কলকাতা: আবেদনপত্র গ্রহণ হয়েছিল ২০১৭ সালে, তারপর আদালতের দরজায় বেশ কয়েকবার ঘুরে পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ৪ মাস আগে৷ আর তার জেরেই শেষমেষ গত রবিবার সম্পন্ন হল রাজ্যের প্রাইমারি টেট পরীক্ষা৷ মোটের উপর নির্বিঘ্নে পরীক্ষা সম্পন্ন হলেও বেশ কিছু জেলায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠেছিল৷ যদিও এই অভিযোগে বিশেষ কান দেয়নি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ৷ কোভিড স্বাস্থ্যবিধি মেনে ২.৫ লক্ষ পরীক্ষার্থীর জন্য ১০০০ পরীক্ষা কেন্দ্রের ব্যবস্থা করা হয়৷ নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে রাজ্যে প্রথম এতবেশি কেন্দ্রে নেওয়া হল কোনও নিয়োগের পরীক্ষা৷ কিন্তু এদিন পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষার্থীর অনুপস্থিতির সংখ্যাটা ছিল চোখে পড়ার মতো৷
সূত্রের খবর, রবিবার প্রাথমিক টেট পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিলেন প্রায় ৩০% পরীক্ষার্থী। যদিও এই বিষয়ে পর্ষদের তরফে এখনও কিছু খোলসা করা হয়নি। এই প্রসঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘‘প্রতিটি জেলা থেকে রিপোর্ট না এলে এই সংখ্যা বলা সম্ভব না৷ তাছাড়া সব পরীক্ষাতেই কিছু পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকেন৷ এটা নতুন কোনও ঘটনা নয়৷’’
ইতিমধ্যে অনুপস্থিতির সংখ্যা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা৷ অনেকের মতে, গত রবিবার টেট পরীক্ষার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় টেট সহ বেশ কিছু চাকরির পরীক্ষা ছিল৷ যার জেরে একইদিনে একাধিক পরীক্ষা থাকায় এদিন অনুপস্থিত থেকেছেন অনেকেই। তবে পর্ষদের অনেকের মতামত, অনেকদিন এই নিয়োগ বন্ধ থাকায় অনেকেই অন্য পেশায় চলে গিয়েছেন৷ এই বিষয়ে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল রাজ্য সরকারের নিয়োগে অস্বচ্ছতাকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘রাজ্যের যুব সমাজ টেটের উপর আস্থা রাখতে পারছে না৷ তাই, এত অনুপস্থিতি৷” অবশ্য এই প্রসঙ্গে তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষা সমিতির সভাপতি অশোক রুদ্র সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘‘বিরোধীরা টেট পরীক্ষাকে আটকে দিয়ে চেয়েছিল এবং তা পারেনি বলেই এইসব অভিযোগ তুলছে৷’’ এই প্রসঙ্গে অশোকবাবু আরও বলেন, ‘‘আমি গড়িয়াহাটের এক কেন্দ্রে গিয়ে দেখেছি৷ সেখানে ২৭৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পরীক্ষা দিয়েছেন ২৭১ জন৷ কোথায় অনুপস্থিতি?’’ এই বিষয়ে যদিও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় কোনও মন্তব্য করেননি৷
যদিও এই পরীক্ষা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধী শিবির৷ বর্ধমানের কালনায় বিজেপির জনসভা থেকে টেট নিয়োগে বিস্ফোরক অভিযোগ তোলেন শুভেন্দু অধিকারী৷ গতকাল টেটের পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগেই প্রশ্নপত্র সবার মোবাইলে ঘোরাফেরা করছিল, বলে অভিযোগ তোলেন তিনি৷ এরপরই জনতার উদ্দেশ্যে প্রাক্তন এই তৃণমূল বিধায়ক জানতে চান, ‘এ রাজ্যে শেষ কবে এসএসসি হয়েছিল?’’ -ফাইল ছবি৷