কলকাতা: সাত বছর অতিক্রান্ত৷ ঢাকঢোল পিটিয়ে উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ঘোষণা করা হলেও এখনও থমকে নিয়োগ৷ লাগামছাড়া অনিয়মের অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টের ঝুলে রয়েছে উচ্চ প্রাথমিক নিয়োগ মামলা৷ মামলার জটে স্থগিত হয়ে গিয়েছে উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ প্রক্রিয়া৷ একদিকে, নিয়োগে অনিয়ম, অন্যদিকে মামলার জট, তারউপর রয়েছে করোনা মহামারী৷ ত্রিমুখী চাপের মুখে চূড়ান্ত সমস্যায় পড়েছেন বাংলার চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷ করোনা আবহে কবে নিয়োগ হবে? আদৌ নিয়োগ হবে তো? চূড়ান্ত অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন গুনছেন বাংলার কয়েক হাজার চাকরিপ্রার্থী৷ এবার শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আনতে অভিনব প্রতিবাদে সামিল হলেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷
অবিলম্বে উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ শুরু করা হোক৷ এই দাবি জানিয়ে লকডাউন পর্বে বাড়ি থেকে একাধিক প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন চাকরিপ্রার্থীরা৷ ঘরে বসে জানিয়েছেন প্রতিবাদ৷ কখনও পোস্টার হাতে নেটপাড়ায় বিদ্রোহ, কখনও আবার গাছ লাগিয়ে প্রতিবাদ৷ এবার আনলক উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগের জটিলতা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হলেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় টুইটার পেজে উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ বঞ্চনার অভিযোগ জানিয়ে নিজেদের দাবি-দাওয়া তুলে ধরার চেষ্টা করলেন চাকরিপ্রার্থীরা৷ টুইটারে #Upper_primary ট্যাগ ব্যাবহার করে মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের টুইটারে দাবি-দাওয়া তুলে ধরার চেষ্টা করেন হাজার দুয়েক চাকরিপ্রার্থী৷
সূত্রের খবর, উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগ জট কাটাতে উদ্যোগী হয়েছে শিক্ষা দফতর৷ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় মামলাকারী ও মেধাতাকা থাকা চাকরিপ্রার্থীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন৷ মামলা দ্রুত কীভাবে নিষ্পত্তি করা যায় সে বিষয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনের থেকেও মতামত তলব করা হয়েছে বলে খবর৷ সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলায় রাজ্যের তরফে সদর্থক ভূমিকা পালন করা হতে পারে বলে সূত্রের খবর৷ যাতে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করা যায়৷ দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির সঙ্গে সঙ্গে পুজোর আগে কীভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা যায়, তা নিয়ে শুরু হয়েছে চিন্তা ভাবনা৷ তবে সরকারের তরফে নিয়োগ প্রক্রিয়া দ্রুত সমাধানের পদক্ষেপ নেওয়া হলেও এখনও উদ্বেগ কাটছে না চাকরিপ্রার্থী মহলে৷
চাকরিপ্রার্থীর একাংশের অভিযোগ, শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত বেনিয়ম হয়েছে৷ তা রুখতে আদতে কী ব্যবস্থা নেবে রাজ্য? অনিময়ের পর কীভাবে আদালতে দাঁড়িয়ে কী যুক্তি দেবে সরকার? শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি হয়ে, তা কি স্বীকার করে দেওয়া হবে? যদি তা হয়, তাহলে কি নতুন করে প্রকাশিত হবে মেধাতালিকা? তাতে জটিলতা আরও বেড়ে যাবে না তো? আদালতের রায় রাজ্যের পক্ষে না গেলে পরবর্তী কী পদক্ষেপ নেবে রাজ্য? মামলা সুপ্রিম কোর্টে গেলে চাকরিপ্রার্থীদের জীবনের মূল্যবান সময় নষ্টের দায় নেবে তো সরকার?