পুজোর আগেই মিলবে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুবিধা? কোন পথে ভবিষ্যৎ?

কলকাতা: আসছে পুজো৷ ধীরপে ধীরে শুরু হয়েছে প্রস্তুতি৷ উৎসবে মাততে প্রস্তুত আম বাঙালি৷ কিন্তু, পুজো মানেই গুচ্ছ খরচ৷ খাওয়া-দাওয়া থেকে নতুন পোশাক থেকে নাননা খরচে সামলাতে নাভিশ্বাসও ওঠে মধ্যবিত্তের৷ এই পরিস্থিতিতে উৎসের আগে চাতক পাখি মতো বেতন কমিশন কর্যকরের সুখবরের উপর তাকিয়ে বাংলার কয়েক লক্ষ সরকারি কর্মী৷ পুজোর আগে মিলবে বেতন কমিশনের সুবিধা? দীর্ঘ দিন

পুজোর আগেই মিলবে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুবিধা? কোন পথে ভবিষ্যৎ?

কলকাতা: আসছে পুজো৷ ধীরপে ধীরে শুরু হয়েছে প্রস্তুতি৷ উৎসবে মাততে প্রস্তুত আম বাঙালি৷ কিন্তু, পুজো মানেই গুচ্ছ খরচ৷ খাওয়া-দাওয়া থেকে নতুন পোশাক থেকে নাননা খরচে সামলাতে নাভিশ্বাসও ওঠে মধ্যবিত্তের৷ এই পরিস্থিতিতে উৎসের আগে চাতক পাখি মতো বেতন কমিশন কর্যকরের সুখবরের উপর তাকিয়ে বাংলার কয়েক লক্ষ সরকারি কর্মী৷ পুজোর আগে মিলবে বেতন কমিশনের সুবিধা?

দীর্ঘ দিন ধরে বেতন না বৃদ্ধি পাওয়ায় বেশ ক্ষুব্ধ রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশ৷ দেখা নেই ডিএর৷ বাড়ছে না বেতন৷ ফের বেড়েছে ষষ্ঠ বেতন কমিশন৷ দীর্ঘ দিনের বেতন বঞ্চনা নিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মী মহলে তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে অসন্তোষ৷ কিন্তু, এই অসন্তোষ মেটাতে ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করে পুজোর আগে সুখবর দেবে রাজ্য সরকার? তবে, পরিস্থিতি যা সেই সম্ভবনা ক্ষিণ বলেই মনে করেছেন কর্মচারীদের একাংশ৷ কেননা, আগস্টের মাঝামাঝি চলে এলেও বেতন কমিশনের চূড়ান্ত রিপোর্ট এখনও জমা পড়েনি নবান্নে৷ তবে, সরকারি কর্মীদের সুখবর শুনিয়ে খোদ কমিশনের তরফে জানানো হয়েছিল, খুব তাড়াতাড়ি কমিশন তার রিপোর্ট জমা করাবে৷ এই খবরে আশার আলো দেখলেও তা এখনও কার্যকর না হওয়ায় পুজোর আগে বেতন বৃদ্ধি নিয়ে ধোঁয়াশায় বাংলার সরকারি কর্মীদের একাংশ৷  সূত্রের খবর, পুজোর আগে বেতন কমিশন কার্যকর না হলেও নভেম্বর মাস থেকে বর্ধিত হারে বেতন কাঠামো কার্যকর হওয়ার পূর্বাভাস মিলেছে৷

ষষ্ঠ বেতন কমিশনের চেয়ারম্যান অভিরূপ সরকারের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি তার রিপোর্ট ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত করেছে বলে খবর৷ দুটি ভাগে এ রিপোর্ট পেশ করা হতে পারে আগেই প্রতিবেদন প্রকাশ করে জানিয়েছিল আজ বিকেল ডট কম৷ এবারও সেই একই ইঙ্গিত মিলেছে৷ বেতন কমিশনের রিপোর্ট জমা পড়ার পর তা মন্ত্রিসভায় পেশ করা হবে৷ মন্ত্রিসভা অনুমোদন দেওয়ার পর তা কার্যকর করার জন্য পৃথক কমিটি গঠন করতে পারে নবান্ন৷ এরপর অর্থদপ্তর থেকে রিভিশন অব পে অ্যান্ড অ্যালাউন্স রোপা, ২০১৯ প্রকাশ করা হবে৷ সেই মতো বর্ধিত হারে বেতন পাবেন কর্মীরা৷

কেন্দ্রীয় হারে কর্মীদের মূল বেতন বাড়ানোর সুপারিশ করতে পারে কমিশন৷ কেন্দ্রের সপ্তম বেতন কমিশন কর্মীদের মূল বেতন বেড়েছিল ১৪.৫৬ শতাংশ৷ খুব সম্ভবত এই হারেই বেতন বাড়তে পারে রাজ্য সরকারি কর্মীদের৷ বেতন কমিশনের সুপারিশ পুরোপুরি কার্যকর বছরে প্রায় সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা খরচ করতে হবে রাজ্যকে৷ উপকৃত হবেন রাজ্যের প্রায় ৩ লক্ষ কর্মচারী৷

