কলকাতা: লোকসভা নির্বাচনে ভোটের হার বাড়লেও কমেছে আসন সংখ্যা৷ দলকে ঘুরে দাঁড়াতে নানান টোটকাও দিয়েছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ভিন রাজ্য থেকে প্রশান্ত কিশোরকে নিয়োগ করেছে তৃণমূল৷ দলের হারানোর জমি ফিরে পেতে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচন এখন পাখির চোখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের৷ আর সেই লক্ষ্যেই এবার পুজোর অনুদান দ্বিগুণের বেশি বাড়িয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ পুজো কমিটির অনুদান বাড়তেই এবার তুমুল ক্ষোভ জমতে শুরু করেছে রাজ্য সরকারি কর্মচারী মহলে৷
কেননা, দেখা নেই মহার্ঘ ভাতা৷ বাড়ছে না বেতন৷ এখনও ঝুলে বেতন কমিশনের ভবিষ্যৎ৷ বেতন কমিশনের মেয়াদ ইতিমধ্যেই সাত মাস বাড়ানো হয়েছে৷ আর তার জেরে দীর্ঘ হচ্ছে বেতন বঞ্চনার ক্ষোভ৷ বেতন কমিশন কার্যকর করার দাবিতে ইতিমধ্যেই বিধানসভার সবর হয়েছেন বিরোধীরা৷ দীর্ঘদিন ধরে বেতন অসন্তোষ প্রভাব পড়েছে ইভিএমে৷ ভোট গণনায় দেখা গিয়েছে, ব্যাটল পেপারে বিজেপির দখলে গিয়েছে অন্তত ৩৯টি আসন৷ নির্বাচন কমিশনের তথ্য শাসকের চাপ বাড়ালেও হারানো জমি ফিরে পেতে ফের দরাজ ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর৷ সরকারি কর্মীদের বেতন বৃদ্ধির পথে না হেটে পুজো কমিটিগুলির অনুদান বৃদ্ধির ঘোষণায় চূড়ান্ত অসন্তোষ ছড়িয়েছে রাজ্য সরকারি কর্মী মহলে৷
তাঁদের প্রশ্ন, রাজ্যের কোষাগারে অর্থের টান থাকলেও অনুদান যদি দ্বিগুণের বেশি বাড়ানো হয়, তাহলে কেন সরকারি কর্মীদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়া হচ্ছে না৷ কেননা, অন্য রাজ্যের তুলনায় বহু ক্ষেত্রে কম কম বেতন পান রাজ্য সরকারি কর্মীদের একাংশ৷ এবার নতুন করে অনুদান বৃদ্ধির ঘোষণায় নতুন করে ছড়িয়ে বিতর্ক৷
আজ পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসে ভিআইপি কার্ড তুলে দেয়ার পক্ষে সওয়াল করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়৷ নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম থেকে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, এবার থেকে আর ভিআইপি, টিআইপি কিছু হবে না৷ সবাইকে লাইনে দাঁড়িয়ে দেখতে হবে পুজো৷ একই সঙ্গে বেশি কিছু ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর৷ এদিন পুজো কমিটি মুখ্যমন্ত্রী বিদ্যুতে ২৫ শতাং ছাড় দেওয়ার ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ পুজোর অনুদাম বাড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আর্থিক অবস্থা খারাপ৷ তবুও আমরা গত বার ১০ হাজার টাকা করে দিয়েছিলাম৷ এবার অনেক অর্থকষ্টের মধ্যে থেকেও আমরা সেটা বাড়িয়ে ২৫ হাজার টাকা করলাম৷’’ মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরই হাততালিতে ফেটে পড়ে গোটা স্টেডিয়াম৷
এদিন মুখ্যমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দেন, পুজো নিয়ে রাজনীতি হোক, তিনি চান না৷ ফলে, রাজ্য সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করে সুষ্ঠু ভাবে পুজো করাও বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এদিন ভিআইপি গেট নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মন্ত্রীদের চিহ্নিত করে বলেন, এবার থেকে কিন্তু আর ভিআইপি গেট হবে না৷ ভিআইপি গেট করে কোনও দর্শনার্থীকে ঢোকানো হবে না৷ সবাইকে লাইন দিয়ে ঢুকাতে হবে৷ এই সমস্ত কিন্তু আর চলবে না৷ জানিয়ে দেন, পুজোর ভিড়ে লাল বাতি নিয়ে কেউ যদি করে ঘুরতে থাকে তাঁদেরও বারণ করা হবে৷ ঠাকুর দেখতে হলে দিনে যান না৷ ভিড়ের মধ্যে গাড়ি নিয়ে গিয়ে কী লাভ? লাইনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঠাকুর দেখুন৷ আমি নিজেও যখন বিমানবন্দরে যাই তখনই লাইনে দাঁড়ায়৷