কলকাতা: মামলার গেরোয় ফের থকমে উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়া৷ নিয়োগে অনিময়ের অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে আগেই বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে স্কুল সর্ভিস কমিশন৷ আগামী ১৫ জুলাইয়ের পর নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা কলকাতা হাইকোর্টের৷ এবার সেই আদালতের নির্দেশে মেনে ভেরিফিকেসন নয়া বিজ্ঞপ্তি জারি করল স্কুল সার্ভিস কমিশন৷
যোগ্য প্রাথিদের ভেরিফিকেসনের জন্য ডাকতে কমিশনকে আগেই নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট৷ সেই নির্দেশ মেনে মামলাকারীদের জন্য নতুন করে ভেরিফিকেসন দিনক্ষণ প্রকাশ করল স্কুল সার্ভিস কমিশন৷ আগামী ৩০ ও ৩১ জুলাই এই দুই দিনে মামলাকারীদের নতুন করে ভেরিফিকশন করা হবে বলে জানিয়েছে কমিশন৷
পয়লা জুলাই থেকে প্রার্থীদের ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া চালু হয়েছে৷ চলবে ১৫ জুলাই পর্যন্ত৷ কিন্তু, নিয়োগে অস্বচ্ছতার অভিযোগ ঘিরে দায়ের হওয়া মামলায় এই মুহূর্তে চূড়ান্ত অস্বস্তিতে কমিশন৷ আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য ও ফিরদৌস শামিমের সওয়াল-জবাবে রীতিমতো বিপাকে কমিশন৷ ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না করেই কমিশন যেভাবে এই প্রক্রিয়া চালাচ্ছে তা বেআইনি বলেও আদালতে উল্লেখ করা হয়৷ জবাবে কমিশনের তরফে বলা জানানো হয়, প্রতিটি শূন্যপদ পিছু ১.৪ জন প্রার্থীকে ইন্টারভিউতে ডাকা হয়েছে৷ কমিশনের অনলাইন ডেটাবেসকে ভিত্তি করেই প্রার্থীদের ডেকেছে৷ যাঁদের ডাকা হয়নি, তাঁদের যোগ্যতা সংক্রান্ত তথ্য আপাতত ভেরিফিকেশন করার প্রয়োজন নেই৷ কিন্তু, অসন্তুষ্ট আদালত জানিয়েছে. মামলাকারীদের যাবতীয় তথ্য ভেরিফিকেশন করে ইন্টারভিউ ক্রমতালিকা ১০ জুলাই-এর মধ্যে প্রকাশ করতে হবে৷ একই সঙ্গে ১৫ জুলাইয়ের পর ইন্টারভিউ পর্ব শেষ হওয়ার পর এই নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত রাখতে হবে৷
আরও পড়ুন: শূন্যপদ তৈরি হওয়ার আগেই শিক্ষক নিয়োগ SSC-র
মামলার গেরোয় নিয়োগ প্রক্রিয়া থমকে যাওয়ায় সফল চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যেও তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে৷ সফল চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের দাবি, ‘‘ইন্টারভিউ সম্পূর্ণ হওয়ার পরপরই নিয়োগ প্রক্রিয়া সচল ও স্বাভাবিক করার জন্য ডেপুটেশন দেওয়া জরুরি৷ কয়েকজন মামলা করে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াকে স্তব্ধ করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। ইন্টারভিউ ডাক পাওয়া সকলকেই এগিয়ে আসতে হবে৷ যারা নিয়োগ বিরোধী, তারা মন্তব্য করা থেকে নিজেকে বিরত রাখুন, অন্যান্যদের মতামত জানানোর সুযোগ করে দিন৷’’
আরও পড়ুন: শিক্ষক নিয়োগে আমূল পরিবর্তন আনছে রাজ্য, সিঁদুরে মেঘের আশঙ্কা
২০১৫ সালে ১৬ আগস্ট আপার প্রাইমারির শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা গ্রহণ করে স্কুল সার্ভিস কমিশন৷ এক বছর পর ২০১৬ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ফল প্রকাশ করে৷ আরও দু’বছর পর ২০১৮ সালে চাকরি-প্রার্থীদের ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশনের জন্য তালিকা প্রকাশ করা হয়৷ এরপর ২০১৯-এ ফেব্রুয়ারি লাগাতার আন্দোলন-লাঠিচার্জ-গ্রেপ্তারির পর কার্যত বাধ্য হয়ে ভেরিফিকেশনের নোটিস প্রকাশ করে কমিশন৷ ভোটের মধ্যে তৃতীয় দফার ফেরিফিকেশন করার কথা কমিশনের তরফে জানানো হলেও তা করা সম্ভব হয়নি৷ ভোট শেষ হতেই তা চালু করা হয়৷ আজ, এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে৷