সুখবর, নয়া আইন আনছে রাজ্য

কলকাতা: জুলাই মাসের অধিবেশনে বিধানসভার প্রশ্নোত্তর পর্বে ইঙ্গিত দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ জানিয়েছিলেন, ধাপে ধাপে রাজ্য সরকারি শূন্যপদ পূরণ করা হবে৷ আর সেই শূন্যপদ পূরণের জন্য স্টাফ সিলেকশন কমিশনকে নতুনভাবে ঢেলে সাজানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এবার সেই ঘোষণা অনুযায়ী রাজ্য বিধানসভায় গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগে নয়া বিল আনতে চলেছে রাজ্য সরকার৷ আগামী বৃহস্পতিবার বিধানসভায়

গ্রুপ-ডি কর্মী নিয়োগে সুখবর, নয়া আইন আনছে রাজ্য

কলকাতা: জুলাই মাসের অধিবেশনে বিধানসভার প্রশ্নোত্তর পর্বে ইঙ্গিত দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ জানিয়েছিলেন, ধাপে ধাপে রাজ্য সরকারি শূন্যপদ পূরণ করা হবে৷ আর সেই শূন্যপদ পূরণের জন্য স্টাফ সিলেকশন কমিশনকে নতুনভাবে ঢেলে সাজানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এবার সেই ঘোষণা অনুযায়ী রাজ্য বিধানসভায় গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগে নয়া বিল আনতে চলেছে রাজ্য সরকার৷ আগামী বৃহস্পতিবার বিধানসভায় এই বিল নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা৷

বিধানসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামিকাল বিধানসভায় স্টাফ সিলেকশন কমিশন ফেরানোর জন্য নয় বিল আনতে চলেছে রাজ্য সরকার৷ এর আগে গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগ বা পরীক্ষা নেওয়ার জন্য তেমন কোনও নিয়ম ছিল না৷ গ্রুপ-ডি কর্মী নিয়োগ করা হত এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে৷ পরবর্তী সময়ে গ্রুপ-ডি কর্মী নিয়োগের জন্য ২০১১ সালে তৈরি করা হয় ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টাফ সিলেকশন কমিশন৷ কিন্তু নতুন কমিশন গঠন হওয়ার পর ২০১৭ সালে তা তুলে দেয়া হয়৷

পরিকাঠামোগত ত্রুটি ও একাধিক দুর্নীতির অভিযোগেও উঠতে থাকে কমিশনের বিরুদ্ধে৷ ২০১১ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে স্টাফ সিলেকশন কমিশনের মাধ্যমে গ্রুপ ডি পদে নিয়োগ নিয়ে তুমুল বিতর্ক দানা বাঁধতে শুরু করে৷ পরে স্টাফ সিলেকশন কমিশনের তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার৷

গ্রুপ-ডি কর্মী নিয়োগে সুখবর, নয়া আইন আনছে রাজ্যএবার সেই পুরানো স্টাফ সিলেকশন কমিশন নতুন করে গঠন করতে চলেছে রাজ্য সরকার৷ গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে এই কমিশন নিয়োগ প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখবে জানা গিয়েছে৷ আগামী বৃহস্পতিবার বিধানসভায় এই বিল আনতে চলেছে রাজ্য সরকার৷ ফিরিয়ে আনার হচ্ছে পুরানো কমিশন৷ স্টাফ সিলেকশন কমিশন ফিরিয়ে আনতে নয়া বিলের কপি ইতিমধ্যেই বিধানসভায় বিলি করা হয়েছে বলে খবর৷

গত ১০ জুলাই বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, দ্রুত সাড়ে ৩৩ হাজার শূন্য পদে কর্মী নিয়োগ করা হবে৷ এই শূন্যপদ পূরণ করতে রাজ্য সরকারের বাড়তি ৫০০ কোটি টাকা খরচ হবে৷ স্টাফ সিলেকশনের মাধ্যমে এই নিয়োগগুলি করার কথাও জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷

