বেতন কম, চলছে না সংসার, স্বেচ্ছামৃত্যুর আর্জি এবার শিক্ষাবন্ধুদের

কলকাতা: লাগামছাড়া বঞ্চনা৷ আর সেই বঞ্চনার জেরে এবার রাজ্যপালের কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানালেন পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা বন্ধু যৌথ মঞ্চের প্রতিনিধি দল৷ আজ বিকেলে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি জমা দেন শিক্ষাবন্ধু ঐক্য মঞ্চের প্রতিনিধি দল৷ একগুচ্ছ দাবি দেওয়া রাজ্যপালের কাছে তুলে ধরা হয়৷ একই সঙ্গে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদনও জানানো হয় শিক্ষাবন্ধুদের তরফে৷ সংগঠনের তরফে নন্দ দুলাল দাস

বেতন কম, চলছে না সংসার, স্বেচ্ছামৃত্যুর আর্জি এবার শিক্ষাবন্ধুদের

কলকাতা: লাগামছাড়া বঞ্চনা৷ আর সেই বঞ্চনার জেরে এবার রাজ্যপালের কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানালেন পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা বন্ধু যৌথ মঞ্চের প্রতিনিধি দল৷

আজ বিকেলে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি জমা দেন শিক্ষাবন্ধু ঐক্য মঞ্চের প্রতিনিধি দল৷ একগুচ্ছ দাবি দেওয়া রাজ্যপালের কাছে তুলে ধরা হয়৷ একই সঙ্গে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদনও জানানো হয় শিক্ষাবন্ধুদের তরফে৷
সংগঠনের তরফে নন্দ দুলাল দাস জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী সম কাজে সম বেতন এবং সর্বশিক্ষা মিশনের অন্যান্য কর্মচারীদের মত শিক্ষাগত যোগ্যতার নিরিখে বেতন কাঠামো নির্ধারণ করতে হবে৷ অবসরকালীন বয়স ৬৫ বছর করতে হবে৷ ন্যায্য প্রাপ্য এরিয়ার অবিলম্বে পরিশোধ করার দাবি ও রাজ্যপালের কাছে তুলে ধরা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে সংগঠনের তরফে৷

সংগঠনের অভিযোগ, ‘‘আমরা পশ্চিমবঙ্গ সর্বশিক্ষা মিশনের অধীন (বর্তমান নাম সমগ্র শিক্ষা অভিযান) নিম্নোক্ত স্বাক্ষরকারী বিআরসি কো-অর্ডিনেটর এবং সিআরসি কো-অর্ডিনেটরগনের (পশ্চিমবঙ্গে নাম শিক্ষাবন্ধু) পক্ষ থেকে সবিনয়ে জানাচ্ছি যে, পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত স্কুল ইনস্পেক্টর অফিস (সিএলআরসি অফিস) এবং সিআরসি অফিসে নিয়োজিত আছি৷ নিয়োগের সময়ে বিআরসি কো-অর্ডিনেটরদের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা চাওয়া হয়েছিল অনার্স সহ পোষ্ট গ্রাজুয়েট, সঙ্গে বিএড থাকলে অগ্রাধিকার৷ সিআরসি কো-অর্ডিনেটরদের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা চাওয়া হয়েছিল গ্রাজুয়েশন৷ পশ্চিমবঙ্গে সর্বশিক্ষা মিশনের অধীনে নিয়োজিত সমস্ত কর্মচারীদের ক্ষেত্রেই শিক্ষাগত যোগ্যতার নিরিখে বেতন কাঠামো নির্ধারিত হয়েছে৷ কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে ব্যতিক্রম শুধুমাত্র বিআরসি কো-অর্ডিনেটর এবং সিআরসি কো-অর্ডিনেটরদের ক্ষেত্রে৷ বিআরসি কো-অর্ডিনেটর এবং সিআরসি কো-অর্ডিনেটর একটি সর্বভারতীয় পদ৷ কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে এসে এই পদ রূপান্তরিত হয়েছে শিক্ষাবন্ধু নামে৷’’

আরও অভিযোগ, ‘‘আমাদের বেতনের ৭০ শতাংশ বহন করেন কেন্দ্রীয় সরকার৷ বাকি ৩০ শতাংশ বহন করার কথা রাজ্য সরকারের৷ কিন্তু অবাক হলেও সত্য, রাজ্য সরকার তাঁর নিজের অংশ তো দিচ্ছেই না৷ উল্টে কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া টাকা আত্মসাৎ করছে৷ আমরা জানতে চাই কেন্দ্রীয় সরকার আমাদের প্রতিটি কর্মচারীর জন্য কত টাকা বহন করছেন৷ বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ সরকার অন্য পদে আসীন সর্বশিক্ষা মিশনের একজন পোষ্ট গ্রাজুয়েট কর্মীকে বেতন দিচ্ছেন ত্রিশ হাজার টাকা৷ যদিও অন্য রাজ্যে সেটা ৬০ হাজার টাকা৷ কিন্তু একজন পোষ্ট গ্রাজুয়েট বিআরসি কো-অডিনেটর অর্থাৎ শিক্ষাবন্ধুকে বেতন দিচ্ছেন ৮৩৩৬ টাকা৷ এই সামান্য টাকায় বর্তমান বাজারে আমরা আমাদের সন্তানসন্ততি ও পিতা-মাতার মুখে অন্ন তুলে দিতে পারছি না৷ সে কারণে আমরা ইতিমধ্যে ৯৩ জন সরকারি কর্মচারী স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানিয়ে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীকে আবেদন জানিয়েছি৷ আমরা উভয় সরকারের কাছে রাজ্যপালের কাছেবঞ্চনার বিষয়টি উত্থাপন করলাম৷ অন্যথায় পুনরায় আমাদের স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন পত্রটি গ্রহণ করে স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমতি দিক রাজ্যপাল৷’’

তাঁদের আরও অভিযোগ, ‘‘বঞ্চনার এখানেই শেষ নয়, রাজ্য সরকার সর্বশিক্ষা মিশনের অন্যান্য কর্মচারীদের ক্ষেত্রে বর্ধিত বেতন এক বছর আগে থেকে লাগু করেছেন, কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে সেটা করা হয়নি৷ পৃথিবীর ইতিহাসে কোথাও এমন হয় কিনা আমাদের জানা নেই৷ সেই সঙ্গে আরেকটি বিষয় আপনার সামনে পরিষ্কারভাবে উত্থাপন করতে চাই যে, নিয়োগ কালীন সময়ে আমাদের বয়স চাওয়া হয়েছিল ৩৫ থেকে ৫০ বছর; তাই সেই দিকে তাকিয়ে আমাদের অবসরকালীন বয়স হওয়া উচিত ৬৫ বছর৷ সেই কারণে সুপ্রীমকোর্ট নির্দেশিত সম কাজে সম বেতন এবং অন্যান্য কর্মচারীদের মত শিক্ষাগত যোগ্যতার নিরিখে বেতন কাঠামো নির্ধারণ করার জন্য সবিনয় নিবেদন রাখছি৷’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *