কর্মরত অবস্থায় মৃতের পোষ্যকে চাকরি নয়, রাজ্যের সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ হাইকোর্টের

কর্মরত অবস্থায় মৃতের পোষ্যকে চাকরি নয়, রাজ্যের সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ হাইকোর্টের

কলকাতা: করোনা অতিমারীর মাঝে দুর্গাপুজোর আয়োজন থেকে শুরু করে লকডাউনের পর রেল চলাচল, কলকাতা হাইকোর্টের বারবার ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য৷  একাধিক বিষয়ে রাজ্যের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছে উচ্চ আদালত৷ আর সেই আবহে এবার আরও এক সরকারি সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট।

সরকারি চাকুরিজীবী কোনও কর্মচারীর মৃত্যু হলে তাঁর উত্তরাধিকার হিসাবে পরিবারের একজনকে অনুকম্পাজনিত চাকরি দেওয়া হয়৷ এই ব্যবস্থায় কিছু বদল আনার কথা ভেবেছিল রাজ্য সরকার। বলা হয়েছিল, অন্তত দু’বছর চাকরিজীবন বাকি থাকতে থাকতে মারা গেলে তবেই কোনও সরকারি কর্মীর উত্তরসূরিকে অনুকম্পাজনিত চাকরি দেওয়া যাবে। কিন্তু একটি মামলার শুনানির পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধতা করেছে কলকাতা হাইকোর্ট।

হাইকোর্টের বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, অনুকম্পাজনিত চাকরির বিষয়ে এ ধরণের কোনও নিয়ম চালু করতে হলে সরকারকে নির্দিষ্ট আইনবিধি তৈরি করতে হবে। আইন ছাড়া প্রচলিত নিয়মে এমন শর্ত আরোপ করা যাবে না। সূত্রের খবর, মৃত বাবার চাকরি লাভের আশায় দীর্ঘদিন ধরে সরকারি দফতরের দ্বারে দ্বারে ঘুরছিলেন এক ব্যক্তি। তাঁর মামলার পরিপ্রেক্ষিতেই উঠে এসেছে আদালতের এই পর্যবেক্ষণ।

জানা গেছে, চাকরিপ্রার্থী ওই ব্যক্তির নাম অমিত দাশ। তাঁর পিতা একজন সরকারি ব্যাঙ্ক কর্মী ছিলেন। ২০১৪ সালে তাঁর বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে সেই চাকরি পাওয়ার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি। কিন্তু কর্তৃপক্ষের কাছে বারংবার অনুরোধ সত্ত্বেও ২০২০ সালে তাঁর আবেদন খারিজ করা হয়। ব্যাঙ্কের তরফ থেকে জানানো হয়, মৃত ব্যক্তির পরিবারের আর্থিক অবস্থা সত্যিই সংকটময় কিনা তা তাঁদের বিবেচ্য নয়।

এদিন মামলার শুনানির সময় আবেদনকারীর পক্ষের আইনজীবী হাইকোর্টে জানান, যে বিজ্ঞপ্তির ধারা অনুযায়ী ব্যাঙ্ক তাঁর মক্কেলের আবেদন খারিজ করেছিল তা আদতে মৃতের আর্থিক পাওনাগণ্ডা সম্পর্কিত। সেখানে বলা আছে চাকরিজীবন শেষের দু’বছর আগে কর্মী অবসর নিলে অনুকম্পাজনিত চাকরি পাওয়া যাবে। কর্মীর মৃত্যু হলে কী হবে তার কোনো উল্লেখই নেই। বিবেচনার পর আদালত তাই রাজ্যকে স্পষ্ট আইন তৈরির নির্দেশ দিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty − fifteen =