শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারির পর্দা ফাঁস, তদন্তে খুলছে জট

শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারির পর্দা ফাঁস, তদন্তে খুলছে জট

লখনউ: উত্তরপ্রদেশে সহকারি শিক্ষক পদে ৬৯ হাজার শিক্ষক নিয়েগকে কেন্দ্র করে ক্রমেই জটিল হচ্ছে পরিস্থিত৷ তদন্তের জট খুলতেই উঠে আসতে শুরু করেছে একের পর এক দুর্নীতির খবর৷ 

এই ঘটনার তদন্ত শুরু করে প্রয়াগরাজ পুলিশ৷ জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশ শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ১৫০-এর মধ্যে ১৪৬ নম্বর পেয়েছিলেন প্রথম স্থানাধিকারী ধর্মেন্দ্র প্যাটেল৷ অথচ রাষ্ট্রপতির নামটাও জানেন না তিনি৷ শত চেষ্টা করেও নাম মনে করতে পারলেন না৷ পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করার পর পঞ্চম শ্রেণির সাধারণজ্ঞানের কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছিল৷ কিন্তু সেই উত্তর দিতে পারেননি ধর্মেন্দ্র৷ এই দুর্নীতি মামলায় ধর্মেন্দ্র প্যাটেল ছাড়াও গ্রেফতার করা হয়েছে বিনোদ নামে আরও এক সফল প্রার্থীকে৷ পরীক্ষায় পাশ করা ৫০ জনেরও বেশি প্রার্থীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ৷ অভিযোগ, ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকা নিয়ে প্রার্থীদের এই পরীক্ষায় পাশ করানো হয়েছে৷ প্রশ্ন পত্র ফাঁস করানোর পিছনে উঠে এসেছে এক বর্ষীয়ান বিজেপি নেতার নাম৷ 
জানা গিয়েছে, এর আগে আরও একটি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করার অভিযোগে জেল খেটেছেন ওই নেতা৷ এবারও প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় অভিযোগের তির তাঁর দিকেই৷  

রাজ্যে ৬৯ হাজার শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তা ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে৷ এই দুর্নীতিকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ গত সপ্তাহে এই মামলার তদন্ত শুরু হয়৷ প্রয়াগরাজ পুলিশের সুপারশি, এই ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব কোনও বড় তদন্তকারী সংস্থার হাতে তুলে দিক সরকার৷ কারণ এটা সমগ্র এই দুর্নীতির শিকড় ছড়িয়ে রয়েছে সারা উত্তরপ্রদেশজুড়ে৷   

একদিকে, কাউন্সেলিংয়ের দিন নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ জারি আদালত৷ কিন্তু যোগী সরকার চাইছে, শীঘ্র নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে৷ এই ইস্যুতে বিরোধীরাও ক্রমাগত আক্রমণ শানাতে শুরু করেছে৷ ফলে এই মামলায় লেগেছে রাজনৈতিক রঙ-ও৷  

অভিযোগ, রাজ্যের সহাকারি শিক্ষক পদে ৬৯ হাজার প্রার্থীর মধ্যে কয়েক হাজার প্রার্থী ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস করান৷ রাজ্যের প্রাথমিক স্কুলের সহকারি শিক্ষক পদে যাঁদের টাকার বিনিময়ে পাশ করানো হয়েছে, তাঁদের খোঁজ শুরু করেছে পুলিশ৷  

জানা গিয়েছে, মেডিক্যাল অফিসার ড. কে এল প্যাটেলের স্কুল থেকেই প্রথম প্রশ্ন ফাঁস করা হয়৷ এতে উত্তরপ্রদেশের ক্যাবিনেট মন্ত্রী পদে থাকা বিজেপি নেতারও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে৷ এই নেটওয়ার্ক সারা রাজ্যজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে৷ প্রয়াগরাজ থেকে পেপার লিক করার পর একাধিক জেলায় তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়৷ পৌঁছে দেওয়া হয় উত্তর পত্রও৷ 

অন্যদিকে, মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট আপাতত ৩৭ হাজার ৩৩৯ পদে নিয়োগ  স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে। আগেই এই নিয়োগ রুখতে স্থগিতাদেশ জারি করেছিল হাইকোর্ট। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যায় সরকার। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *