কলকাতা: আজ তৃণমূল সরকারের দ্বিতীয় দফার শেষ পূর্ণাঙ্গ আর্থিক বাজেট পেশ করলেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র৷ পুরসভোট ও ২০২১ সালের নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র৷ কর্মসংস্থান প্রসঙ্গেও দরজা সার্টিফিকেট দিয়েটেন অর্থমন্ত্রী৷ কিন্তু, বাংলার কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রীর বাজেট ভাষণকে চূড়ান্ত কটাক্ষ বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর৷ রাজ্যের এত কর্মসংস্থান হয়েছে, যাতে বাংলার বেকারদের কাজ এবার তাড়িয়ে বেড়াবে বলেও কটাক্ষ সুজনের৷ তুললেন শিক্ষক নিয়োগ প্রসঙ্গ৷
অর্থমন্ত্রীকে বিঁধে সুজনের মন্তব্য, ‘‘ভোটের দিকে তাকিয়ে কল্পতরু হওয়ার চেষ্টা করেছিল রাজ্য সরকার৷ কিন্তু কল্পতরু হওয়ার চেষ্টা করলেও তা হতে পারেনি৷ রাজ্য সরকার এই ৮-৯ বছরে যা বারোটা বাজানোর ছিল, তা করে দিয়েছে৷ তার স্পষ্ট ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে বাজেট বক্তৃতায়৷ এই বাজেট রাজ্যবাসীর সঙ্গে তঞ্চকতা করা হয়েছে৷
রাজ্যে ঋণনীতি প্রসঙ্গে সুজনের খোঁচা, রাজ্যের ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮০ হাজার কোটি টাকা৷ রাজ্য সরকার যে ঋণ নিচ্ছে তার সুদের পরিমাণ কত? তিনি কত টাকা শোধ করছেন? সে বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ রাজ্য সরকার৷ গত ৮ বছরে ঋণের বোঝা বেড়েছে ৪ লক্ষ ৭৪ হাজার কোটি টাকা৷ যা ২৫০ গুণ৷ নতুন করে দু’লক্ষ ৮২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে বাজেটে৷ কিন্তু বিপুল পরিমাণে ঋণ নিয়ে রাজ্য সরকার কি করবে? সরকারি কর্মচারীদের ডিএ দেবে? অস্থায়ী কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি করবে? অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী, পার্শ্বশিক্ষক, আশা কর্মী, চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক, আংশিক সময়ের শিক্ষকদেরকে বেতন বাড়ানো হবে? তা কিছুই জানানো হয়নি৷ ভোট আসছে বলেই কি বাড়তি টাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে?’’
কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে বাম নেতার আরও দাবি, কত কর্মসংস্থান তৈরি করেছেন রাজ্য? তা নিয়েও ভুল ব্যাখ্যা দেয়া হচ্ছে৷ গত বছর তিন-চারটে বাজেটের হিসাব দিতে দিতে রাজ্য সরকার যেটা বলেছিল, তার সঙ্গে একে অপরের মিল হচ্ছে না৷ আগে জানানো হয়েছিল, ১ কোটি ১০ লক্ষ কর্মসংস্থান দিয়ে দিয়েছে৷ এবার রাজ্য সরকার বলছে তারা গত এক বছরে ৯ লাখ ১১ হাজার কর্মসংস্থান দিয়েছে৷ রাজ্যে এত কর্মসংস্থান হয়েছে? এত তো লোকের থেকে কাজ বেশি হয়ে গিয়েছে রাজ্যে৷ এবার তো লোকের পেছনে কাজ তাড়া করে বেড়াবে৷ এটা যদি হত তাহলে খুশি হতাম৷ কিন্তু তা তো আজও হয়নি৷ রাজ্যে কাজ নেই৷’’
কর্মসংস্থা বাড়াতে রাজ্যের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ার বিষয়ে সুজনের মন্তব্য, ‘‘আপনি বলছেন ইউপিএসসির জন্য প্রশিক্ষণ দেবেন৷ কিন্তু, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের জন্য কি হবে? আপনি তো প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তুলবেন, কিন্তু এসএসসির পরীক্ষা হবে কবে? কোন কর্ম সংস্থান হচ্ছে না৷ এখনও বিকাশ ভবনের সামনে যুবক ছাত্র-শিক্ষকরা চোখের জল ফেলছেন৷ তাদের তাকিয়ে দেখার কেউ নেই৷ প্রাথমিকের টেট ২০১৫ সালে দরখাস্ত নেওয়া হয়েছে৷ আজ পর্যন্ত তার পরীক্ষার তারিখ বলতে পারিনি রাজ্য৷ চার বছর হয়ে গেল, আপার প্রাইমারি অবস্থায় ঝুলে রয়েছে৷ তাহলে এই সমস্ত লোক দেখানো কথা বলার কি দরকার?’’