উৎসশ্রী সমস্যার সমাধান চাই! রিভিউ মিটিং-এ সমাধানের আশায় আবেদনকারীরা শিক্ষকরা

উৎসশ্রী সমস্যার সমাধান চাই! রিভিউ মিটিং-এ সমাধানের আশায় আবেদনকারীরা শিক্ষকরা

 কলকাতা:  শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বদলির জন্য উৎসশ্রী প্রকল্প শুরু হয়েছে তিন মাস আগে৷ কিন্তু এখনও বহু শিক্ষক বদলি পাননি৷ এদিকে ১৫ নভেম্বর থেকে খুলছে স্কুল৷  স্কুল খোলার আগে এই সমস্যা সমাধানের জন্য বিভিন্ন শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে বারবার শিক্ষা দফতরে আবেদন জানানো হচ্ছে। অক্টোবর মাসের শেষেই এবিষয়ে রিভিউ মিটিং হওয়ার কথা। সেদিকেই তাকিয়ে রাজ্যের ট্রান্সফার নিতে ইচ্ছুক কয়েক হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা। 

পূজার আগে বদলি পেয়ে গিয়েছেন ৮ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিরা৷ কিন্তু এখনও প্রায় ৩০ হাজার আবেদনকারী উৎসশ্রীর বিভিন্ন নিয়মের বেড়াজালে আটকে৷ স্কুল খোলার আগেই এই সকল সমস্যা সমাধানের জন্য শিক্ষক সংগঠন ‘অল পোস্ট গ্ৰ্যজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর পক্ষ থেকে শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ চন্দ্র অধিকারী, শিক্ষা সচিব ও স্কুল শিক্ষা কমিশনারকে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়েছে। পূজার পরেই যেসকল সমস্যাসমূহ সমাধানের জন্য শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা তাকিয়ে আছে সেগুলো হল-

১. সিঙ্গল টিচারদের আবেদন প্রক্রিয়া ও বিকল্প টিচারের সাময়িক ব্যবস্থা গ্রহণ কতটা বাস্তবসম্মত তা বিবেচনা করে উৎসশ্রীতে অবিলম্বে তাঁদেরকে বিনাশর্তে আবেদন করার সুযোগ দিতে হবে। ” Local Arrangement” অর্থাৎ, সংশ্লিষ্ট আবেদনকারী শিক্ষককে পাশের স্কুল থেকে টিচার খুজেঁ আনা সহ নানাবিধ নির্দেশ বিভিন্ন ডিআই অফিস থেকে দেওয়া হচ্ছে, যা পরিস্থিতি অনুসারে অসম্ভব ও অযৌক্তিক। এছাড়াও, একই স্কুলের এক সাবজেক্টের একাধিক শিক্ষক ( বিভিন্ন সেকশনে) থাকলেই সেই সাবজেক্টের টিচারের আবেদন ফরোয়ার্ড করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।  বিকল্প টিচারের ব্যবস্থা না করতে পারলেও সিঙ্গল টিচাররা যাতে আবেদন করতে পারে তার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। 

২. মুখ্যমন্ত্রীর ডিস্ট্রিক্ট ট্রান্সফারের ঘোষণাকে বাস্তবায়িত করতে হবে৷ ভিন্ন জেলা ও দূরবর্তী স্থানে চাকুরিরত সকল শিক্ষক, শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদেরকে কোন শর্ত ছাড়াই প্রায়োরিটি ট্রান্সফারের  সুযোগ দিতে হবে৷ বহু শিক্ষক শিক্ষিকা ১০-১৫ বছর ও ২০০- ৬০০ কিমি দূরে চাকরি করলেও বিভিন্ন নিয়মে ট্রান্সফারের আবেদন করতে পারছেন না। 