ইতিমধ্যেই কর্মী নিয়োগের জন্য পাবলিক সার্ভিস কমিশনের নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ করেছে রাজ্য সরকার৷ নতুন চেয়ারম্যান পদে বসেছেন দেবাশিস বসু৷ দীর্ঘদিন ধরে এই পথ ফাঁকা ছিল৷ আর সেই কারণেই লাটে উঠেছিল নিয়োগ-প্রক্রিয়া৷ নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ হওয়ার পর পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার কথাও জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ মনে করা হচ্ছে, স্টাফ সিলেকশন কমিশন ফিরিয়ে এনে রাজ্যের কর্মী নিয়োগে গতি আনতে চলেছে রাজ্য৷

গ্রুপ-ডি কর্মী নিয়োগে সুখবর, নয়া আইন আনছে রাজ্য২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে এখন থেকেই নিয়ে কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করতে চলেছে নবান্ন৷ মনে করা হচ্ছে, বিধানসভা নির্বাচনের আগে কয়েক হাজার শূন্যপদে কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বড় চমক দিতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার৷ আর সেই মর্মে নতুন করে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে স্টপ সিলেকশন কমিশন৷

অন্যদিকে আজ, মেয়ো রোডে তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের সভামঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, ‘‘এখনও আমি জানি, ঘরে ঘরে চাকরির নিশ্চয়ই প্রয়োজন আছে৷ কিন্তু, আমরা চেষ্টা করেছি৷ সারা ভারতবর্ষে ৪৫ বছরে সব থেকে বেশি বেকারির সংখ্যা এখন৷ বাংলায় একমাত্র জায়গা, আমরা ৪০ শতাংশ বেকারত্ব কমিয়েছি এই আট বছরে৷ আগামী দিনে আরও করব৷ দেখবেন, লেদার হাব হচ্ছে বানতলায়৷ সেখানে ৫ লক্ষ ছেলে মেয়ের চাকরি হবে৷ একটু নজর রাখবেন, চাকরিটা হচ্ছে৷ দু’লক্ষ ছেলেমেয়েকে হাওড়ায় এমএসএমইতে চাররি হচ্ছে৷ এইরকম ভাবে রাজ্য সরকারের শূন্যপদও পূরণ করা হবে৷’’

সরকারি কর্মীদের মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, ‘‘বাংলায় একমাত্র জায়গা যেখানে পেনশন সরকারি কর্মচারীরা এখনও পান৷ সব রাজ্য বন্ধ করে দিয়েছে৷ সব রাজ্য সরকারি পেনশন বন্ধ করে দিয়েছে৷ ত্রিপুরায় বিজেপি সরকার এসে ওটা উঠিয়ে দিয়েছে৷ একমাত্র বাংলায় পেনশন আছে৷ আর কোথাও নেই৷ পেনশনটা তুলে দিলে আমার আমার অনেক টাকা ঋণ শোধ করতে কমে যাবে৷ কিন্তু তা সত্বেও মানবিকতার খাতিরে আমরা করিনি৷’’

বেকাকত্ব নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরই রাজ্যের চাকরি প্রার্থীদের মধ্যে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়েছে৷ কারণ মুখ্যমন্ত্রী যখন দাবি করেন, বাংলায় প্রচুর কর্মসংস্থান হয়েছে৷ বেকারত্ব ৪০ শতাংশ কমেছে, তখন মুখ্যমন্ত্রী কীভাবে বলছেন, বাংলার প্রতিটি ঘরেই চাকরির প্রয়োজন রয়েছে! তাহলে কোনটা সঠিক? ৪০ শতাংশ বেকারত্ব কমে যাওয়া? নাকি প্রতিটা ঘরে চাকরির প্রয়োজন আছে সেটা? তাহলে কি মুখ্যমন্ত্রী অবশেষে নেমে নিলেন, ঘরে ঘরে চাকরি প্রয়োজন? এমন প্রশ্ন তুলছেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

nine − 6 =