কলকাতা: শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গে চরম কেলেঙ্কারির প্রমাণ পেয়েছে কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল অব ইন্ডিয়া বা ক্যাগ৷ ক্যাটের সম্প্রতিক রিপোর্টে রাজ্য সরকারের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া এখন প্রশ্নের মুখে৷ ক্যাগের তরফে তথ্য প্রমাণ পেশ করে স্কুল সার্ভিস কমিশনের সহকারি শিক্ষক, প্রধান শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মচারী নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে বলে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ রিপোর্টের উল্লেখ করা হয়েছে, একাধিক নিয়োগে পরীক্ষার্থীদের নম্বর কখন বাড়ানো, কখনও আবার কমানো হয়েছে৷ যোগ্য প্রার্থীদের নাম বাদ দিয়ে অযোগ্যদের ঢুকানো হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে৷ পরীক্ষা না দিয়ে নিয়োগ হয়েছে বলেও বিস্ফোরক অভিযোগ উঠেছে৷
ক্যাটের ২০১৮ সালের ৬ নম্বর রিপোর্টে বলা হয়েছে, একাদশ শ্রেণিতে সহকারি শিক্ষক নিয়োগে ৩৭৬ জন অকৃতকার্য হয়েছে৷ কিন্তু পরে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে৷ একাদশ শ্রেণিতে সরকারী শিক্ষক নিয়োগে ৪২৬৬ জন পরীক্ষা দিয়েছেন৷ কিন্তু, তাঁরা কোন ভাষায় পরীক্ষা দিয়েছে তা এখনও অজানা৷ দশম ও একাদশে শিক্ষক নিয়োগের ৬৮৯ জনের নাগরিকত্বের কোন উল্লেখ করা হয়নি৷ এদের মধ্যে ১০জনকে আবার নিয়োগপত্র দিয়ে দিয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন৷ একাদশে শিক্ষক নিয়োগে সিস্টেমে ১২৭২১ জনের শিক্ষাগত যোগ্যতার নম্বর শূন্য৷ কিন্তু প্যানেলে নম্বর ভিন্ন৷ একাদশে শিক্ষক নিয়োগে অনলাইনে ৩৩০৫ জনের নম্বর দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু, প্যানেলে সেই নাম্বর পরিবর্তিত হয়েছে৷ ক্যাগের রিপোর্ট দেখুন এই লিঙ্কে- https://cag.gov.in/sites/default/files/audit_report_files/Chapter_2_Performance_Audits_of_Report_No_6_of_2018_General_and_Social_Sector.pdf
রিপোর্টা বলা হয়েছে, শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির বিষয়ে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে রাজ্য সরকারকে তদন্ত করতে বলা হলেও তা হয়নি৷ এমনকি ২০১৮ সালের গোড়ায় ক্যাগ তার রিপোর্ট নবান্নে পাঠিয়ে দেওয়া হলেও তা গত অধিবেশনের শেষ দিনে পেশ করা হয়৷ রিপোর্টে বলা হয়েছে, এসএসসি দশম শ্রেণিতে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় শিক্ষাগত যোগ্যতার জন্য প্রাপ্ত নম্বর অনেক ক্ষেত্রেই কমিয়ে অথবা বাড়িয়ে দিয়েছে৷ উত্তরবঙ্গের ১০ লক্ষ ২ হাজার ৫৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১১ হাজার ২১ জনের নম্বরে গরমিল ধরা পড়েছে৷ ৬ হাজার ৫৬১ জনের নম্বর বাড়ানো হয়েছে৷ ৪ হাজার ৪৬০ জনের নম্বর কমানো হয়েছে৷ একাদশে শিক্ষক নিয়োগে এমন ২ হাজার ২৬৪ প্রার্থীর খোঁজ মিলেছে যাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতার নম্বর ১ থেকে ২৪ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে৷ একাদশে ৭ জন শিক্ষকের জাতী পরিবর্তন করে পর্যন্ত চূড়ান্ত প্যানেলে পরিবর্তন করা হয়েছে বলেও রিপোর্ট পেশ করেছে ক্যাগ৷