আজ বিকেল: লোকসভা ভোটের দামামায় কাঁপছে গোটা দেশ। প্রথম দফার ভোট শেষ হতে না হতেই শাসক বিরোধীদের রাজনৈতিক তরজা বর্তমান। দ্বিতীয়দফা ভোটের জন্য কেমন নিরাপত্তা বলয় তৈরি করতে চলেছে নির্বাচন কমিশন তা নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই। সব জায়গাতে আদৌ কি কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে তানিয়েও রয়েছে পরস্পর বিরোধী তত্ত্ব। এদিকে গরম পড়তেনা পড়তেই লাল মাটির বাংলার মাটি শুকিয়ে ফুটিফাটা নদি নালাতে একবিন্দু জল খুঁজতে গিয়ে রীতিমতো খোঁড়াখুঁড়ি করতে হচ্ছে। বিহার, ঝাড়খণ্ড, সমগ্র দক্ষিণভারত মায় গুজরাট মহারাষ্ট্র জলের জন্য হাহাকার করছে। ভোটের বিনিময়ে তৃষ্ণার জল চাইছে গোটা দেশ।
জলের অভাবে আতঙ্কিত চাষি, বৃষ্টির জন্য মুহূর্ত গুনছে, কীভাবে যে দিন কাটবে জানে না কেউ। ভোটের বাজারে এমনিতেই উত্তপ্ত গোটা দেশ। জনসমর্থন কার দিকে পাল্লা ভারি করে অপরের পাশা উল্টে দেবে কেউ জানে না। তবুও প্রেডিকশন জারি থাকে। কিন্তু বেকারদের কথা কেউ আদৌ ভাবছে কি? আর যারা মেধার জোরে চাকরির পরীক্ষায় নিয়োগের ছাড়পত্র আদায় করে নিয়েছে, তারাও কী খুব সুখে আছে। নাহ নেই তো। তাইতো রাজ্যের এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের শুধু ন্যয্য দাবি আদায়ে অনশনে বসতে হয়।
পাওয়া চাকরি যাতে অয়োগ্যের হাত না যায় তার জন্য অনশন। একটা একটা করে ১২টা দিন কাটে অনশনের জেরে দুর্বল হতে থাকেন চাকরি প্রার্থীরা। বহুদিন হল পড়াশোনা শেষ করেছেন, চাকরির চেষ্টা চলতে চলতেই অনেকের বিয়ে হয়েছে। আগামী প্রজন্মকে পৃথিবীতে এনে নতুন দিশা দেখানোর চেষ্টা করছেন কেউ কেউ। কেউ বা মা হওয়ার স্বপ্নকে সাকার করতে নিজের ভিতরেই গড়ে তুলছেন ছোট্ট প্রাণ। কিন্তু এই টানা অনশনে সরকারের টনক না নড়লেও জঠরের ভ্রুণের তো প্রাণান্তকর অবস্থায মায়ের পেটে যদি দানাপানি না যায় তবে সে খাবার পাবে কোথা থেকে। নিরন্তর অনশনে বিশ্রাম নেই, নেই শান্তি। চিন্তার অবয়ব প্রভাব ফেলে অন্তঃসত্ত্বা তরুণীর শরীরে। কণ্ঠনালী শুকিয়ে আসে, জিভের অবস্থাও তথৌবচ। চাকরির আদায়ে অনশন জারি রাখলেও জঠরের প্রাণ তখন ধুঁকছে, দম বন্ধ হয়ে আসছে তার। ভাবী মায়ের কপালে চিকচিকে ঘাম তখন গন্ডদেশ গড়িয়ে নামছে। বসে বসেই গর্ভস্থ ভ্রুণের মৃত্যু উপবব্ধি করলেন তিনি ও সতীর্থরা। সেই ঘটনা এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল৷ তরুণী মায়ের যন্ত্রণা তুলে ধরা হয়েছে ২ মিনিট ১০ সেকেন্ডের তথ্যচিত্রে৷
সরকার নিজের সিদ্ধান্তে অটল রইল। ২৯ দিনের অনশনে ৬৯জন নিয়োগ প্রার্থী অসুস্থ হলেন, অন্তঃসত্ত্বা তরুণী হারালেন মা হওয়ার সুযোগ। নীরব রইল সরকার। বাকিটার উত্তর কে দেবে, বহমান সময় নাকি আগামীর ভবিষ্যৎ?