জীবিত বাবাকে মৃত বলে চাকরি তরুণীর, নিয়োগ কেলেঙ্কারির পর্দাফাঁস

জীবিত বাবাকে মৃত বলে চাকরি তরুণীর, নিয়োগ কেলেঙ্কারির পর্দাফাঁস

কলকাতা: অন্য কেউ নয়, স্বয়ং নিজের কন্যা তাঁর জীবিত বাবাকে মৃত ঘোষণা করলেন৷ মৃত বলে ঘোষিত জনৈক ব্যক্তির নাম ধৃতিভানু দাস৷ একদা তিনি রাজ্য সরকারের ন্যাশানাল ভলিন্টিয়ার ফোর্সে কর্মরত ছিলেন৷ নিজেকে তাঁর মেয়ে বলে দাবি করে ২০১৭ সালে মধুমিতা পাল নামের জনৈকা তরুণী অবসর গ্রহণের আগে পিতার মৃত্যু হয়েছে দাবি করে কপপেনসেশান খাতে ওই দফতরে চাকরিতে নিযুক্ত হন৷ চাকরি পেতেই প্রকাশ্যে আসে গোটা ঘটনা৷

বাবার মৃত্যু হয়েছে বলে চাকরি বাগিয়ে বেশ চলছিল সব কিছুই৷ কিন্তু, পরে জানা যায়, মৃত ব্যক্তি হিসেবে দাবি করা ব্যক্তি দিব্য সুস্থ্য শরীরে বেঁচে রয়েছেন৷ জীবিত মৃতের টানাপোড়েন নাজেহাল অবস্থা সংশ্লিষ্ট বিভাগ৷ গোটা বিষয়টি নজরে আসতেই মৃত বলে ঘোষিত ব্যক্তির মতে, অসাধু ব্যক্তিদের নীতিহীন চক্রান্তের শিকার তিনি৷

২০১৭ সালে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অন্তর্গত খড়গপুর স্থানীয় থানার মাতকাতপুর অঞ্চল নিবাসী মধুমিতা পাল নামের জনৈক মহিলা ন্যাশানাল ভলিন্টিয়ার ফোর্সে যোগদান করেন৷ সেই সময় ব্যক্তিগত নথিপত্র যাচাই করার সময় দেখা যায়, তাঁর পিতার নাম মৃত ধৃতিভানু পাল৷ কিন্তু ওই মহিলার দেখানো নথিপত্র খুব একটা বিশ্বাসযোগ্য না হয়ে ওঠায় খড়গপুর ১ নং ব্লকের বড়কোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের সহায়ক কে ওই মহিলার বাসস্থান ও অভিভাবকত্ব যাচাই করে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়৷

তদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে জানা যায়, মধুমিতা পাল তাঁর বাসস্থানের প্রমাণপত্র হিসেবে কেবলমাত্র ব্যাঙ্কের প্রমানপত্র পেশ করেছেন৷ অন্য কোনও জরুরি নথি পেশ করতে অসমর্থ হয়েছেন তিনি৷ অভিভাকত্ব প্রমাণের ক্ষেত্রেও ব্যাঙ্কের পাশ বইয়ে লেখা পিতার নাম মৃত ধৃতিভানু পাল৷ মধুমিতা পাল ওই গ্রামের মানিকচন্দ্র দাস নামের ব্যক্তির বাড়িতে বসবাস করেন৷ তদন্তে উঠে আসে, এই মানিকচন্দ্র দাসের মেয়ের নাম মধুমিতা দাস৷ অন্তত এমনই নথভূক্ত রয়েছে খড়্গপুর বিধানসভা কেন্দ্রের ১০৮ নং পার্টে৷ আবার মধুমিতা পালের শিক্ষাগত যোগ্যতা স্বরূপ প্রদর্শিত মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ডে পিতার নাম ধৃতিমান পাল হিসেবে উল্লেখ রয়েছে৷ ঘটনা সঠিক খোঁজ খবর করতে গিয়ে জীবিত ধৃতিমান পালের সাক্ষাৎ মেলে৷ নিজের এলাকায় একজন অতি সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে যিনি পরিচিত৷ অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, মধুমিতা নামের কোনও মেয়ে তাঁর নেই৷ তাঁর মেয়ে আছে বটে কিন্তু তার নাম সোমা এবং বর্তমানে সে গৃহবধূ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

11 + fourteen =