৩. রাজ্যের জুনিয়র হাই স্কুলগুলির টিচারদের থেকে কমপক্ষে একজনকে আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হোক। এছাড়াও, জুনিয়র হাই স্কুলের ইচ্ছুক অনার্স/পিজি পোস্টের টিচারদের  হাই স্কুল অথবা জুনিয়র হাই স্কুলে ট্রান্সফারের আবেদন করতে দিতে হবে। 

 ৪. SLST ২০১৬ এর মাধ্যমে নিয়োগ প্রাপ্ত বহু সংখ্যক শিক্ষক,শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মী দূরবর্তী স্থানে কর্মরত,তাই তারা ২ বছর  PROVISIONAL  SERVICE PERIOD  অতিক্রম করলেই যাতে আবেদন করতে পারে তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। 

৫. মিউচুয়াল ট্রান্সফারে স্কুল ও প্রশাসনিক সমস্যা না থাকায় উৎসশ্রীতে ৫ বছরের  ” LOCKING PERIOD” এর বিধিনিষেধ বাতিল করে একবছর চাকরির মেয়াদ সম্পন্ন হলেই ট্রান্সফারের আবেদন করতে দিতে একাধিকবার মিউচুয়াল চালুর গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।

৬. মিউচুয়াল ও জেনারেল ট্রান্সফারে অনার্স-পিজি পোস্টের টিচারদের মূল ট্রান্সফার সমস্যা  “সেকশন সমস্যা” সমাধান করে  “উৎসশ্রী”তে তাদের ট্রান্সফারের সুযোগ বৃদ্ধি করা হোক। 

৭. উৎসশ্রী পার্টালে COMPUTER SCIENCE ও COMPUTER APPLICATION সাবজেক্ট দুটির ভেকেন্সি সারা রাজ্যে খুবই কম হওয়ায় পোস্টগুলিকে এক করে ট্রান্সফারের সুযোগ বৃদ্ধি করা হোক৷  

৮. পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশনের সুপারিশক্রমে পশ্চিমবঙ্গ স্কুল শিক্ষা দফতরের অনুমোদনের ভিত্তিতে পশ্চিমবঙ্গে রামকৃষ্ণ মিশন পরিচালিত ষোলোটি বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকারা উৎসশ্রী ট্রান্সফার পোর্টালে আবেদন করতে পারছেন না৷ এবিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। 

৯. মেডিক্যাল,  প্রতিবন্ধী  সহ প্রায়োরিটি গ্রাউন্ডে আবেদনের জন্য ৫ বছরের বিধিনিষেধ না থাকলেও উৎসশ্রী গেজেট নোটিফিকেশনে সুস্পষ্ট ভাবে বলা না থাকায় আবেদনগুলো ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অবিলম্বে এবিষয়ে একটি নোটিফিকেশন প্রকাশ করতে হবে।

১০. ছাত্র শূন্য জুনিয়র হাইস্কুল, হাইস্কুল( নর্মাল সেকশন) ও উচ্চ মাধ্যমিক বিভাগের বিভিন্ন বিষয়ের টিচারদের অবিলম্বে ট্রান্সফারের সুযোগ দিতে হবে৷  

১১.উৎসশ্রী একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া হওয়ায় প্রতি স্কুল থেকে পরবর্তী ১০% অথবা ১৫% আবেদন ফরোয়ার্ড করার জন্য স্কুল ও ডিআইদেরকে নির্দেশ দেওয়া হোক।

 
১২. উৎসশ্রীতে NOC দেওয়ার ক্ষেত্রে “Seniority in Age” নিয়মের পরিবর্তে ” Seniority in Service ” নিয়মটি কার্যকরী করা আবশ্যিক। 

১৩. ২০১৫ সালের জেনারেল ট্রান্সফারের নোটিফিকেশন অনুসারে, উৎসশ্রীতে Spouse এর মধ্যে দূরত্ব  ৫০ কিমির বেশি হলে তাঁদের আবেদনগুলি Preferred Category তে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen − 13 =