কলকাতা: দেশজুড়ে ক্রমবর্ধমান করোনার প্রাদুর্ভাবে ভয়ঙ্কর ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে বেকারত্বের হার। নতুন কর্মসংস্থান তো দূরস্ত, একে একে কর্মীছাঁটাইয়ের পথে হাঁটছে দেশের ছোট-বড় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলি। রাজ্যেও করোনা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। আর এরমধ্যেই একমাস হল বন্ধ রয়েছে যুবশ্রী প্রকল্পের ভাতা। নিয়মমাফিক গত ফেব্রুয়ারি মাসের ভাতা মার্চের প্রথমেই ঢোকার কথা থাকলেও তা হয়নি। ফলে এপর্যন্ত এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্ক থেকে কর্মসংস্থান হয়নি এমন বেকার যুবক-যুবতীরা এখন চরম সমস্যার সম্মুখীন। করোনা নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের গৃহীত লকডাউন সহ একাধিক উদ্যোগের প্রতি সমর্থন জানিয়ে, উদ্ভূত এই পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে কয়েকটি দাবি সম্বলিত আবেদন মুখ্যমন্ত্রীকে জানালো পশ্চিমবঙ্গ যুবশ্রী এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্ক কর্মপ্রার্থী সমিতি।
তাঁদের দাবিগুলি হল -১) অবিলম্বে এখনো পর্যন্ত যুবশ্রীদের সমস্ত বকেয়া ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করা হোক। ২) সমস্ত যুবশ্রীদের বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী উৎসাহ ভাতা ৫০০০ টাকা করা হোক। ৩) বর্তমানে যুবশ্রী দের দুরাবস্থার স্বার্থে ছ-মাস অন্তর অ্যানাক্সার থ্রি (প্রত্যেক যুবশ্রী'কে সেল্ফ ডিক্লেয়ারেশনের জন্য ছ-মাস অন্তর একটি ফর্ম পূরণ করতে হয়, নাহলে ভাতা বন্ধ হয়ে যাবে) নিয়মটি বাতিল করা হোক। ৪) বর্তমানে করোনা ভাইরাস মোকাবিলার জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যে ভলেন্টিয়ার নিয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে সেখানে যুবশ্রীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হোক। ৫) যুবশ্রীদের স্থায়ী কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি অবিলম্বে পূরণ করা হোক।
রাজ্যে লকডাউন জারি থাকায় সমিতির পক্ষ থেকে ইমেইল মারফত লিখিত আবেদন জানানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী সহ রাজ্যের শ্রমদপ্তর, স্বাস্থ্য দপ্তর, অর্থ দপ্তর, খাদ্য দপ্তর, সমস্ত প্রকার প্রশাসনিক ও সুরক্ষা দপ্তর ছাড়াও সমস্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং পুলিশ সুপারদের কাছেও।
২০১১ সালে তৃনমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যে বেকারত্ব হ্রাসের উদ্যোগ হিসেবে ২০১৩ সালে কলকাতায় নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে 'যুবশ্রী' প্রকল্পের উদ্বোধন হয়। সেখানে রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতীদের জন্য ১৫০০টাকা মাসিক ভাতা সহ স্থায়ী কর্মসংস্থানের কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গ যুবশ্রী এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্ক কর্মপ্রার্থী সমিতির সদস্যদের মতে প্রকল্প ঘোষণার পর সাত বছর অতিক্রান্ত, কিন্তু এখনো এই প্রকল্প থেকে প্রায় বেশিরভাগ প্রার্থীদেরই কর্মসংস্থান হয়নি।