কলকাতা: সেপ্টেম্বর মাসে ভারতীয় বায়ুসেনার ইতিহাসে এক অন্যতম রেকর্ড গড়েছেন এক মহিলা৷ দেশের প্রথম ফ্লাইট কমান্ডার হিসেবে নাম ঘোষণা করা হয় হরিয়ানার ভূমিকন্যা শালিজা ধামির৷ এরপর অরুণাচল প্রদেশের বীরঙ্গনা পোনিং নিযুক্ত হন ইন্ডিয়ান আর্মির লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে৷ অন্য রাজ্যের মেয়েদের থেকে কোন অংশে পিছিয়ে নেই পশ্চিমবঙ্গের মেয়েরাও৷ কিছুদিন আগেই দারিদ্রতাকে হার মানিয়ে ইউরোপের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এলব্রুস জয় করেছেন হাবরার লক্ষ্মী ঘোষ৷ এবার সেই সফল মহিলাদের তালিকায় যোগ হল বাংলার আরও এক নাম৷
এয়ার পোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার প্রথম মহিলা দমকলকর্মী তানিয়া সান্যাল কলকাতার মেয়ে৷ ২৭ বছরের তানিয়া গত বছর এয়ারপোর্টের প্রথম মহিলা দমকল কর্মী হিসাবে কাজে যোগ দিয়েছিলেন৷ তবে একজন মহিলার দমকলকর্মী হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করাটা সহজ ছিল না৷ কিন্তু, ইচ্ছে শক্তির ওপর জোর দিয়ে তানিয়া আজ সাফল্যের চূড়ায়৷
জানা গিয়েছে, ছকে বাঁধা রাস্তায় হাঁটতে তানিয়া কখনোই চাইতেন না তিনি৷ সব সময় চেয়ে ছিলেন চ্যালেঞ্জ নিতে৷ অচেনাকে জানতে৷ আর সেই কারণেই এবার এয়ারপর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া দেওয়া কর্মখালির বিজ্ঞাপনটি দেখে একমূহূর্ত দেরি করেনি তিনি৷ প্রথম অনলাইনে লিখিত পরীক্ষায় পাশ করেন তিনি৷ তারপর ভুবেনেশ্বর হয়ে শারীরিক সক্ষমতার পরীক্ষা৷ ডাক্তারি পরীক্ষা৷ ড্রাইভিং টেস্ট৷ এই পরীক্ষাগুলি ছিল সব থেকে কঠিন৷ মই দিয়ে উপরে ওঠা, ৪০ কিলো ওজনের বস্তা পিঠে চাপিয়ে দৌড়ানো৷ তারপর দিল্লির ফায়ার ট্রেনিং সেন্টারে কঠোর প্রশিক্ষণ৷ এখন তানিয়া কলকাতার ফায়ার ট্রেনিং সেন্টারের প্রশিক্ষক হিসেবে যোগ দেন তিনি৷
কদিন আগেই সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তানিয়া জানিয়েছেন, মানসিক তৎপরতা থাকা জরুরি৷ এয়ারপোর্টে ফায়ার সার্ভিস মানে শুধু আগুন নেভানো নয়৷ বিমান থেকে মানুষকে উদ্ধার করাও আমাদের কাজের অঙ্গ৷ ফলে সারাক্ষণ আমাদের সজাগ থাকতে হয়৷ রাখতে হয় নিজেদের ওপর ভরসা৷ বর্তমানে বেঙ্গালুরু এয়ারপোর্টের ৬১ জন শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন তানিয়া৷ পাশাপাশি জীবন কঠিন পরিস্থিতি থেকে মানুষকে উদ্ধার পাঠ দিচ্ছেন তিনি৷