২০১৫ সালের ২৭ নভেম্বর, অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকারের নেতৃত্বে ষষ্ঠ বেতন কমিশন গঠন করা হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত মোট পাঁচ বার কমিশনের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের পরে শেষবার সাত মাসের জন্য কমিশনের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে যার সময় শেষ হচ্ছে আগামী ২৬ ডিসেম্বর। এনিয়ে অভিরূপ সরকারের বক্তব্য, প্রথম তিন বার সময় বাড়ানোর আবেদন করেছিল কমিশন। কিন্তু শেষ দু’বার সরকারই কমিশনের মেয়াদ বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে।

বেতন কমিশন সূত্রে খবর, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ১৪.২৮ শতাংশ হারে রাজ্য সরকারি কর্মীদের বেতন বৃদ্ধির সুপারিশ করতে চলেছে বেতন কমিশন৷ বাম আমলে পঞ্চম বেতন কমিশনের একজন গ্রুপ-ডি সরকারি কর্মীর ৩৩ শতাংশ হারে বেতন বৃদ্ধি করা হয়৷ শেষ পর্যন্ত ষষ্ঠ বেতন কমিশন যদি ১৪.২৮ শতাংশ হারে বেতন বাড়ানোর সুপারিশ করে, তা কর্মচারীদের কাছে বঞ্চনার শামিল হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে৷

কমিশন সূত্রে ইঙ্গিত, কেন্দ্রীয় সরকারের সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশের মতোই রাজ্য ষষ্ঠ বেতন কমিশন নয়া বেতন কাঠামো গড়ে তোলার জন্য নবান্নে প্রস্তাব দিতে চলেছে৷ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের সপ্তম বেতন কমিশনের মাধ্যমে মূল বেতনের উপর ২.৫৭ শতাংশ হারে বেতন বৃদ্ধি ঘটছে৷ যদিও কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা সপ্তম বেতন কমিশনের কাছে মূল বেতনের উপর ৩.৭১ শতাংশ হারে বেতন বৃদ্ধির দাবি করেছিল৷ কেন্দ্রের সপ্তম বেতন কমিশন চালু হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত সাত কিস্তিতে ১২ শতাংশ মহার্ঘভাতা বকেয়া রয়েছে রাজ্য সরকারি কর্মীদের৷ বেতন কমিশন সূত্রে খবর, ২০১৬ সালের পয়লা জানুয়ারি থেকে নয়া বেতন কাঠামো কার্যকর করার জন্য রাজ্য সরকারকে সুপারিশ করবে রাজ্য বেতন কমিশন৷ ২০১৫ সালের নভেম্বর থেকে বেতন কমিশনের কাজ শুরু করেছে৷ মোট পাঁচ দফায় বাড়ানো হয়েছে বেতন কমিশনের মেয়াদ৷

কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের নেতন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর হওয়ার সময় থেকে সব রাজ্য সরকারি কর্মীদের বর্ধিত বেতন চালু হওয়ার প্রথা দীর্ঘদিন ধরেই চলছে৷ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের সপ্তম বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বেতন বৃদ্ধি হয়েছে ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে৷ ওই সময় কেন্দ্রীয় কর্মীরা ১২৫ শতাংশ হারে ডিএ পেতেন৷ রাজ্য কর্মীদের ডিএ ছিল ৭৫ শতাংশ৷ এর তিন বছর পর চলতি বছরে জানুয়ারি মাস থেকে রাদ্য কর্মীদের ডিএ ১২৫ শতাংশ হয়েছে৷

এর আগে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বেতন বৃদ্ধি হয়েছিল ২০১৬ সালে৷ রাজ্য সরকারি কর্মীদের পঞ্চম বেতন কমিশনের সুপারিশে বেতন বৃদ্ধি কার্যকর হয়েছিল ২০০৯ সালের এপ্রিল মাস থেকে৷ নিয়ম অনুযায়ী ৩৯ মাসের বকেয়া প্রাপ্য ছিল রাজ্য সরকারি কর্মীদের৷ কিন্তু, বামফ্রন্ট সরকার ১২ মাসের বকেয়া তিনটি কিস্তিতে দেয়৷ বাকি ২৭ মাসের বকেয়া দেওয়া হয়নি৷ যদিও ধরে নেওয়া হয়েছিল, রাজ্য কর্মীদের নতুন বেতন হার কেন্দ্রীয় কর্মীদের মতো ২০০৬ সাবে জানুয়ারি মাস থেকে চালু হয়েছিল৷ এটাকে প্রশাসনিক ভাষায় ‘নোশনাল’ বৃদ্ধি বলা হয়৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *