কলকাতা: শিক্ষকরা যাতে বেশি করে পরিবারের খেয়াল রাখতে পারেন, মন-মেজাজ ঠিক থাক, তা নিশ্চিত করতে তাঁদের নিজের জেলায়, বাড়ির কাছে বদলির করা হবে বলে ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সেটা ছিল সরস্বতী পুজোর আগের দিন৷ শিক্ষকদের সম্মান প্রদর্শন করতে গিয়েছে বদলির সুখবর শুনিয়েছিলেন তিনি৷ কিন্তু এই ঘোষণার পর কেটে গিয়েছে অন্তত ৭ মাস৷ কিন্তু, কোথায় কী? লেই বদলি প্রক্রিয়া শুরু করতে পারেনি বিকাশ ভবন৷ করোনা আবহে অনলাইনে বিশেষ বদলির প্রক্রিয়া শুরু হলেও কাউন্সেলিংয়ে পর থমকে গিয়েছে আপস-বদলি৷ সাধারণ বদলির কোনও খবরও পাচ্ছেন না শিক্ষকা৷ প্রাথমিকে বদলির আবেদন নেওয়ার পরও তা কার্যকর হয়নি৷ আর তাতেই শাসকদলের শিক্ষক নেতাদের উপর বাড়ছে চাপ৷ বাড়ছে ক্ষোভ৷
গতবছর সরস্বতী পুজোর আগের দিন মুখ্যমন্ত্রীর তরফে বদলির সুখবর শোনার পর শিক্ষক মহলে আলোড়ন পড়ে গিয়েছিল৷ কিন্তু, ৭ মাস পরও তা কার্যকর না হওয়ায় উল্টে শাসক দলের শিক্ষক নেতাদের উপর বাড়ছে চাপ৷ উড়ে আসছে নানান কটাক্ষ৷ ভোটের আগে এই কাজটা শেষ না হলে শাসকদলের চিন্তা বাড়াতে পারে পোস্টাল ব্যালটের ভোটের বাক্স৷ লোকসভা নির্বাচনে পোস্টাল ব্যালটও শাসক দলকে হতাশ করেছিল৷ বিধানসভা নির্বাচনে সেই ধারা অব্যাহত থাকলে পাশা বদলের আশঙ্কা উড়িয়ে দিতে পারছেন না শিক্ষক নেতাদের একাংশ৷ বদলি প্রক্রিয়া শুরু না হওয়ায় আধিকারিকদের একাংশের ঢিলেমিতে এই কাজের দিকেও আঙুল তুলতে শুরু করেছেন শাসক দলের শিক্ষক নেতাদের একাংশ৷
তবে, এই কাজ নিয়ে আধিকারিকদের একাংশের ঢিলেমি নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও গোটা ব্যবস্থার মধ্যে বেশ কিছু গলদ রয়েছে বলে মনে করছেন শিক্ষকদের একাংশ৷ ছাত্র শিক্ষকের অনুপাত কোথায় কম, কোথায় আবও অনেক বেশি৷ সেই সমস্যা মেটাতে রেশনালাইজ বা প্রয়োজনের ভিত্তিতে স্কুলগুলিতে বদলির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু তা কার্যকর করা যায়নি৷ ফলে, গোড়ায় গলদ থেকেই গিয়েছে৷ আর তাতেই বাববার থমকে গিয়েছে বদলি প্রক্রিয়া৷
গত ২৮ জানুয়ারি দুপুর ১২টা ৫৫ নাগাদ টুইটারে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘‘আমরা আমাদের শিক্ষক ও আমাদের ছাত্রদের জন্য গর্বিত৷ শিক্ষকরা হলেন প্রধান অভিভাবক৷ আমাদের আগামীকালকে সত্যিকারের নেতা হওয়ার জন্য আমাদের ছাত্রদের লালন-পালনের মাধ্যমে সমাজ এবং জাতি গঠনে তাঁদের বিশাল অবদান রয়েছে৷’’ দ্বিতীয় টুইটে শিক্ষক বদলির প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘‘সরস্বতী পুজার প্রাক্কালে, আমাদের সকল শিক্ষদের প্রতি কৃতজ্ঞতা৷ আমরা শিক্ষকদের নিজের জেলায় পোস্ট করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷’’ মুখ্যমন্ত্রী তাঁর তৃতীয় টুইটে লেখেন, ‘‘এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তটি তাঁদের নিজের পরিবারের প্রতি যত্নবান হতে পারবেন৷ সমাজ গঠনের কাজে অবদান রাখার জন্য বেশি সময় দিতে পারবেন৷ শান্ত ও মনোযোগ নিয়ে কাজ করতে সহায়তা করবে এই সিদ্ধান্ত৷ সকলকে আমার শুভেচ্ছা!’’