কলকাতা: বেতন বৈষম্যের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছেন ৩০ জন পার্শ্ব শিক্ষক৷ টানা ১৮ ঘণ্টা ধরে চলছে অনশন বিক্ষোভ৷ পাঁচ দিন ধরে চলছে পার্শ্ব শিক্ষকদের ধর্না, অবস্থান বিক্ষোভ৷ শুক্রবার বিকেল পাঁচটা থেকে আমরণ অনশনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পার্শ্ব শিক্ষক ঐক্য মঞ্চ৷ কয়েক হাজার শিক্ষক সল্টলেকের রাজপথ আগলে পড়ে রয়েছেন নিজেদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে৷ চলছে রাজ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা৷ বেতন বৈষম্যের জেরে পার্শ্ব শিক্ষকদের লড়াই আন্দোলনের বিদ্রোহের আগুনে ঘৃতাহুতি শিক্ষামন্ত্রীর৷ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারির পর এবার কেন্দ্রের থেকে টাকা নিয়ে আসার বার্তা শিক্ষামন্ত্রীর৷ পার্শ্ব শিক্ষকদের পাশে দাঁড়িয়ে পাল্টা রাজ্যপাল৷
রাজ্যপাল জানিয়েছেন, ‘‘আজ শিক্ষকরা পুলিশের হাতে আক্রান্ত হচ্ছেন৷ তাঁদের রাস্তায় ফেলে মারা হচ্ছে৷ সবাই তাদের হেনস্তা করছে৷ তাঁরা আজ বাধ্য হয়ে রাস্তায় নামছেন৷ আমার আর্জি শিক্ষকদের আপনারা যথাযথ সম্মান দিন৷ তাঁদের যোগ্য সম্মান দিয়ে ক্লাস রুমে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দিন৷’’
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় তাঁর প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেম, ‘‘আমরা শিক্ষকদের সর্বোচ্চ সম্মান দিয়ে থাকি৷ আর রাজ্যপাল যদি মনে করে থাকেন, শিক্ষকদের অর্থ সমস্যা আছে, তাহলে কেন্দ্র থেকে নিয়ে আসুক না৷ আমরা দিয়ে দেব৷ আমাদের তো আর রিজার্ভ ব্যাংক নেই৷ আমাদের মানুষের ব্যাংক আছে৷ আমরা যতটুকু পাচ্ছি, ততটুকু দিচ্ছি৷ যতটুকু পারছি, কষ্ট করেও রাজ্যের উন্নয়নে লাগাচ্ছে৷’’
আগামী সপ্তাহে সভা ডেকেছে তৃণমূলপন্থী পার্শ্ব শিক্ষক সংগঠন৷ সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের৷ কিন্তু তার আগেই পার্শ্ব শিক্ষক ঐক্য মঞ্চের অনশন, ধর্না, বিক্ষোভ, রাজ্য সরকারকে বেশ অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে৷
পার্শ্ব শিক্ষকদের অভিযোগ তাদের বেতনের ৬০ শতাংশ কেন্দ্র আর ৪০ শতাংশ রাজ্য দিয়ে থাকেন৷ সেক্ষেত্রে, কেন্দ্রের দেওয়া উচ্চ প্রাথমিক এবং প্রাথমিক পার্শ্ব শিক্ষকদের যথাক্রমে ২০,০০০ এবং ১৫,০০০ টাকা কেন্দ্র দিয়ে থাকে৷ কিন্তু হিসেবে দেখা যাচ্ছে প্রতি মাসে প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকারা কয়েক হাজার টাকা কম বেতন পাচ্ছেন৷ তাহলে সেই টাকা কোথায় যায় সেই প্রশ্নের উত্তর রাজ্য সরকারকেই দিতে হবে৷ পাশাপাশি তাদের আরো অভিযোগ গ্রেড পে বাড়লেও এখনও অপরিবর্তিত পে-ব্যান্ড৷ রাজ্যের বিরুদ্ধে বৈষম্যের অভিযোগ তুলে অনশনে বসেছেন ৩০ জন পার্শ্ব শিক্ষক৷ পাঁচ দিনে পড়ল শিক্ষকদের ধর্না৷
এই বেতন কাঠামো নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করেছিলেন পার্শ্ব শিক্ষক সংগঠনগুলির নেতৃত্বরা৷৷ প্রসঙ্গত, হাইকোর্টের শর্ত মেনে ১১ নভেম্বর থেকে বিকাশভবন চত্বরে একটানা আটদিন অবস্থান আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন পার্শ শিক্ষকরা৷ শর্ত অনুসারে বিকাশ ভবন থেকে ১০০ মিটার দূরে ৩০০ জন এবং বাকি আন্দোলনকরীরা থাকবেন ৩০০ মিটারের বাইরে৷ পুলিশের তরফ থেকে ভিডিওগ্রাফির ব্যবস্থাও করা হয়৷