নয়াদিল্লি: বয়স মাত্র ২২ বছর৷ আর তার মধ্যেই দেশের কনিষ্ঠতম আইপিএস অফিসার হিসেবে নিজের নাম তুলে ফেললেন চরম দারিদ্র্যে যুঝতে থাকা সাফিন হাসান৷
গত ২৩ ডিসেম্বর জীবনের প্রথম কাজে যোগ দিয়েছেন হাসান৷ জীবনের প্রথম চাকরি, তাও আবার আইপিএস অফিসার হিসাবে৷ রাজস্থানের জমনগর থানায় দেশের সবচেয়ে কম বয়সী হাসান অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিশ বা সংক্ষেপে যাকে বলা হয় এএসপি পদে তিনি যোগ দিয়েছেন৷
সাহানের বাবা ইলেকট্রিশিয়ান৷ মা হোটেলে রুটি তৈরি করে সংসার চালান৷ গুজরাটের পালনপুরে পুরের বাসিন্দা এই দম্পতি এক সময় সুরাটের হিরে ইউনিটে কাজ করতেন৷ পরে চাকরি চলে যায় দু’জনের৷ কর্মহীন অবস্থায় দু’বেলা খাওয়ার ব্যবস্থা করাই হয়ে উঠেছিল চ্যালেঞ্জের৷ কিন্তু পেটে ভাত না জুটলেও ছেলের পড়াশোনার জন্য একটুও কার্পণ্য করেননি ওই দম্পতি৷ দিনরাত পরিশ্রম করে ছেলের পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন৷ ছেলের লেখাপড়ার খরচ চালাতে বেশ খানিকটা দুশ্চিন্তায় পড়ে যান তাঁরা৷ সেই সময় এক প্রতিবেশী পরিবার স্বেচ্ছায় এসে পাশে দাঁড়ান হাসানের পাশে৷ হাসানের লেখাপড়ার খরচের দায়িত্ব দেন প্রতিবেশী হিন্দু পরিবার৷
প্রতিবেশীর সহযোগিতায় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে স্নাতক হওয়ার পর ইউপিএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করেন হাসান৷ এরপর দিন-রাত জেগে পরিশ্রম করতে থাকেন ২২ বছরের যুবক৷ ইউপিএসসি জাতীয় স্তরে তাঁর ফলাফল ছিল ৫৭০ নম্বর৷ প্রতিকূল পরিস্থিতিতে এই সাফল্যে হাসান উৎসর্গ করেছেন তাঁর বাবা মোস্তফা হাসান, মা নাসিম বানুকে৷
সেই সঙ্গে প্রতিবেশী হিন্দু দম্পতিকেও তিনি তাঁর সাফল্য উৎসর্গ করেছেন৷ কারণ হাসানের পড়াশুনো চালানোর প্রায় সমস্ত খরচ চালিয়েছিলেন ওই প্রতিবেশী৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবেশী দম্পতির ছবি পোস্ট করে হাসান লিখেছেন, রক্তের সম্পর্ক নেই৷ এরা আমার মা যশোদা, আর নন্দ বাবা৷